শুভব্রত মুখার্জি: চলতি আইপিএলের এলিমিনেটরে মুখোমুখি হয়েছিল পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং লখনউ সুপার জায়ান্টস। ২০২২ সালে অভিষেক হওয়ার পরে এটাই ছিল লখনউয়ের দ্বিতীয় মরশুম। পরপর দুই মরশুমেই তারা প্লে অফে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে দু'বারেই তাদের অভিযান শেষ হয়ে গেল এলিমিনেটরেই। বুধবার চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে বাজে ভাবে হারতে হল লখনউকে। বড় ব্যবধানে লখনউকে হারিয়ে কোয়ালিফায়ার-টু-তে মুম্বই মুখোমুখি হবে গুজরাট টাইটান্সের। আর আজকের জয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নায়ক নিঃসন্দেহে তাদের প্রতিভাবান পেসার আকাশ মাধওয়াল। এ দিন দুরন্ত বোলিং করে আকাশ মাধওয়াল আইপিএলের ইতিহাসে গড়ে ফেলেছেন একাধিক নজিরও।
আইপিএলের প্লে অফ ইতিহাসে আকাশ প্রথম বোলার যিনি এক ম্যাচে পাঁচটি উইকেট নেওয়ার নজির গড়ে ফেললেন। প্রসঙ্গত এর আগে কোনও বোলার এই কৃতিত্ব অর্জন করেননি। এ দিন উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি অত্যন্ত কৃপণ বোলিংও করেছেন তিনি। মাত্র ৫ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন পাঁচটি উইকেট। আকাশ মাধওয়ালের এই অনবদ্য পারফরম্যান্সে ভর করেই ৮১ রানের বিরাট ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। মাধওয়ালের আগে প্লে অফের এক ম্যাচে সর্বাধিক চারটি উইকেট নেওয়ার নজির ছিল।
আরও পড়ুন: প্লে-অফে ৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে রেকর্ড আকাশের, ভাঙলেন ১৪ বছর আগের কুম্বলের নজিরও
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ডাগ বোলিনজার। ২০১০ সালে মুম্বইতে সিএসকের হয়ে ডেকান চার্জার্সের বিরুদ্ধে তিনি নিয়েছিলেন ১৩ রানে চার উইকেট। তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন আর এক মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পেসার জসপ্রীত বুমরাহ। ২০২০ সালে কোয়ালিফায়ার-ওয়ানে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে তিনি ১৪ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৪টি উইকেট। তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন গুজরাট লায়ন্সের ধাওয়াল কুলকার্ণি। ২০১৬ সালের কোয়ালিফায়ার-ওয়ানে আরসিবির বিরুদ্ধে ১৪ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
আকাশের নিখুঁত লাইন, লেন্থের বোলিংয়ের কোনও জবাব এ দিন ছিল না সুপার জায়ান্টসের ব্যাটারদের কাছে। ফলে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। সেখান থেকে ম্যাচে আর কামব্যাক সম্ভব হয়নি লখনউয়ের।
এদিন আকাশ মাধওয়াল ৩.৩ ওভার বল করেছেন। দিয়েছেন মাত্র ৫ রান। তুলে নেন পাঁচটি উইকেট ও। ইকোনমি মাত্র ১.৪২ রান প্রতি ওভার। রোহিত শর্মারা এদিন প্রথমে ব্যাট করে আট উইকেট হারিয়ে করেন ১৮২ রান। ক্যামেরন গ্রিন (৪১), সূর্যকুমার যাদব (৩৩) এবং তিলক বর্মার (২৬) ভালো ব্যাটিং করে দলকে ভালো জায়গায় পৌঁছে দেন। বাকি কাজটা বল হাতে করে দেন আকাশ মাধওয়াল। প্রেরক মানকড়, আয়ুশ বাদোনি, নিকোলাস পুরান, রবি বিষ্ণোই এবং মহসিন খানের উইকেট তুলে নেন। ফলে মাত্র ১০১ রানেই আটকে যায় সুপার জায়ান্টসরা।
আরও পড়ুন: ভারতীয়দের মধ্যে IPL-এর ৫০ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান, সচিনের রেকর্ড গুঁড়িয়ে দিলেন রুতুরাজ
পাঁচ উইকেটে নিতে মাত্র ৫ রান খরচ করেন আকাশ মাধওয়াল। আইপিএলের ইতিহাসে যুগ্মভাবে সবচেয়ে কম। ২০০৯ সালের আইপিএলে ভারতের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলে ৫ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন।
৫ রানে ৫ উইকেট- আকাশ মাধওয়ালের এই বোলিং পরিসংখ্যান ভারতীয় বোলারদের মধ্যে যুগ্মভাবে সেরা। অনিল কুম্বলেরও একই পরিসংখ্যান ছিল। আইপিএলে সব মিলিয়ে চারজন বোলারের এই পরিসংখ্যান রয়েছে।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে দ্বিতীয় এবং সব মিলিয়ে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে আইপিএলে টানা দু-ম্যাচে ৪ কিংবা তার বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন আকাশ। এ বার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন আকাশ। মুম্বইয়ের হয়ে ২০১২ সালে এই কীর্তি ছিল মুনাফ প্যাটেলের।