দিল্লি ক্যাপিটালস এই বছর আইপিএলের শুরুটা অত্যন্ত খারাপ করেছে। প্রথম পাঁচটি ম্যাচেই তারা বাজে ভাবে হেরেছে। তবে এর পর তারা দুরন্ত ছন্দে প্রত্যাবর্তন করে। শেষের পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটি জিতেছে এবং এখন ২০২৩ আইপিএলের প্লে-অফের দৌড়ে দিল্লি রয়েছে। ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দিল্লি এখনও লিগ টেবলের লাস্টবয়। তাদের যা পরিস্থিতি, তাতে একটা ম্যাচে হার মানেই প্লে-অফের স্বপ্নে ইতি। দিল্লিকে লড়াইয়ে থাকতে হলে সিএসকে ম্যাচকে ফাইনাল ধরেই নামতে হবে। হারা চলবে না।
বরং চেন্নাই সুপার কিংস অনেক বেশি সুরক্ষিত জায়গায় রয়েছে। আরও একটা জয় মানে প্লে-অফের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে যাওয়া। এক পা বাড়িয়ে রাখা। গত ম্য়াচে ঘরের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। লো-স্কোরিং ম্য়াচে অনবদ্য বোলিং পারফরম্যান্স সিএসকে-র এখন অক্সিজেন।
এ দিকে চিপকে ক্যাপিটালসের রেকর্ড মোটেও ভালো নয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিম সিএসকে-র ঘরের মাঠে মোট ৮টি ম্যাচ খেলেছে। তার মধ্যে জিতেছেে দু'বার। শেষ বার ২০১০ সালে তারা জিতেছিল। পাশাপাশি হেড-টু-হেড রেকর্ডটিও ডিসি-র জন্য একেবারেই সুখের নয়। মোট ২৭টি ম্যাচের মধ্যে ১৭টিতেই জিতেছে চেন্নাই। এই বছর অবশ্য চিপকে চেন্নাই এখনও পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ জিতেছে এবং দু'টিতে হেরেছে।
তবে দুই দলই শেষ দুই ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসী। শনিবার সন্ধেতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ছয় উইকেটে হারিয়েছে সিএসকে। আর ক্যাপিটালস একই রাতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ১৬.৪ ওভারে ১৮৮ রানের লক্ষ্য পৌঁছে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: কোহলি এবং আরসিবি-র খারাপ সময়ে ফের খোঁচা নবীনের- ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিরাট ভক্তরা
ক্যাপিটালসের দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের পিছনে একটি বড় কারণ হল তাদের স্পিনাররা।কুলদীপ যাদব এবং অক্ষর প্যাটেলদের পারফরম্যান্সই এখন বড় ভরসা দিল্লির। তাঁদের জন্য মূলত শেষ পাঁচটি ম্যাচের তিনটিতেই প্রতিপক্ষকে ১৫০ রানের মধ্যেই আটকে রাখতে পেরেছে। দিল্লির স্পিনাররা প্রতি ওভারে ৬.৯ গড়ে রান দিয়েছেন। যেটা পরিসংখ্যান টি-টোয়েন্টিতে বেশ ভালো। প্রতিযোগিতায় সমস্ত দলের মধ্যে সবচেয়ে মিতব্যয়ী হিসেবে এটি জায়গা পেয়েছে। আর দিল্লির স্পিনাররা কিন্তু চিপকের পিচেও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
এ দিকে বোলিংয়ের পাশাপাশি চেন্নাইয়ের ব্যাটিং লাইনআপও বেশ শক্তিশালী। ডেভন কনওয়ে (১৩৯.২০ স্ট্রাইক রেটে ৪৫৮ রান), রুতুরাজ গায়কোয়াড় (১৪৮.২৬ স্ট্রাইক রেটে ৩৮৪ রান), শিবম দুবে (২৯০ রান, ১৫৬.৭৫ স্ট্রাইক রেটে) এবং অজিঙ্কা রাহানেদের (১৮১.৪৮স্ট্রাইক রেটে ২৪৫ রান) চাপে ফেলাটাও সহজ হবে না। প্রত্যেকেই ভালো ছন্দে রয়েছেন। এবং পাওয়ার প্লে-তে ৯.৫ স্কোরিং রেটে যুগ্ম ভাবে সেরা রান স্কোরবোর্ডে যোগ করেছে সিএসকে। চেন্নাইয়ের টিম বর্তমানে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
বেন স্টোকস নেটে ব্যাটিং এবং বোলিং করছেন, তবে তিনি ফিট থাকলেও সিএসকে-এর পক্ষে তাঁকে দলে রাখা বেশ কঠিন। কারণ তাদের বিদেশী খেলোয়াড়- কনওয়ে, মইন আলি, মাথিশা পাথিরানা এবং মহেশ থিকশানা/মিচেল স্যান্টনাররা ভালো ছন্দে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: অভিমন্যুর চক্রব্যুহের ফাঁদ পেতেছিল RCB- সেই জাল কী ভাবে কাটলেন,খোলসা করলেন স্কাই
চেন্নাই শুরু থেকেই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে আম্বাতি রায়ডুকেই ব্যবহার করছেন। রান তারা তাড়া করার ক্ষেত্রে রায়ডু কোনও একজন বোলারের বদলে দলে ঢোকেন। আর প্রথমে ব্যাট করলে রায়ডু সম্ভবত শুরু করবেন, দ্বিতীয় ইনিংসে তুষার দেশপান্ডে বা থিকশানা ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে দলে ঢুকবেন।
এ দিকে ক্যাপিটালসের এনরিখ নরকিয়া ব্যক্তিগত কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে গিয়েছেন। এবং ক্যাপিটালসের শেষ খেলাটি মিস করেন। বুধবারও সিএসকে-র বিরুদ্ধে ম্যাচ তাঁকে পাওয়া যাবে না। তিনি কবে ফিরবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ক্যাপিটালসের সহকারী কোচ শেন ওয়াটসন আশা করছেন, টুর্নামেন্টের শেষের দিকে নরকিয়া দলের সঙ্গে ফের যোগ দেবেন।
দিল্লি যদি প্রথমে ব্যাট করে, সে ক্ষেত্রে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে থাকবেন রিপল প্যাটেল বা সরফরাজ খান। ইশান্ত শর্মা দ্বিতীয় ইনিংসে দলে ঢুকবেন। আর পরে ব্যাট করলে উল্টোটা হবে। দিল্লির চিপকের পিচ দেখার পরে অফস্পিনার ললিত যাদবকে দলে নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার সহ সিএসকে-র সম্ভাব্য দ্বাদশ: ডেভন কনওয়ে, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, অজিঙ্কা রাহানে, অম্বাতি রায়ডু, শিবম দুবে, মইন আলি, রবীন্দ্র জাদেজা, এমএস ধোনি (অধিনায়ক, উইকেটকিপার), দীপক চাহার, মহেশ থিকশানা, মাথিশা মাথিরানা, তুষার দেশপান্ডে।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার সহ দিল্লির সম্ভাব্য দ্বাদশ: ফিল সল্ট (উইকেটরক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার (অধিনায়ক), মিচেল মার্শ, রিলি রসৌ, আমান হাকিম খান, মনীশ পাণ্ডে, অক্ষর প্যাটেল, রিপল প্যাটেল/সরফরাজ খান, খলিল আহমেদ/ললিত যাদব, কুলদীপ যাদব, মুকেশ কুমার, ইশান্ত শর্মা।