বর্তমান সময়ে বিশেষত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্পিনারদের দিয়ে ইনিংসের শুরুতেই বল করানো জলভাত। তবে সাধারণত এক বা দুই ওভার স্পিনারকে দিয়ে করিয়েই বেশিরভাগ দল পেসারদের হাতে বল তুলে দেয়। মুম্বইয়ের বিপক্ষে কিন্তু এমনটা করেননি কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান। এর পিছনে রহস্যটা ঠিক কী?
কেকেআর দলে নিঃসন্দেহে আইপিএলের দুই সেরা ‘মিস্ট্রি স্পিনার’ রয়েছে। বিপক্ষকে চাপে ফেলতে যে কোন দলই তাঁদের বিপক্ষের সেরা ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে বল করাতে চাইবে। তবে পরিসংখ্যান বলছে কেকেআরের ৪৯ শতাংশ পাওয়ার প্লের ওভার স্পিনাররা করেন। সুতরাং, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধেই নয়, একই পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রায় সবার বিরুদ্ধেই মাঠে নামেন মর্গ্যান। এর পিছনে রয়েছে কেকেআরের অ্যানালিস্টের মাথা। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রীড়াজগতে আরও উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আইপিএল ফ্রাঞ্চাইজি থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে অধিনায়করা অনেক সিদ্ধান্তই নেন।
মর্গ্যানও চোখ, কান বুজে দলের অ্যানালিস্টের ওপর ভরসা করেন। রোহিত শর্মা এবং কুইন্টন ডি'কক যে স্পিনের থেকে শুরুতে পেস বল খেলতে বেশি স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তা সর্বজনবিদিত। তবে কার বিরুদ্ধে কোন বোলার বল করবে, যাকে ইংরেজি ভাষায় বলে ‘ম্যাচআপ’, তা কিন্তু পরিসংখ্যানের মাধ্যমে অ্যানালিস্টই সকলের সামনে আনেন। উদাহরণস্বরূপ, গতকালের আগে নারিন রোহিত শর্মাকে ২২ ইনিংসে আট বার আউট করেছিলেন এবং রোহিতের স্ট্রাইক রেট ছিল মাত্র ১০৫-র আশেপাশে। সেই কারণেই রোহিত ব্যাটিং করায় তৃতীয় ওভারেই নারিন বলে আসে। তখন রোহিতের উইকেট না ম্যাচের ১০ নম্বর ওভারে রোহিতকে নবমবার আউট করেন নারিনই।
অপরদিকে, ডি'কককে এবারের আইপিএলে প্রথম ম্যাচে আউট করেন বরুণ চক্রবর্তী। তাই বরুণকে বল দেওয়াটাও যুক্তিযুক্তই ছিল। পাওয়ার-প্লেতে মুম্বই মোট ৫৬ রান করলেও স্পিনাররা প্রথম চার ওভারে মাত্র ২৯ রানই দেন, যা মর্গ্যানের দলের অ্যানালিস্টের ওপর ভরসা দেখানোর সিদ্ধান্তকে সঠিক হিসাবেই প্রমাণ করে। ক্রিকেটে প্রথাগতভাবে মাঠে পরিস্থিতি বুঝে অধিনায়কই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলেও মর্গ্যানের অধিনায়কত্ব বর্তমান যুগের ক্রিকেটে প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রভাবেরই ধারক।