আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগের কথা। ৯ বছরের এক বালক। তাঁর দাদার সঙ্গে উপস্থিত হন দিল্লির ক্রিকেট কোচ রাজকুমার শর্মার কাছে। উদ্দেশ্য একটাই, ক্রিকেটার হয়ে ওঠা। সেখান থেকে হাতেখড়ি তাঁর। ধীরে ধীরে অনুশীলনও শুরু করেন তিনি। তখনই কোচ রাজকুমার বুঝতে পারেন এই ছেলে অন্যদের থেকে বেশ আলাদা। সময় নিজস্ব নিয়ম মেনে এগিয়েছে। সেই ৯ বছরের বালক আজ ৩৪ বছরে এসে পৌঁছেছে। বিশ্বজুড়ে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছে। তিনি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
জাতীয় দলের হয়ে খেলা শুরু করার পর আজ ৭৫টি শতরান নিজের পকেটে ভরে নিয়েছেন তিনি। আইপিএলের ২২৩টি ইনিংসে করেছেন ৬৯১৩ রান। স্ট্রাইক রেট ১২৯.৪। গড় ৩০.০৫। মাঝে রানের খরা চললেও নিজের পুরনো ফর্ম ফিরে পেয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি আইপিএলেও রান করছেন। তার সঙ্গে সঙ্গেই ফিরে এসেছে তাঁর পুরনো মেজাজ। আগ্রাসী মনোভাব বেরিয়ে আসছে। সম্প্রতি তাঁর আইপিএলের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের পক্ষ থেকে তাঁর ছোটবেলার কোচ, বন্ধুর মায়ের সঙ্গে কথা বলে বিরাটের শৈশবকালের বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়।
সেখানে বিরাটের ছোটবেলাকার কোচ রাজকুমার শর্মাকে বলতে শোনা যায়, '১৯৯৮ সালের মে মাসে ৯ বছরের বালক দাদার সঙ্গে আমার এখানে প্র্যাকটিস করতে আসে। কয়েকদিন যাওয়ার পরই আমরা বুঝতে পারি এই ছেলের অসাধারণ প্রতিভা রয়েছে। অন্য সব বাচ্চাদের থেকে ওকে আলাদা করে দেখতে শুরু করে।' এখানে না থেমে তিনি আরও বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই বিরাটের আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি ছিল। ও বরাবরই খেলার প্রতি খুব বেশি ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেখার ইচ্ছা ছিল দেখার মতো। একদিন আমার কাছে এসে বলল আমি বড়োদের সঙ্গে খেলব। আমি বুঝিয়ে বলেছিলাম তুমি এখনও অনেক ছোট। কিন্তু ও শোনেনি। বড়দের নেটে ব্যাট করে। তবে একদিন ব্যাট করতে গিয়ে বুকে লেগে যায়। ও বলেছিল কাউকে না বলতে। কিন্তু ওর মা তা ধরে নেয়।'
বিরাট কোহলির ছোটবেলার বন্ধু শাহলাজ বলেন, 'আমরা যখন ক্লাস ফাইভে পড়ি তখন বিরাট কোহলির সঙ্গে প্রথম দেখা হয়। আমার একটি ম্যাচের কথা মনে আছে, আমরা তখন পুনেতে খেলছিলাম। তখন আমাদের দলের উইকেট পরপর পড়ে যাচ্ছিল। অপরপ্রান্তে শুধু বিরাট টিকে ছিল। তাড়াতাড়ি সব উইকেট পড়ে যাওয়ায় আমাকে ব্যাট করতে নামতে হয়। তখন বিরাট আমাকে বলে তোকে কিছু করতে হবে না শুধু টিকে থাক। কোহেলি সে ম্যাচ একা হাতেই জিতিয়ে দেয়। তখনই আমরা বুঝতে পারি বিরাট অন্য ধরণের ক্রিকেটার। আগামীতে আরও ভালো করবে। তবে ও ছোটবেলায় অনুশীলনের পরই মোমো, চাউমিন, ছোলে বাটুরে খেতে পছন্দ করত। ওর সঙ্গেই প্রায় দিন আমি খেতে যেতাম। যার জন্য বাড়িতে বকাও খেতে হয়েছে।'
বিরাট কোহলির স্মৃতিচারণা করেছে শাহলাজের মা বলেন, 'আমাদের যখনই দেখা হতো বিরাট আমার হাতের এক ধরনের আলুর তরকারি খেতে খুব ভালোবাসতো। আমি তা বানিয়ে দিতাম। দেখা হলেই জিজ্ঞাসা করল, আজকে কী এনেছ? আমরা একসঙ্গে অনেক ভালো মজার দিন কাটিয়েছি। একদিন রাস্তায় এক ছবির পোস্টার দেখতে পেয়ে, আমায় বলেছিল, দেখো একদিন আমি বড় মানুষ হব এবং অভিনেত্রীকে বিয়ে করব।' এই ভিডিয়োর মাধ্যমে অনেক না জানা কথা গল্প সামনে এল।
(আইপিএলের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে- https://bangla.hindustantimes.com/sports/ipl)
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।