আবেগ এবং ঐতিহ্যের পক্ষে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। আর সেই ঝড়ের সামনে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হল ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল) কর্তৃপক্ষ। ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটার থেকে সরিয়ে নেওয়া হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিতর্কিত প্রোমোশনাল ভিডিয়ো।
গোড়া থেকেই মোহনবাগান এবং এটিকের সংযুক্তি নিয়ে বাগান সমর্থকদের একাংশের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। যত টুর্নামেন্ট এগিয়ে এসেছে, তত বেড়েছে ক্ষোভের মাত্রা। দীর্ঘদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নামের আগে থেকে এটিকে বাদ দেওয়া, তিনটি স্টার সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন বাগান সমর্থকদের একাংশ।
তারইমধ্যে শনিবার প্রোমোশনাল ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিল আইএসএল কর্তৃপক্ষ। সেই ভিডিয়োয় এটিকে-মোহনবাগানের সংযুক্তির বিষয়ে বলেছিলেন সৌরভ। পরে তাতে এসসি ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরাও এসেছিলেন। শেষপর্যন্ত বাংলার ফুটবলের ‘মজা ডাবল’ হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন সৌরভ। কিন্তু সেই ভিডিয়ো প্রকাশের পরই বাগান সমর্থকদের একাংশ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। অনেকে দাবি করেন, ‘ছ'বছর আগে এই বাংলার মাটিতে শুরু হয়েছিল ইমোশনের খেলা’ বলে মোহনবাগানের ১৩১ বছরের ঐতিহ্যকে খাটো করেছেন সৌরভ। তা নিয়ে এটিকে মোহনবাগানকে বয়কটের ডাক দেন অনেকে। প্রতিবাদের ঢেউ ক্রমশ ভয়াল হতে পারে। তার জেরে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। সমর্থকদের সমবতে প্রতিবাদে উপযুক্ত পদক্ষেপেরও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
তারপর মঙ্গলবার দুপুর থেকে আইএসএলের ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটারে সেই ভিডিয়ো দেখা মিলছে না। তবে তা ডিলিট করা হয়েছে নাকি, শুধু ‘প্রাইভেট’ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তাতে অবশ্য আটকায়নি মোহনবাগান সমর্থকদের আবেগের বিস্ফোরণ। তাঁদের সাফ বক্তব্য, এটা আবেগ ও ঐতিহ্যের জয়। ১৩১ বছরের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য যখন সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসেন, তখন জয় নিশ্চিত।
উচ্ছ্বাসে মাতলেও কেউ কেউ আবার সাবধানও করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, 'জয়' এসেছে সমবেত প্রতিবাদে। ভিডিয়ো সরানোর খবর পাওয়ার পর আদ্যোপান্ত মোহনবাগান সমর্থক সৌম্য বসু যেমন ফেসবুকের দেওয়ালে লিখেছেন, ‘সাবধান নাবিক বন্ধুরা! যেটুকু সাফল্য এসেছে তা সমবেত। প্রত্যেকটি মেরিনার তাদের একটি টুইট থেকে এক টুকরো চোখের জল দিয়ে বদল আনছে, আনবে। যেটুকু জয় আসবে, তা সবার প্রাপ্য। প্রত্যেকটি মোহন প্রাণের। একজন যে কিচ্ছু করতে পারেনি শুধু মনে মনে প্রার্থনা করে গিয়েছে যে এই অপমান বন্ধ হোক, তারও প্রাপ্য আর যে প্রত্যেক মিনিটে টুইট, পোস্ট করে গেছে, তারও প্রাপ্য। ঠিক এই সময়টায়, এই জায়গাতেই সাবধান হওয়ার দরকার। ঠিক এই মুহূর্তেই দাদাদের বিশেষ চামচেরা, পেটোয়া ফ্যান ক্লাবরা সব ক্ষীর খেয়ে যাওয়ার চেষ্টায় মত্ত হয়ে উঠবে।’
আর সমর্থকদের সেই কৃতিত্বে যেন স্বার্থান্বেষীরা কোনও ভাগ বসাতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সৌম্যের কথায়, ‘এখানে (মোহনবাগানে) কেউ বড়, ছোটো নেই। কাউকে এক ইঞ্চিও মহান হওয়ার জমি ছাড়বেন না। ক্লাবের পাশে থাকব, উন্নতির প্রযোজনে সমালোচনা করব। আমাদের ক্লাব, আমাদের দায়িত্ব, আমাদের অধিকার।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।