১৯৯৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর হরিয়ানার জন্মগ্রহণ করেন ভারতের ‘সোনার ছেলে’ নীরজ চোপড়া। অলিম্পিক্সের ইতিহাসে তিনিই ভারতীয় প্রথম অ্যাথলিট, যিনি ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড থেকে সোনা জিতেছেন। ২০২০ সালের টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ঐতিহাসিক সোনা জিতেছিলেন (২০২১ সালের ৭ অগস্ট হল সেই ঐতিহাসিক দিন)। এই মুহূর্তে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের খেতাবও আছে তাঁর দখলে। প্রথম ভারতীয় ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড অ্যাথলিট হিসেবে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান দখলও করেছেন ‘সোনার ছেলে’। ২০১৬ সালে নীরজ প্রথম ভারতীয় অ্যাথলিট হিসেবে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপও জিতেছিলেন। সেইসময় জুনিয়র বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন নীরজ। ২০১৮ সালের এশিয়ান গেমসে ৮৮.০৬ মিটার থ্রো করে জাতীয় রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছিলেন। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনা জিতেছিলেন ৮৭.৫৮ মিটার থ্রো করে। ২০২২ সালের এশিয়ান গেমসেও সোনা জিতেছিলেন। ২০২২ সালের জুনে স্টকহোম ডায়মন্ড লিগে ৮৯.৯৪ মিটার থ্রো করে নয়া জাতীয় রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছিলেন। নীরজের এমনই পারফরম্যান্স যে তাঁর নাম পালটে যদি কেউ নীরজ ‘ইতিহাস’ চোপড়া করে দেন, তাহলে কোনও ভুল হবে না। ২০২১ সাল থেকে তিনি ক্লস বারটোনিতজের অধীনে প্রশিক্ষণরত। উল্লেখ্য, নীরজ চণ্ডীগড়ের ডিএভি কলেজ থেকে করেছেন পড়াশোনা। তিনি ভারতীয় সেনায় আছেন। বর্তমানে ভারতীয় সেনায় সুবেদার তিনি। ২০১৬ সালে ১৫ মে তাঁকে ভারতীয় সেনার ৪ রাজপুতানা রাইফেলসের নায়েব সুবেদার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি সুবেদার হয়েছেন। ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি তাঁকে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল প্রদান করা হয়েছিল।
ভারত তো বটেই, বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে অন্যতম সেরা শাটলার হলেন পিভি সিন্ধু। ১৯৯৫ সালের ৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তেলাঙ্গানার (তৎকালীন অন্ধ্রপ্রদেশ) হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। ভারতের হয়ে অলিম্পিক্সে এখনও পর্যন্ত (২০২০ সালের টোকিয়ো অলিম্পিক্স পর্যন্ত) দু'জন ক্রীড়াবিদ দুটি মেডেল পেয়েছেন ব্যক্তিগত পর্যায়ে। একজন হলেন সুশীল কুমার এবং অপরজন হলেন পিভি সিন্ধু। ২০১৬ সালের রিওতে অলিম্পিক্সে প্রথম পদক জিতেছিলেন সিন্ধু। সেবার ক্যারোলিন মারিনের কাছে ফাইনাল হেরে সেবার রুপো পেয়েছিলেন। ২০২০ সালের টোকিয়ো অলিম্পিক গেমসে তিনি সেমিফাইনালে হেরে যান। সেবার ব্রোঞ্জ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তাঁকে। বিডব্লুএফ আয়োজিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি এখনও পর্যন্ত পাঁচটি পদক জিতেছেন। দ্বিতীয় মহিলা শাটলার হিসেবে এই কৃতিত্ব গড়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি তাঁর কেরিয়ারে সর্বাধিক উচ্চতায় পৌঁছে ছিলেন (র্যাঙ্কিংয়ের নিরিখে)। সেইসময় বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। কমনওয়েলথ গেমসে ২০২২ সালে বার্মিংহামে জিতেছিলেন সোনা। ২০১৮ সালে গোল্ড কোস্ট এশিয়ান গেমসে মিক্সড টিম ইভেন্টে জিতেছিলেন সোনা। উবের কাপেও ২০১৪ এবং ২০১৬ সালে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন তিনি। এশিয়ান গেমসে ২০১৪ সালে মহিলাদের টিম ইভেন্টে জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ। ২০১৮ সালে জাকার্তায় মহিলা সিঙ্গলসে জিতেছিলেন রুপো। এছাড়াও ২০১৯ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছিলেন তিনি। ১৯৭৭ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথম ভারতীয় হিসেবে সোনা জিতেছিলেন সিন্ধু। অর্জুন পুরস্কার, খেলরত্ন পুরস্কার, পদ্মশ্রী এবং পদ্মভূষণে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
