টি-২০ ক্রিকেটে ২৩৩ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা সহজ নয়। তবে আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে মাঠে নামলে কোনও টোটালই যে নিরাপদ নয়, সেটা ভালো মতোই বোঝেন হার্দিক পান্ডিয়ারা। আইপিএল ২০২৩-তেই চারটি ম্যাচে ২০০ বা তারও বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছে মুম্বই। তাই আমদাবাদের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বিরাট ইনিংস গড়েও নিশ্চিন্ত ছিল না গুজরাট টাইটানস।
শুরুতে পরপর উইকেট হারিয়ে মুম্বই চাপে পড়লেও তিলক বর্মা ও ক্যামেরন গ্রিনকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যকুমার যাদব সেই চাপ কাটিয়ে দেন। ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করে সূর্যকুমার যখন গুজরাট শিবিরের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছেন, হার্দিক আক্রমণে নিয়ে আসেন পোড়খাওয়া মোহিত শর্মাকে।
দ্বিতীয় ইনিংসের ১৫তম ওভারে প্রথমবার বল করতে আসেন মোহিত। দ্বিতীয় বলেই তাঁকে ছক্কা হাঁকান সূর্যকুমার। তবে ঘুরে দাঁড়াতে বিশেষ সময় নষ্ট করেননি মোহিত। ঠিক পরের বলেই (১৪.৩ ওভারে) সূর্যকুমার যাদবকে বোল্ড করে মুম্বই শিবিরে মোক্ষম আঘাত হানেন তিনি। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেননি রোহিতরা। মুম্বই ১৭১ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ৬২ রানে ম্যাচ জিতে আইপিএল ২০২৩-এর ফাইনালে ওঠে গুজরাট টাইটানস।
মোহিত শর্মা ২.২ ওভার বল করে মাত্র ১০ রানের বিনিময়ে ৫টি উইকেট দখল করেন। যে পিচে ব্যাটসম্যানদের হাতে বোলারদের যারপরনাই লাঞ্ছিত হতে হয়, মোহিত সেই পিচেই মাত্র ১৪টি বল করে পাঁচ উইকেটের বৃত্ত পূর্ণ করেন। ম্যাচের শেষে গুজরাট টাইটানসের অভিজ্ঞ পেসার স্বীকার করে নেন যে, তিনি ভাগ্যবান এত তাড়াতাড়ি ৫টি উইকেট নিতে পেরেছেন। সঙ্গে মোহিত এটাও জানাতে ভোলেননি যে, সূর্যকুমার আর তিলক বর্মা যে রকম ব্যাট করছিলেন, তাতে দুই মুম্বই তারকা টিকে থাকলে ম্যাচ গুজরাটের হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারত।
মোহিত বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান যে, এই পিচে এত তাড়াতাড়ি ৫ উইকেট নিতে পেরেছি। বল দারুণ স্কিড করছিল। যেভাবে সূর্যকুমার ও তিলক বর্মা ব্যাট করছিল, মনে হয়েছিল যে ওরা আউট না হলে ম্যাচ বেরিয়ে যেতে পারে। আমি ঠিক করেছিলাম, সূর্যকুমারের বিরুদ্ধে বল করতে হলে অকারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় হাঁটব না। কেননা প্রতিটা বলের জন্যই ওর ৩-৪টে শট ভাবা থাকে। টিম মিটিংয়েও আলোচনা হয়েছিল যে, সূর্যকুমারের বিরুদ্ধে বাড়তি চেষ্টা করতে গেলে তাতে ওর সুবিধাই হয়। আমরা ঠিক করেছিলাম, লেনথ বলে যদি ছটা ছক্কা হজম করতে হয়, তাতেও কিছু যায় আসে না। কেননা একমাত্র লেনথ বলেই শট খেলা সব থেকে কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ওর পক্ষে।’
অভিজ্ঞ পেসার স্পষ্ট জানান, সূর্যকুমারকে ফেরানোর পরে বুঝতে পারেন তাঁরা ম্যাচে ফিরেছেন। যদিও শেষ উইকেটের আগে পর্যন্ত জয় নিয়ে নিশ্চিন্ত হননি। কেননা এমন পরিস্থিতি থেকে গুজরাট আগেও ম্যাচ হেরেছে। মোহিতের কথায়, ‘সূর্যকুমার আউট হওয়ার পরে মনে হয় যে, আমরা ম্যাচে ফিরেছি। ওর উইকেটটা অত্যন্ত স্বস্তির ছিল। শেষ উইকেট পড়ার পরেই আমরা ফাইনাল খেলা নিয়ে নিশ্চিত হই। তার আগে পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হওয়ার উপায় ছিল না। কেননা গুজরাট এমন পরিস্থিতি থেকে যেমন ম্যাচ জিতেছে, হেরেওছে একই পরিস্থিতি থেকে।’
মোহিত শর্মার কথায় স্পষ্ট যে, গুজরাট টাইটানস সম্ভবত রিঙ্কুর পাঁচ ছক্কায় ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা থেকে বড়সড় শিক্ষা নিয়েছে।