গত বছর আইপিএলে অভিষেক হয় গুজরাট টাইটানসের। প্রথম মরশুমেই চ্যাম্পিয়ন হয় হার্দিক পান্ডিয়ার দল। প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েই ভারতীয় ক্রিকেটে শোরগোল ফেলে দেয় গুজরাট। সেই সঙ্গে অধিনায়ক পান্ডিয়ার জন্ম নেয়। এই মরশুমেও দুর্দান্ত ফর্মে দেখা যায় গুজরাটকে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ১৪টির মধ্যে ১০ ম্যাচ জিতে রেকর্ড গড়ে প্লে-অফে জায়গা করে নেয় হার্দিক পান্ডিয়ার দল। কিন্তু প্লে-অফের প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে চেন্নাই সুপারকিংসের বিরুদ্ধে হারের মুখ দেখে তারা। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার ফাইনালে জায়গা করে নেয় হার্দিকের দল। কিন্তু চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি তারা। ফাইনালে হেরে খেতাব হাতছাড়া করতে হয় গুজরাটকে। দুর্দান্ত খেলার পরও কেমন এমনটা হল একেবারে শেষে এসে, তা একবার দেখে নেওয়া যাক।
গুজরাট টাইটানসের সেরা ব্যাটার:-
শুভমন গিল- এবারের আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন গিল। ১৭ ম্যাচে ৮৯০ রান সংগ্রহ করেন তিনি। স্ট্রাইকরেট ১৫৭.৮০।
সাই সুদর্শন- এবারের আইপিএল ফাইনালে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন সাই সুদর্শন। এই মরশুমে তাঁর সংগ্রহ ৮ ম্যাচে ৩৬২ রান।
ঋদ্ধিমান সাহা- গত মরশুম থেকেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে চলেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। ১৭ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৩৭১ রান। স্ট্রাইকরেট ১২৯.২৬।
হার্দিক পান্ডিয়া- অধিনায়ক হিসাবে গত বছর প্রকাশ্যে নিজের পরিচয় দেন পান্ডিয়া। এবারও অধিনায়কের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ভালো পারফরম্যান্স করেন তিনি। ১৬ ম্যাচে তাঁর রান ৩৪৬। স্ট্রাইক রেট ১৩৬.৭৫।
গুজরাট টাইটানসের সেরা বোলার:-
মহম্মদ শামি- এবারের আইপিএলে সেরা ফর্মে দেখা যায় মহম্মদ শামিকে। ১৭ ম্যাচে ২৮টি উইকেট নিয়েছেন এই পেসার।
রশিদ খান- এই আফগান স্পিনার ১৭ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিয়েছেন।
মোহিত শর্মা- এই পেসার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন আইপিএলে। ১৪ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিয়েছেন মোহিত শর্মা।
নুর আহমেদ- ১৩ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়েছেন নুর।
লিগ টেবিলের অবস্থান:-
গত মরশুমে চ্যাম্পিয়ন হয় গুজরাট টাইটানস। এই মরশুমেও যা পারফরম্যান্স বজায় রেখেছিল তারা তাতে মনে করা হয়েছিল ফের চ্যাম্পিয়ন হবে গুজরাট। কিন্তু ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে হেরে এবারের মতো রানার্স হয়ে আইপিএল শেষ করতে হয় হার্দিক পান্ডিয়ার দলকে।
ইতিবাচক দিক:-
১. এবারের আইপিএলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকেন শুভমন গিল। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে তিনটি শতরান করেন রেকর্ড গড়েন তরুণ এই ব্যাটার। শুধু তাই নয়, কমলা টুপির মালিকও তিনি। যা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে ভারতীয় দলকে স্বস্তি দিয়েছে বলা যায়।
২. এবারের আইপিএলের ফাইনালে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন সাই সুদর্শন। যদিও জিততে পারেনি গুজরাট। ৪৭ বলে ৯৬ রান করেন সুদর্শন। তবে মাঝে মধ্যেই দলকে বিপাকে ফেলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
৩. এই মরশুমে দুর্দান্ত ফর্মে দেখা গিয়েছে হার্দিক পান্ডিয়াকেও। ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হয় তিনি। যা দলকে অনেকটাই সাহায্য় করে।
৪. মহম্মদ শামি এবারের মরশুমে নিজের সেরাটা দিয়েছেন। বেগুনি টুপির মালিক তিনি। গুজরাটের পেস অ্যাটাককে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
৫. শামির পাশাপাশি রশিদ খানও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। বিপক্ষের ব্যাটারদের রাতের ঘুম কেড়ে কেন এই আফগান স্পিনার। যা এই দলকে অনেকটাই সাহায্য় করে।
৬. ভারতীয় ক্রিকেটে আরও এক পেসার মোহিত শর্মা। দীর্ঘদিন ধরে আইপিএল খেলছেন অভিজ্ঞতাও অনেক। যা কাজে এসেছে গুজরাট টাইটানসের। বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি।
ব্যর্থতার কারণ:-
এবারের আইপিএলে ছন্দেই ছিল গুজরাট টাইটানস। গ্রুপ পর্বে ১৪ ম্যাচের মধ্যে ১০ ম্যাচ জিতে সবার প্রথমে প্লে-অফে জায়গা করে নেয় হার্দিক পান্ডিয়ার দল। অনেকেই গুজরাটকে ফেভারিট হিসাবে ধরেও রাখে। কিন্তু প্লে-অফে উঠতেই তাল কাটে গুজরাটের। প্রথম কোয়ালিয়ার ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে হার। অবশ্য সেই ম্যাচে ভিলেন হয়ে দাঁড়ায় চিপকের স্লো পিচ। পরে ব্যাট করতে নেমে বেশ সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় হার্দিকদের।
তবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে নিজেদের ঘরের মাটিতে হারের জয়ের মুখ দেখে তারা। কিন্তু ফাইনালে বৃষ্টি যা ভিলেন হয়ে দাঁড়ায় গুজরাটের জন্য। ওভার কমে আসায় টার্গেটও কমে যায়। যা অনেকটাই সহজ হয়ে যায় চেন্নাইয়ের জন্য। কিন্তু গুজরাটের বোলাররা চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হন তারা।