একদিকে নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড শহর কলকাতায়, অন্যদিকে সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ডের সেমিফাইনালে মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু এফসির ধুন্ধুমার ফুটবল। শেষমেশ নিজেদের ডেরায় বেঙ্গালুরুকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে ওঠে মোহনবাগান।
বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসে পাল্লা ঝুঁকে মোহনবাগানের দিকেই। এই ম্যাচের আগে উভয় দল একে অপরের বিরুদ্ধে মোট ১৮ বার মাঠে নামে। ৯টি ম্যাচ জেতে মোহনবাগান এবং ৬টি ম্যাচ জেতে বেঙ্গালুরু। ৩টি ম্যাচ ড্র হয়। শেষ ৫টি ম্যাচে মোহনবাগান ৩ বার হারিয়ে দেয় বেঙ্গালুরু এফসিকে। সুতরাং, মানসিকভাবে এগিয়ে থেকেই ডুরান্ডের সেমিফাইনালে মাঠে নামে মোহনবাগান। শেষমেশ তারা বেঙ্গালুরুর থেকে ব্যবধান আরও একটু বাড়িয়ে নেয়।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই এক গোলে পিছিয়ে পড়ে মোহনবাগান। ৪১ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পেয়ে যায় বেঙ্গালুরু এফসি। বিনীতকে নিজেদের বক্সে অবৈধভাবে আটকানোর চেষ্টা করেন লিস্টন। ৪৩ মিনিটের মাথায় স্পট কিক থেকে গোল করেন সুনীল ছেত্রী।
প্রথমার্ধেই গোল শোধ করার জোড়া সুযোগ পেয়ে যায় মোহনবাগান। তবে ৪৫ মিনিটের মাথায় ২টি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি সবুজ-মেরুন শিবির। বিরতিতে ম্যাচের স্কোর-লাইন ছিল বেঙ্গালুরু এফসির অনুকূলে ১-০।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফের গোল পেয়ে যায় বেঙ্গালুরু এফসি। এবার বিনীতের গোলে ম্যাচে ২-০ লিড নেয় বিএফসি। ৬০ মিনিটের মাথায় গোলের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে মোহনবাগান। কার্যত ফাঁকা জালে বল জড়াতে ব্যর্থ হন গ্রেগ। ৬৬ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পেয়ে যায় মোহনবাগান। ৬৮ মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল করে মোহনবাগানের ব্যবধান কমিয়ে ১-২ করেন পেত্রাতস।
৭২ মিনিটে দুর্দান্ত সেভে মোহনবাগানের পতন রোধ করেন কাইথ। ৮৪ মিনিটের মাথায় থাপার গোলে ম্যাচে ২-২ সমতা ফেরায় মোহনবাগান। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ম্যাচ ২-২ সমতায় দাঁড়িয়ে যায়। ফলে লড়াই গড়ায় পেনাল্টি শুট-আউটে।
টাই-ব্রেকারের ফলাফল
১. শুরুতে মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন কামিন্স। বেঙ্গালুরুর হয়ে পালটা গোল করেন মেন্ডেজ। শুট-আউটে স্কোর-লাইন দাঁড়ায় ১-১।
২. মোহনবাগানের হয়ে দ্বিতীয় শট নেন মনবীর এবং তিনি গোল করেন। বেঙ্গালুরুর হয়ে পালটা গোল করেন ভেকে। স্কোর-লাইন দাঁড়ায় ২-২।
৩. মোহনবাগানের হয়ে তৃতীয় শট নেন লিস্টন এবং গোল করতে ভুল করেননি তিনি। যদিও বেঙ্গালুরুর হয়ে পালটা গোল করেন কাপো। ফলে স্কোর-লাইন দাঁড়ায় ৩-৩।
৪. মোহনবাগানের হয়ে চতুর্থ শট নেন পেত্রাতস এবং গোল পেয়ে যান। বেঙ্গালুরুর নার্জারির শট আটকে দেন কাইথ। ফলে শুট-আউটে ৪-৩ লিড পেয়ে যায় মোহনবাগান।
৫. মোহনবাগানের হয়ে পঞ্চম শট নেন স্টুয়ার্ট এবং তাঁর শট আটকে দেন গুরপ্রীত। বেঙ্গালুরুর হয়ে শেষ শট নেন জোভানোভিচ এবং কাইথ দুর্দান্ত সেভ করে মোহনবাগানকে জয় এনে দেন। টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে ম্যাচ জিতে ডুরান্ডের ফাইনালে ওঠে গতবারের চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান।
মোহনবাগানের প্রথম একাদশ
কাইথ (গোলকিপার), টম, থাপা, পেত্রাতস, মনবীর, শুভাশিস (ক্যাপ্টেন), লিস্টন, সাহাল, আলবার্তো, কামিন্স ও আপুইয়া।
বেঙ্গালুরু এফসির প্রথম একাদশ
গুরপ্রীত (গোলকিপার), রোশন, ভেকে, জোভানোভিচ, পূজারি, কাপো, নগুয়েরা, সুরেশ, বিনীত, ছেত্রী (ক্যাপ্টেন) ও ডায়াজ।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।