লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে আইপিএল ২০২২-এর ম্যাচে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের রিটায়ার্ড আউটের পরেই এই নিয়ে জোর আলোচনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটমহলে। আইসিসির এই নিয়মকে পরিকল্পনামাফিক ম্যাচে ব্যবহার করার মধ্যে অন্যায় দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।
আসলে প্রথমসারির ক্রিকেটে রিটায়ার্ড আউট সচরাচর দেখা যায় না বলেই অনেকের যথাযথ ধারণাই ছিল না এই নিয়ম নিয়ে। সেকারণেই ম্যাচের মাঝে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বোলার আবেশ খানকেও হতবাক দেখায়। আসলে রিটায়ার্ড হার্ট ও রিটায়ার্ড আউট নিয়ে ছবিটা স্পষ্ট নয় অনেকের কাছেই।
এইপিএলে এই প্রথমবার চোখে পড়ে রিটায়ার্ড আউটের ঘটনা। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে দ্বিতীয়বার দেখা যায় এমন ছবি। তবে অনেকেরই হয়ত মনে নেই যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে ৩ বার দেখা গিয়েছে রিটায়ার্ড আউটের ছবি। একবার টেস্ট ক্রিকেটে একই ম্যাচে রিটায়ার্ড আউট হয়েছিলেন দুই তারকা ব্যাটসম্যান। অন্যবার সাউথ এশিয়ান গেমসে ব্যাটসম্যান স্বেচ্ছায় ব্যাটিং থেকে সরিয়ে নেন নিজেকে।
রিটায়ার্ড আউটের নিয়ম: এমসিসি তথা আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কোনও ব্যাটসম্যান ম্যাচের মাঝে ডেড-বল পরিস্থিতিতে আম্পায়ারকে জানিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেন। অর্থাৎ, স্বেচ্ছায় নিজেকে আউট ঘোষণা করার অধিকার রয়েছে ব্যাটসম্যানের।
রিটায়ার্ড হার্ট ও রিটায়ার্ড আউটের পার্থক্য: কোনও ব্যাটসম্যান চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলে সেক্ষেত্রে তাঁকে রিটায়ার্ড হার্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যাটসম্যান সেক্ষেত্রে নট-আউট থাকেন। তিনি পরে পুনরায় ব্যাট করতে নামতে পারেন। যদি নতুন করে ব্যাট করতে নাও নামেন, তবে তাঁকে নট-আউট ধরে নিয়েই তাঁর ব্যাটিং গড় নির্ধারণ করা হয়।
তবে ব্যাটসম্যান স্বেচ্ছায় মাঠ ছাড়লে রিটায়ার্ড আউট বলে ধরে নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার আর ব্যাট হাতে মাঠে ফিরতে পারেন না।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে কবে দেখা গিয়েছিল: সচরাচর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচগুলিতেই রিটায়ার্ড আউটের ছবি দেখা যায়। কোনও ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি বা হাফ-সেঞ্চুরি করার পরে পরবর্তী ক্রিকেটারকে ব্যাটিং অনুশীলনের সুযোগ করে দিতে রিটায়ার্ড আউট হন। আইপিএলে এমনটা আগে কখনও দেখা যায়নি। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এর আগে একবার এমন ছবি দেখা গিয়েছিল। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়র লিগে সুনজামুল ইসলাম রিটায়ার্ড আউট হয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কবে দেখা গিয়েছিল: ২০০১ সালে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কা বনাম বাংলাদেশ ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বর্তমান হেড কোচ মাহেলা জয়াবর্ধনে ১৫০ রানে পৌঁছনোর পরে এবং মার্ভান আতাপত্তু ২০০ রানে পৌঁছনোর পরে রিটায়ার্ড আউট হয়েছিলেন। সেই সময় টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ছিল নবাগত দল। তাই 'ছোট দল' বাংলাদেশকে অসম্মান করা হয়েছে বলে সেই সময় জলঘোলা হয় বিস্তর। শ্রীলঙ্কা দলকে পরে ক্ষমাও চাইতে হয়। জয়াবর্ধনেরা বিষয়টি টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত বলে সাফাই দিয়েছিলেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা শিবিরে উপস্থিত থাকা কুমার সাঙ্গাকারা এখন রাজস্থান রয়্যালসের কোচ। অশ্বিনের রিটায়ার্ড আউটের ক্ষেত্রে তাঁর পূর্ণ সমর্থন ছিল।
এছাড়া ২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে মলদ্বীপের বিরুদ্ধে ভুটানের সোমন টোবগে ৩৫ বলে ২৪ রানে ব্যাট করার সময় রিটায়ার্ড আউট হয়েছিলেন।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।