শুভব্রত মুখার্জি: পাঁচ দিনের টেস্টের প্রায় তিনটি দিনই নষ্ট হয়েছে বৃষ্টিতে। সেই টেস্টেও যে ফলাফল হতে পারে, তা হয়ত সেই ভাবে কেউ আশা করেননি। তবে এমন ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে ম্যাচের শেষদিন এক রুদ্ধশ্বাস জয় তুলে নিয়ে টাইগারদের তাদের মাটিতেই হোয়াইটওয়াশ করল বাবর আজম বাহিনী।
এ দিন নতুন বলে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলির আগুনে স্পেল এবং পরবর্তীতে সাজিদ খানের স্পিনের বিরুদ্ধে কোন জবাব গড়ে তুলতে পারেননি বাংলাদেশ ব্যাটাররা। মিরপুর টেস্টের শেষ দিনে পাকিস্তানের অনবদ্য জয়ের নায়ক তাদের বোলাররা। তবে ম্যাচ জয়ের অন্যতম নায়ক বোলার বাবর আজমও। দুই ওভার হাত ঘুরিয়েই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট উইকেটটি এমন সময়ে ম্যাচের এমন প্রেক্ষাপটে নিয়েছেন তিনি, যা কার্যত ম্যাচের টার্নিং পয়েন্টও বলা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত এর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৮৯ ম্যাচ খেলে কখনও বোলিং করেননি বাবর। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে উইকেট ছিল ৫টি। লিস্ট ‘এ’ ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে উইকেট নিয়েছেন ১৬টি।
জাতীয় দলের হয়ে প্রথম বার বোলিং করেন চলতি টেস্টের প্রথম ইনিংসে। সেখানে মাত্র ১ ওভার বল করেন তিনি। দ্বিতীয় ওভার বোলিং করতে আসেন একেবারে শেষ দিনের শেষ সেশনে।
ম্যাচ তখন টানটান উত্তেজনাতে ভরপুর। একদিকে দাঁত কামড়ে লড়াই চালাচ্ছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। আর অপর দিকে তাঁদেরকে আউট করে পাকিস্তান দলকে এক অবিস্মরণীয় টেস্ট জয় উপহার দিতে মরিয়া তাদের বোলাররা। টাইগারদের দ্বিতীয় ইনিংসের তখন ৭৫ ওভার পেরিয়েছে। শাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজের জুটি উইকেটে প্রায় ২৩ ওভার কাটানোর পরে বাংলাদেশ তখন প্রায় নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে।
সেই সময়ে অধিনায়ক নিজের হাতে দায়িত্ব নিয়ে নেন। বাবর বোলিংয়ে আসার পর দ্বিতীয় বলেই ভেঙে দেন এই জুটি! মিরাজ ৭০ বলে ১৪ রান করে প্রায় ঘন্টা দেড়েক ২২ গজে টেকার পরে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাটিং। শেষ ৪ উইকেট মাত্র ৭ রানের মধ্যে হারিয়ে বসে থাকে বাংলাদেশ।
ম্যাচের পর তাই একটু বেশিই উচ্ছ্বাসিত ছিলেন বাবর আজম। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বোলিং করলাম। অনূর্ধ্ব-১৯ এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এর আগে বোলিং করেছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল করার সুযোগ পাইনি। এই টেস্টে আমার মনে হয়েছিল বোলিং করা উচিত। বিষয়টি উপভোগ করেছি। ২-৩ ওভার বোলিং উপভোগ করেছি। মিরাজের উইকেট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই উইকেটের কারণে ম্যাচ ঘুরেছে।’
সিরিজ জয় প্রসঙ্গে অধিনায়ক বাবরের মত, ‘আত্মবিশ্বাস প্রদান করে দলে সবার ভূমিকা পরিষ্কার করে দিলে, দল হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করলে, তার ফল পাওয়া যাবেই। টি-২০ বিশ্বকাপে, এখানে টি-২০ সিরিজে ও টেস্ট সিরিজে যে ভাবে ছেলেরা দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে আমার মতে, এই ব্যাপারটাই দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। অধিনায়ক হিসেবে আমি বেশ গর্বিত যে আমার এরকম একটি দল আছে। যে ভাবে আমরা দু'টি সিরিজই জিতেছি, যে ভাবে শেষ টেস্ট ম্যাচে জিতেছি তা অসাধারণ।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।