এই বছর আইপিএলে শুরু থেকেই বেশ নড়বড় করছে দিল্লি ক্যাপিটালস। প্রথম পাঁচ ম্যাচেই তারা হেরে বসে ছিল। পরের চার ম্যাচের মধ্যে অবশ্য তিনটিতে জয় পেয়েছে। কিন্তু লিগ টেবলের লাস্টবয়ের তকমা গা থেকে ছেড়ে ফেলতে পারেনি দিল্লি। এ দিকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর প্লে-অফের দৌড়ে রয়েছে। তারা ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের পাঁচে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এই ম্যাচের দ্বৈরথ পাঁচ বনাম দশের।
ডিসি-আরসিবি ম্যাচ ঘিরে পারদটা একটু বেশি থাকার বড় কারণ দিল্লির ক্রিকেট ডিরেক্টর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ব্যাঙ্গালোরের তারকা বিরাট কোহলির দ্বন্ধ। দুই দলের প্রথম লেগের ম্যাচে চিন্নাস্বামীতে কোহলি-সৌরভের মধ্যে ঝামেলা প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। যা নিয়ে বহু জলঘোলা হয়েছে। দিল্লিতেও এই বিষয়টিতে সকলেরই নজর থাকবে।
তবে দিল্লি নিঃসন্দেহে এই ম্যাচের আগে চাপে থাকবে। কারণ তারা যাদি আরসিবি-র কাছে হেরে যায়, তবে প্লে-অফের আশা একেবারেই শেষ হয়ে যাবে। তার উপর দিল্লি ক্য়াপিটালসের মূল সমস্যা টপ অর্ডারে। পাওয়ার প্লে-তে সবচেয়ে মন্থর শুরু করছে তারা। পাওয়ার প্লে-তে দিল্লির রানরেট মাত্র ৭.৬৮। ওপেনিং জুটিতে ব্যাটিং গড় ২৬-এরও কম। অন্য দিকে, আরসিবির পাওয়ার প্লে বোলিং নজরকাড়া! পাওয়ার প্লে-তে আরসিবির ইকোনমিরেট মাত্র ৭.২৯। এখনওপর্যন্ত পাওয়ার প্লে-তেই ২২টি উইকেট নিয়েছে আরসিবি।
আরও পড়ুন: RR-কে হারিয়ে লিগ টেবলে শীর্ষ স্থান মজবুত করল GT, সঞ্জুরা থাকল চারেই, বাকিদের হাল কী?
দিল্লি টপ অর্ডারে সবচেয়ে বেশি রান ডেভিড ওয়ার্নারের। তিনি এই মরশুমে ৩০০-র উপর রান করেছেন ঠিকই। তবে গড় ৩৪.২২। স্ট্রাইকরেট ১১৮.৪৬। তবে ওয়ার্নারই কিছুটা দিল্লির টপ অর্ডারকে ভরসা জোগাচ্ছেন। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে তিনি আক্রমণাত্মক হতে পারছে না। তবে বল হাতে ইশান্ত শর্মা অভিজ্ঞতা কাজে লাগছে। ইশান্তকে দলে রাখার পর থেকে বোলিংয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
এ দিকে দিল্লির পুরো বিপরীত মেরু হল আরসিবি। ব্যাঙ্গালোরের মূল শক্তিই হল টপ অর্ডার ব্যাটিং। বিরাট কোহলি এবং ফ্যাফ ডু'প্লেসির ওপেনিং জুটি এ বার আইপিএলে সেরা জুটি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও রয়েছে ভালো ছন্দে। পাওয়ার প্লে-তে আরসিবি-র রানরেট ৯.২৯। বিরাট কোহলি এবং ফ্যাফ ডু'প্লেসি ওপেনিং জুটির ব্যাটিং গড় ৫৩.৬২। ম্যাক্সওয়েলও ভরসা দিচ্ছেন।
আরসিবি-র মূল সমস্যা মিডল অর্ডার। মিডল ও লোয়ার অর্ডারের ব্যর্থতার কারণেই মূলত চার ম্যাচে হারতে হয়েছে আরসিবি-কে। আর সেই সমস্যা মেটাতেই ডেভিড উইলির পরিবর্তে কেদার যাদবকে সই করিয়েছে ব্যাঙ্গালোর। তবে কোহলি, ফ্যাফ এবং ম্যাক্সি নিজেদের ছন্দে থাকলে প্রতিপক্ষ বোলারদের ঘুম উড়তে বাধ্য। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সাল থেকে দিল্লির কাছে হারেনি আরসিবি। এ বারও কি পারবে ইতিহাস বদলাতে?
আরও পড়ুন: উইকেটকিপিংয়ে আলাদা মান যোগ করে, ও-ই সেরা- হার্দিক গদগদ হলেও জাতীয় দলে ব্রাত্য ঋদ্ধি
বাংলাদেশের বাঁ-হাতি সিমার মুস্তাফিজুর রহমান দেশের হয়ে খেলা থাকার জন্য ফিরে গিয়েছেন। তবে ২০২৩ আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে মাত্র দু'টি ম্যাচ খেলেছেন মুস্তাফিজুর। যে কারণে দিল্লিকে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হবে না। এ দিকে অসুস্থতার কারণে মিচেল মার্শ আগের ম্যাচটি খেলতে পারেননি। তবে তিনি ফিট থাকলে এ দিন ক্যাপিটালসের দলে ঢুকে পড়বেন। এ দিকে আরসিবি-র আহত ডেভিড উইলির বদলি হিসেবে কেদার যাদবকে দিল্লির বিরুদ্ধে খেলানো হতে পারে।
দিল্লি সম্ভবত ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে ফিল সল্টের সঙ্গে খলিল আহমেদকে অদলবদল করতে পারে। আর আরসিবি ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে হয়তো হার্ষাল প্যাটেল এবং বিজয়কুমার ভিশকের মধ্যে রদবদল করতে পারে।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার সহ আরসিবি-র সম্ভাব্য দ্বাদশ: বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডু'প্লেসি (অধিনায়ক), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, সুয়াশ প্রভুদেসাই, অনুজ রাওয়াত//কেদার যাদব, দীনেশ কার্তিক (উইকেটরক্ষক), মহিপাল লোমরো, ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা, মহম্মদ সিরাজ, জো0শ হ্যাজেলউড, হার্ষাল প্যাটেল/বিজয়কুমার ভিশাক।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার সহ দিল্লির সম্ভাব্য দ্বাদশ: ফিল সল্ট (উইকেটরক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার (অধিনায়ক), মিচেল মার্শ/রিলি রসৌ, প্রিয়ম গার্গ/যশ ধুল, মণীশ পাণ্ডে, অক্ষর প্যাটেল, আমান খান, রিপাল প্যাটেল, এনরিখ নরকিয়া, কুলদীপ যাদব , ইশান্ত শর্মা, খালিল আহমেদ।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।