গতকাল ভারতকে চলতি অলিম্পিকের চতুর্থ পদক এনে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভিনেশ ফোগট। কুস্তিতে ফাইনালে ওঠায় তিনি সোনা বা রুপো পাবেনই। আর ফাইনালে ওঠার পথে প্রথম লড়াইয়ে তিনি হারিয়েছিলেন বিশ্বের ১ নং জপানি কুস্তিগিরকে। তবে তারও আগে দেশেই তাঁকে লড়তে হয়েছে সরকার ও বিজেপির ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন ভিনেশরা। সেই সময় বারবার মোদীর কাছে নিজেদের আবেদন জানিয়েও সুরাহা পাননি ভিনেশরা। উলটে দিল্লি পুলিশ তাদের হেনস্থা করেছিল রাস্তায়। এহেন ভিনেশ দেশের হয়ে মেডেল নিশ্চিত করতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বিঁধল কংগ্রেস। (আরও পড়ুন: 'জোর থাপ্পড়', ভিনেশের জয়ে বিস্ফোরক মহাবীর ফোগট, 'আমার স্বপ্নপূরণ', বললেন সাক্ষী)
ভিনেশের মেডেল নিশ্চিত হয়ে যেতেই কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, 'ভিনেশ ফোগট প্যারিসে রৌপ্য বা সোনার পদক নিশ্চিত করেছেন। নন-বায়োলজিক্যাল প্রধানমন্ত্রী কী এখন তাঁকে ফোন করবেন? অবশ্যই তাঁকে অভিনন্দন জানাতে... কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল মহিলা কুস্তিগিরদের প্রতিবাদের সময় দিল্লি পুলিশ তাঁর সাথে যে নৃশংস আচরণ করেছিল তার জন্য কি ক্ষমা চাওয়া হবে?'
এদিকে রাহুল গান্ধীও ভিনেশে নিয়ে পোস্ট করেন। নিজের পোস্টে বিরোধী দলনেতা লেখেন, 'আজ, একদিনে বিশ্বের সেরা তিনজন কুস্তিগিরকে হারিয়ে গোটা দেশকে আবেগপ্রবণ করে তুলেছেন ভিনেশ। যারা ভিনেশ এবং তাঁর সহকর্মীদের সংগ্রামকে অস্বীকার করেছেন এবং এমনকি তাদের উদ্দেশ্য এবং সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁরা জবাব পেয়ে গিয়েছেন। ভারতবর্ষের সাহসী কন্যার সামনে গোটা সিস্টেম ছিল। তাঁকে রক্তের অশ্রুতে কাঁদিয়েছিল তারা। আজ সেই সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। এটাই চ্যাম্পিয়নদের পরিচয়, মাঠ থেকেই জবাব দেয় তারা। শুভ কামনা ভিনেশ। প্যারিসে আপনার সাফল্যের প্রতিধ্বনি দিল্লি পর্যন্ত স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।'
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে মহিলাদের ৫০ কেজি ফ্রিস্টাইলের সেমিফাইনালে কিউবার ইউসনেলিস গুজমান লোপেজকে উড়িয়ে দেন ভারতীয় তারকা। জেতেন ৫-০ ব্যবধানে। সেই জয়ের ফলে ফাইনালে পৌঁছে যান। সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায় অলিম্পিক্স পদক। সোনা জিতবেন নাকি রুপো পাবেন, সেই রংটা নির্ধারণ করতে বুধবার ম্যাটে নামবেন। যদি তিনি ফাইনালে জেতেন, তাহলে প্রথম ভারতীয় কুস্তিগির হিসেবে অলিম্পিক্সে সোনা পাবেন। এর আগে অবশ্য নিজের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচেই গোটা কুস্তি জগৎকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন ভিনেশ। শেষ ১৫ সেকেন্ডে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ভিনেশ। পরপর ৮২ ম্যাচে জেতা ইউই সুসাকিকে টেকডাউন করেন ভিনেশ। আর ম্যাচ শেষ হতেই কেঁদে ফেলেন ভিনেশ। হতবাক হয়ে ম্যাটে বসে থাকেন জাপানের তারকা কুস্তিগির। সেই মুহূর্তের পর থেকেই সোনার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল ভারত। সেই স্বপ্নের আরও কাছে পৌঁছে গেলেন ভিনেশ। আর তখন উঠে আসছে যন্তরমন্তরের সেই সব স্মৃতি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।