মূলত শুভমন গিলের কাছে হেরে ছিটকে যেতে হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে। তাঁর ১২৯ রানের ইনিংসই রোহিত শর্মাদের কাছে বোঝা হয়ে যায়। যে প্লেয়ার ৩০ রানে সাজঘরে ফিরে যেত, জীবনদান পেয়ে তিনিই তাণ্ডব চালান। যার নিটফল, গুজরাট টাইটান্সের কাছে হেরে কোয়ালিফায়ার টু থেকে ছিটকে গেল মুম্বই।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হিসেবে রোহিত শর্মা নিঃসন্দেহে হতাশ। কিন্তু ভারত অধিনায়ক হিসেবে তিনি চান, শুভমনের এই ছন্দ বজায় থাকুক। কারণ, সামনেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। তার কয়েক মাস পরে দেশের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপ। আইপিএলের পরে দেশের জার্সিতেও শুভমনের ব্যাট থেকে এ ভাবেই বড় রান চাইছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত।
ম্যাচ শেষে রোহিত বলেন, ‘শুভমন দুর্দান্ত খেলেছে। ও খুব ভালো ছন্দে আছে। আশা করছি ওর ছন্দ বজায় থাকবে (হাসি)। গুজরাটের এই জয়ের জন্য শুভমনকে শুভেচ্ছা।’
গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে সূর্যকুমার যাদব, তিলক বর্মা, ক্যামেরন গ্রিনরা রান পেলেও, কেউ শুভমনের মতো দায়িত্ব নিয়ে বড় রান করে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যেতে পারেননি। খেই হারিয়ে ফেলেছে মুম্বই। ম্যাচের শেষে তাই রোহিতও সোজাসাপ্টা ভাষায় বলে দেন, ‘শুভমন শেষ পর্যন্ত ব্যাট করেছে। আমাদের দলে শুভমনের মতো এক জন ক্রিকেটার ছিল না। সেই কারণে শেষ পর্যন্ত পারলাম না। না হলে এই উইকেটে রান করা কঠিন ছিল না।’
আরও পড়ুন: শুভমনের শতরানের পর শুভেচ্ছা রোহিতের, হার্দিকের উচ্ছ্বাস, GT-র স্ট্যান্ডিং ওভেশন
তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘ওরা অতিরিক্ত ২৫ রান করেছিল। তবে আমরা যখন ব্যাটিং করতে নামলাম, তখন আমরা বেশ ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই নেমেছিলাম। তবে বড় পার্টনারশিপ হয়নি। গ্রিন এবং সূর্য ভালো ব্যাটিং করলেও আমরা পথ হারিয়ে ফেলি। পাওয়ারপ্লেতে আমরা কয়েকটি উইকেট হারিয়ে বসে থাকি এবং রান তাড়া করার সময়ে সেই গতিটাই পাইনি।’
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে শুভমন গিলের ঝড়ে গুজরাট টাইটান্স এ দিন রানের পাহাড় গড়ে। শুভমনের ঝোড়ো ইনিংসের হাত ধরেই ৩ উইকেটে ২৩৩ রানের বড় স্কোর করল গুজরাট টাইটান্স। এ দিনে শুভমনে গিল ৩০ রানে ক্যাচ দিয়েছিলেন। সেটা মিস করার খেসারত হাতেনাতে দিতে হয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে।
আরও পড়ুন: জর্ডনের কনুইয়ের গুঁতোয় মাঠ ছাড়লেন কিপার ইশান, বাঁ-চোখে চোটের জেরে করলেন না ওপেনও- ভিডিয়ো
শুভমন শেষ পর্যন্ত ৬০ বলে ১২৯ করে আউট হন। তখন খেলার রাশ গুজরাটের হাতে। আকাশ মাধওয়ালের বলে টিম ডেভিডকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন শুভমন। তাঁর ইনিংসে রয়েছে মোট সাতটি চার এবং ১০টি ছক্কা। এ ছাড়া ৩১ বলে ৪৩ রান করে রিটায়ার্ড আউট হন। ১৩ বলে অপরাজিত ২৮ করেন হার্দিক।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল মুম্বই। ইশান কিষাণ ব্যাটিং করেননি। টাইটান্সের ইনিংসের ১৭তম ওভারের আগে জর্ডনের কনুইয়ে লেগে চোখে চোট পান ইশান কিষাণ। চোটের জেরে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। ব্যাট করতেও নামেননি তিনি। যার ফলে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করেন নেহাল ওয়াধেরা। কিন্তু রান পাননি। মাত্র ৪ রানে ফেরেন। এদিন কোনও কিছুই মুম্বইয়ের পক্ষে যায়নি। দ্বিতীয় ওভারে হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ক্যামেরন গ্রিন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নামেন সূর্যকুমার। দলের এই শোচনীয় অবস্থায় অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলা উচিত ছিল রোহিতের। কিন্তু মাত্র ৮ রান করে আউট হন। তিলক বর্মার ইনিংস দলকে কিছুটা লড়াইয়ে ফেরায়। কিন্তু পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে রশিদকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন। ৩টি ছয়, ৫টি চারের সাহায্যে ১৪ বলে ৪৩ রান করেন তিলক।
পরে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ উইকেটে সূর্যকুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৫২ রান যোগ করেন গ্রিন। কিন্তু বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। ২০ বলে ৩০ রান করে আউট হন অজি। এখানেই প্রায় শেষ। তবুও একাই লড়ছিলেন সূর্যকুমার। স্কাই শেষ ভরসা ছিল। কিন্তু ৩৮ বলে ৬১ রান করে বোল্ড হতেই ফাইনালের স্বপ্নে জলাঞ্জলি। বিষ্ণু বিনোদ (৫), টিম ডেভিড (২) রান পাননি। ২.২ ওভার বল করে ১০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন মোহিত শর্মা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।