ঋত্বিক মিত্র
বছরখানেক ধরে ছন্দে ছিলেন না। ব্যাট হাতে রান আসছিল না। জাতীয় দলের প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়ে যান। সেইসময় ২০১৪ সালে বিরাট কোহলির ভয়ঙ্কর ইংল্যান্ড সফরই তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। এমনটাই জানালেন ভারতীয় তারকা জেমাইমা রদ্রিগেজ।
গত বছর পাঁচটি একদিনের ম্যাচে মাত্র ২২ রান করেছিলেন তরুণ ভারতীয় ব্যাটার। তারপর জুলাইয়ে ভারতীয় দলের ইংল্যান্ড সফরের প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়ে গিয়েছিলেন। টি-টোয়েন্টি দলেও সুযোগ পাচ্ছিলেন না। সেই অবস্থায় ‘দ্য হান্ড্রেড’-এর আগে রীতিমতো হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন ভারতের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটার।
‘দ্য হান্ড্রেড’-এর আগে সেই হতাশাজনক সময়ের বিষয়ে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এ ভারতের তরুণ তারকা বলেন, ‘দ্য হান্ড্রেড এবং মহিলাদের বিগ ব্যাশ লিগের আগে আমার ফর্ম ভালো ছিল না। ব্যক্তি হিসেবে তা আমার উপর বড়সড় প্রভাব ফেলেছিল। কারণ যখনই আমি মাঠে নামি, তখনই আমি ভালো করতে চাই। সেইসময় আমার খুব মন খারাপ ছিল। আত্মবিশ্বাস কম ছিল। অভাব ছিল আত্মমর্যাদার। আমি প্রচণ্ড কেঁদেছিলাম - সকলের সামনে নয় অবশ্যই। কিন্তু নিজের ঘরে, নিভৃতে কেঁদেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার জন্য দুনিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। কোনওকিছু কাজে দেবে না।’
সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিরাটের অফফর্মের মধ্যে অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন জেমাইমা। ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে ১০ ইনিংসে (পাঁচ টেস্ট) বিরাটের গড় ছিল মাত্র ১৩.৫। করেছিলেন ১, ৮, ২৫, ০, ৩৯, ২৮, ০, ৭, ৬ এবং ২০ রান। পরবর্তী সময় একাধিকবার বিরাট বলেছিলেন, কীভাবে সেইসময় হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন। সেই বিষয়ের রেশ টেনে জেমাইমা বলেন, ‘ইংল্যান্ডে সেই পরিস্থিতির সময় আমি বিরাট কোহলির একটি সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম। ২০১৪ সালের (ইংল্যান্ড) সিরিজ নিয়ে সাক্ষাৎকার ছিল। বিরাট বলেছিল যে ওর উঠতে ইচ্ছা করত না। আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল। আমি সেই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পাচ্ছিলাম। তখনই ভেবে নিয়েছিলাম যে বিরাটের একজন ব্যাটারের যখন এরকম মনে হতে পারে, তাহলে আমারও মনে হতে পারে। এরকম মনে হওয়ায় কোনও ভুল নেই। ওর একটা কথা আমার মনোভাব পালটে দিয়েছিল। বলেছিল যে কাউকে কিছু প্রমাণ করার জন্য ও খেলে না। ও শুধুমাত্র ক্রিকেট খেলতে এসেছিল এবং তা উপভোগ করতে এসেছিল। জীবনে এমন একটি জায়গায় এসে পৌঁছাও যে সবাই তোমায় নিয়ে কথা বলছে এবং তোমার সমালোচনা করছে। আপনি তাঁদের ভুল প্রমাণ করতে চান।’
ইংল্যান্ডের সেই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন। সাত ইনিংসে করেছিলেন ২৪৯ রান। জেমাইমা বলেন, ‘দ্য হান্ড্রেডের প্রথম ম্যাচের আগে আমি প্রবল চাপে ছিলাম। ম্যাচের আগের রাতে ভালোভাবে ঘুম হয়নি। ম্যাচের দিনও উদ্বিগ্ন ছিলাম। কিন্তু আমি নিজেকে বলেছিলাম, দেখো, জেমাইমা, তোমার থেকে কারও কোনও আশা নেই। তাই মাঠে নেমে কেন আনন্দ করবে না? কাউকে প্রমাণ করার জন্য নয়, শুধু নিজেকে তুলে ধরার জন্য।’ জেমাইমার যে পরিকল্পনা সফল হয়েছিল। ওয়েলশ ফায়ারের বিরুদ্ধে ৪৩ বলে অপরাজিত ৯২ রান করেছিলেন। যা পরবর্তীতে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল। তারপর মহিলা বিগ ব্যাশ লিগেও ভালো ছন্দে ছিলেন। কিন্তু মহিলা বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় দলে সুযোগ পাননি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।