দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামবে ইংল্যান্ড। তার আগে ব্রিটিশদের নেটে অনবদ্য মুহূর্ত ধরা পড়ল। কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নের ‘বল অফ দ্য সেঞ্চুরি’র মুহূর্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ভাইরাল।
প্রয়াত তারকাকে মনে করালেন কে জানেন? না কোনও স্পিনার নন। বরং ব্রিটিশ পেসার আরও একবার মনে করালেন ওয়ার্নের অনবদ্য সুইংয়ের কথা। ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় টেস্ট হবে দ্য ওভালে। নেট অনুশীলনে জিমি অ্যান্ডারসন দেখালেন সুইং বোলিংয়ের আসল নৈপুণ্য।
রাউন্ড দ্য উইকেট বল করছিলেন অ্যান্ডারসন। কোনও ডান হাতি ব্যাটসম্যান নিঃসন্দেহে লেগ স্টাম্পের এত বাইরে পিচ করা ডেলিভারি খেলার চেষ্টাই করবেন না। বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান, অফ স্টাম্পের এত বাইরের ডেলিভারি ভেবে জাজমেন্ট দিয়ে বল ছাড়তেই পারেন। তবে বাউন্স কম হলে তাঁর উইকেট সুরক্ষিত থাকবে, এই নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। এতটাই সুইং হয়েছে এই ডেলিভারি যে, ব্যাটসম্যানের মধ্যে দ্বিধা তৈরি হতে বাধ্য।
আরও পড়ুন: তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে এক নম্বরে অ্যান্ডারসন, কেড়ে নিলেন ম্যাকগ্রার বিশ্বরেকর্ড
অ্যান্ডারসনের এই ডেলিভারি মনে করিয়ে দিয়েছে প্রয়াত শেন ওয়ার্নের হাতের শিল্পকে। দু’জনের বোলিং স্টাইল একেবারেই আলাদা। শেন ওয়ার্ন লেগ স্পিনের জাদুকর ছিলেন। আর জিমি অ্যান্ডারসন সুইংয়ের। ১৯৯৩ অ্যাসেজ সিরিজে এমনই একটা ডেলিভারিতে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন ওয়ার্ন। ম্যাঞ্চেস্টারে সিরিজের প্রথম ম্যাচ। শেন ওয়ার্নের ক্যারিয়ারের প্রথম অ্যাসেজ টেস্ট। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে তাঁর প্রথম ডেলিভারি। ওভার দ্য় উইকেট বোলিং করেন শেন। লেগ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে পড়ে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান মাইক গ্যাটিংয়ের উইকেট ছিটকে দেয়। গ্যাটিং কিছুক্ষণ অবাক দৃষ্টিতে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন, বিষয়টি কী ঘটল! নিঃসন্দেহে অবিশ্বাস্য ডেলিভারি ছিল।
আরও পড়ুন: বুড়ো হাড়ের ভেল্কি, লর্ডসে উইকেট নিয়েই ১১০ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন অ্যান্ডারসন
সকলেরই আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল এই ডেলিভারি। ম্যাচের দ্বিতীয় দিনই এতটা টার্ন। তাও আবার লেগ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে থেকে। মাইক গ্যাটিং কিছু বুঝে ওঠার আগেই বল লাগে উইকেটে। লেগ স্পিনের জাদুকরের এই ডেলিভারিকেই ‘শতাব্দীর সেরা’ বলা হয়। পরবর্তীতে বেশ কিছু ডেলিভারির সঙ্গে এর তুলনা টানা হয়েছে। ওভালের নেটে জিমি অ্যান্ডারসন সুইং বোলিংয়ে তেমনই একটা মুহূর্ত তৈরি করলেন। যা দেখে চোখ ছানাবড়া নেটিজেনদের।
বয়স যে নেহাৎ-ই সংখ্যা মাত্র, তার জেমস অ্যান্ডারসন বারবার প্রমাণ করে চলেছেন। কারণ একজন পেসার যাঁর ৪০ বছর হয়ে গিয়েছে, অথচ ফিটনেস এখনও তুঙ্গে, দুরন্ত ছন্দে খেলে চলেছেন তিনি।
সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার নজির রয়েছে লিটল মাস্টার সচিন তেন্ডুলকরের। ২০০ টেস্ট খেলেছেন তিনি। তালিকায় প্রথম দশে ব্যাটসম্যানদেরই দাপট। অথচ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন একজনই বোলার। তাও তিনি কিনা একজন পেসার। তিনি আর কেউ নন। জেমস অ্যান্ডারসন। ইতিমধ্যেই তাঁর নামের পাশে ১৭৪ টি টেস্ট। প্রায় ২০ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ার। একজন পেসারের ক্ষেত্রে এত দিন ধরে ফিটনেস ধরে রাখা একে বারেই সহজ কাজ নয়। কিন্তু অসাধ্যসাধন করে চলেছেন অ্যান্ডারসন।