বিশ্ব পর্যায়ে গলফে বরাবর আধিপত্য দেখিয়ে এসেছেন আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন অ্যাথলিটরা। আর তারইমধ্যে বিশ্বমঞ্চে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছেন অদিতি অশোক। ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চ কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৬ সালে প্রফেশনাল হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেন। এই মুহূর্তে তিনি এলপিজিএ ট্যুর এবং লেডিস ইউরোপিয়ান ট্যুরে খেলছেন। ইতিমধ্যেই দুটি অলিম্পিক্সে খেলে ফেলেছেন। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিক্স এবং ২০২০ সালের টোকিয়ো অলিম্পিক্স খেলেছিলেন। রিও অলিম্পিক্সে সর্বকনিষ্ঠ গল্ফার ছিলেন। ২০২০ সালের টোকিয়ো অলিম্পিক্সে পদক জয়ের একেবারে কাছে পৌঁছে গেলেও একটুর স্বপ্নের মেডেল ছোঁয়া হয়নি। চতুর্থ স্থানে শেষ করেছিলেন। অথচ একটা সময় দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। সেখান থেকে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন অদিতি। সেইসময় তাঁর মনোবল বাড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছিলেন, ‘দারুণ খেলেছ অদিতি। টোকিয়োয় অসাধারণ স্কিল ও দৃঢ়তার প্রমাণ দিয়েছ তুমি। অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হয়েছ। ভবিষ্যতের জন্য তোমাকে শুভেচ্ছা জানাই।’ অদিতির মনোবল বাড়িয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও। তিনি বলেছিলেন, ‘দারুণ খেলেছ অদিতি অশোক। আরও এক ভারতের কন্যা নিজের ছাপ রাখল। এই ঐতিহাসিক পারফরম্যান্স দিয়ে তুমি ভারতীয় গল্ফকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছ।' উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে রুকি অফ দ্য ইয়ার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন অদিতি। ২০১৬ সালেই হিরো উইমেন্স ইন্ডিয়ান ওপেন জিতেছিলেন তিনি। কাতার লেডিস ওপেনও জিতেছিলেন। ২০২৩ সালে ম্যাজিকাল কেনিয়া লেডিস ওপেনেও জিতেছিলেন অদিতি।
বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের সেরা তারকাদের তালিকার প্রথম দিকেই নাম আছে ভারতীয় শাটলার চিরাগ শেট্টি এবং সাত্ত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডির। তাঁদের জুটি অসংখ্য ইতিহাস গড়েছে। সাত্ত্বিকসাইরাজের জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশে। ২০০০ সালের ১৩ অগস্ট অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরি জেলার অমলাপুরমে জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদিকে চিরাগ চন্দ্রশেখর শেট্টি ১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই জন্মগ্রহণ করেছেন মুম্বইয়ে। চিরাগ এবং সাত্ত্বিকসাইরাজ দুজনেই ডানহাতি শাটলার। এই মুহূর্তে দু'জনেই ম্যাথিয়াস বো'র অধীনে প্র্যাকটিস করেন। সাত্ত্বিক ইতিমধ্যেই তাঁর নাম তুলে ফেলেছেন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে। ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে পুরুষ শাটলার হিসেবে সবথেকে দ্রুতগতির স্ম্যাশ করার নজির গড়েছেন তিনি। তাঁরা ভারতীয় ব্যাডমিন্টনকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, যেখানে আগে কখনও যায়নি। তাঁদের আগে ভারতের ব্যাডমিন্টন ইতিহাসে কখনও কোনও পুরুষ ডাবলস জুটি বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে উঠতে পারেনি। সেটাই করে দেখান তাঁরা। এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ের পরই সেই নজির গড়েছিলেন। এশিয়ান গেমসেও ইতিহাস গড়েছিলেন তাঁরা। প্রথম ভারতীয় ডাবলস জুটি হিসেবে এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন। সেইসঙ্গে পুরুষদের ব্যাডমিন্টন ডাবলসে ভারতের ৪১ বছরের পদক খরা কাটিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল। শুধু তাই নয়, বরং প্রথম ভারতীয় জুটি হিসেবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পুরুষদের ডাবলসে পদক পেয়েছিলেন। প্রথম ভারতীয় হিসেবে সুপার ১০০০ সিরিজ জিতেছিলেন। তাঁরা ইন্দোনেশিয়া ওপেন জিতে সেই নজির গড়েছিলেন।২০২০ সালে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০২৩ সালে তাঁরা মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৮ সাল এবং ২০২২ সালের কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছিলেন তাঁরা। ২০২২ সালেই ঐতিহ্যবাহী থমাস কাপের সোনাজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন তাঁরা।
বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের সেরা তারকাদের তালিকার প্রথম দিকেই নাম আছে ভারতীয় শাটলার চিরাগ শেট্টি এবং সাত্ত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডির। তাঁদের জুটি অসংখ্য ইতিহাস গড়েছে। সাত্ত্বিকসাইরাজের জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশে। ২০০০ সালের ১৩ অগস্ট অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরি জেলার অমলাপুরমে জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদিকে চিরাগ চন্দ্রশেখর শেট্টি ১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই জন্মগ্রহণ করেছেন মুম্বইয়ে। চিরাগ এবং সাত্ত্বিকসাইরাজ দুজনেই ডানহাতি শাটলার। এই মুহূর্তে দু'জনেই ম্যাথিয়াস বো'র অধীনে প্র্যাকটিস করেন। সাত্ত্বিক ইতিমধ্যেই তাঁর নাম তুলে ফেলেছেন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে। ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে পুরুষ শাটলার হিসেবে সবথেকে দ্রুতগতির স্ম্যাশ করার নজির গড়েছেন তিনি। তাঁরা ভারতীয় ব্যাডমিন্টনকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, যেখানে আগে কখনও যায়নি। তাঁদের আগে ভারতের ব্যাডমিন্টন ইতিহাসে কখনও কোনও পুরুষ ডাবলস জুটি বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে উঠতে পারেনি। সেটাই করে দেখান তাঁরা। এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ের পরই সেই নজির গড়েছিলেন। এশিয়ান গেমসেও ইতিহাস গড়েছিলেন তাঁরা। প্রথম ভারতীয় ডাবলস জুটি হিসেবে এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন। সেইসঙ্গে পুরুষদের ব্যাডমিন্টন ডাবলসে ভারতের ৪১ বছরের পদক খরা কাটিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল। শুধু তাই নয়, বরং প্রথম ভারতীয় জুটি হিসেবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পুরুষদের ডাবলসে পদক পেয়েছিলেন। প্রথম ভারতীয় হিসেবে সুপার ১০০০ সিরিজ জিতেছিলেন। তাঁরা ইন্দোনেশিয়া ওপেন জিতে সেই নজির গড়েছিলেন।২০২০ সালে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০২৩ সালে তাঁরা মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৮ সাল এবং ২০২২ সালের কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছিলেন তাঁরা। ২০২২ সালেই ঐতিহ্যবাহী থমাস কাপের সোনাজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন তাঁরা।
ভারতের ইতিহাসে একেবারে নয়া সেরা শ্যুটার হলেন মনু ভাকের। ২০০২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। হরিয়ানার ঝাঁঝারে জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়স থেকেই শ্যুটিংয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল তাঁর। তাছাড়া ছোটবেলায় বক্সিং, টেনিস, স্কেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শেষপর্যন্ত পেশাদার কেরিয়ার শুরু করেন শ্যুটিংয়েই। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তাঁর শুটিংয়ের ক্ষমতা নজর কেড়েছিল সকলের। টোকিয়ো অলিম্পিক্স গেমসে তাঁর অভিষেক হয়েছে। প্যারিস গেমস তাঁর কেরিয়ারে দ্বিতীয় অলিম্পিক্স। এই মুহূর্তে বিএ অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। বর্তমানে দ্বিতীয় বর্ষে তিনি পড়াশোনা করছেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে মনু ভাকের জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্ট জিতে সকলকে একেবারে তাক লাগিয়েছিলেন। এখানেই শেষ নয়, বিশ্বকাপে সোনা জিতেছিলেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে কমনওয়েলথ গেমসে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। যুব অলিম্পিক্সেও পদক জিতেছিলেন। এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস এবং শ্যুটিং বিশ্বকাপে পদক জিতেছিলেন তিনি। ২০২৩ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দলগত বিভাগে ২৫ মিটার পিস্তল ইভেন্টে বাকুতে সোনা জিতেছিলেন। এশিয়ান গেমসে মহিলাদের ২৫ মিটার পিস্তল দলগত ইভেন্টে মনু ভাকের, এস এশা সিং এবং রিদম সাংওয়ানের ভারতীয় ত্রয়ী স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। অলিম্পিক্সের আগে ২৫ মিটার এয়ার পিস্তলের কোয়ালিফিকেশনের ট্রায়ালে বিশ্বরেকর্ড গড়েন মনু। ২০২১ সালে ISSF জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে তিনটি সোনা জিতেছিলেন মনু।