১২ বছর পর অলিম্পিক্স থেকে ব্যাডমিন্টনে আসেনি কোনও পদক। শেষ তিনটি অলিম্পিক্সে ব্যাডমিন্টন থেকে পদক এলেও, এবার সম্পূর্ণ শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে ভারতীয় শাটলারদের। ব্যাডমিন্টন থেকে ভারতকে প্রথম অলিম্পিক্স পদক এনে দিয়েছিলেন সাইনা নেহওয়াল। সাইনা ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিক্সের মহিলাদের সিঙ্গলসে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন। এর পর ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিক্সে মহিলা সিঙ্গলসে রুপো জেতেন পিভি সিন্ধু। ২০২০ টোকিয়োতে মহিলাদের সিঙ্গলসে ভারতকে ব্রোঞ্জ পদক এনে দেন সিন্ধুই।
প্যারিস অলিম্পিক্সে মহিলাদের সিঙ্গলসে আশা জাগিয়েও বিদায় নিয়েছিলেন পিভি সিন্ধু। এইচএস প্রণয় ছেলেদের সিঙ্গলসে লক্ষ্যের কাছে হেরে ছিটকে গিয়েছিলেন। সাত্ত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি এবং চিরাগ শেট্টি জুটিও ডাবলস থেকে ছিটকে যান। আর প্যারিস অলিম্পিক্সের দশম দিন লক্ষ্য সেন ব্রোঞ্জ পদক জয়ের ম্যাচে হেরে বসে থাকেন। এর পরেই প্রকাশ পাড়ুকোন ক্ষোভ উগরে দাবি করেছিলেন, সরকার এবং সংস্থাগুলো প্লেয়ারদের জন্য অনেক কিছু করছে, এবার খেলোয়াড়দের ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। আর ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাসকর ব্যাডমিন্টন কিংবদন্তি প্রকাশ পাড়ুকোনকে সমর্থন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: 2028 LA Olympics-এ সিন্ধু কি পদক পাবেন? সোজা কথায় উত্তর দিলেন সাইনা
তবে গাভাসকর ছাড়া কেউ-ই দীপিকা পাড়ুকোনের বাবার সঙ্গে সহমত হতে পারেননি। ডাবলস খেলোয়াড় অশ্বিনী পোনপ্পা তো সরাসরি কিংবদন্তি শাটলারকে আক্রমণ করে বলেছেন যে, তাঁর মন্তব্য ‘খেলোয়াড়কে বাসের নীচে ফেলে দেওয়ার’ সমতুল্য।
গাভাসকর আবার স্পোর্টস্টারের জন্য একটি কলামে লিখেছেন, ‘প্রকাশ পাড়ুকোন বরাবরই খবর থেকে দূরে থাকেন। তাঁর পুরো জীবনটা এমনই কেটেছে। তাঁর বক্তব্যকে কেউ কেউ ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করছেন। আসলে এই সব নিন্দুকেরা তাঁকে চেনার পরেও, সমালোচনা করছেন।’
গাভাসকর আরও লিখেছেন, ‘তিনি কী বলেছিলেন? তিনি বলেছিলেন, খেলোয়াড়রা আজ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পায়। ফেডারেশন ও সরকারের সমর্থনও রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের তাদের পারফরম্যান্সের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি তাঁর মতামত সুন্দর ভাবে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি কাউকে প্রশ্ন করেননি। কিছু লোক তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করে উপস্থাপন করেছে। এর পর থেকেই তাঁর সমালোচনা শুরু হয়।’
গাভাসকরেরও স্পষ্ট বক্তব্য, ‘কোনও খেলোয়াড় যদি তাদের পারফরম্যান্সের দায়িত্ব না নেয়, তাহলে কে নেবে? কী ভুল বলেছেন তিনি? লোকেরা বলছেন যে, এই কথাগুলো বলার জন্য সময়টা সঠিক ছিল না। কিন্তু যখন খেলোয়াড় একটি অজুহাত খুঁজছেন, তখন সেই সময়েই এই কথাগুলি বলা উচিত। তিনি চেঞ্জিং রুমেও এই কথা বলতে পারতেন, কিন্তু বিশ্বাস করুন, একজন খেলোয়াড়ের উপর জনসমক্ষে সমালোচনা ব্যাপক প্রভাব ফেলে। লক্ষ্য যদি সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন হয়, তাহলে এগুলো ওর ভালো ভাবে নেওয়া উচিত। আর না হলে লক্ষ্য এরকম ভুলই করতে থাকবে।’
আরও পড়ুন: চোট না থাকলে আরও চার মিটার বেশি ছুড়তে পারতাম… সোনা হারিয়ে আফসোস নীরজ চোপড়ার
এই প্রসঙ্গে গাভাসকর তুলে এনেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার ‘গার্ডেন মে ঘুমনেওয়ালা’-র প্রসঙ্গও। লক্ষ্যকে উদ্দেশ্য করে সেটাই গাভাসকর লিখেছেন, ‘ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচে লক্ষ্য প্রথমে এগিয়ে থেকেও হেরেছে। প্রকাশ, বিমল কুমারদের যা করার ছিল করেছেন। কিন্তু যখনই জেতার মুহূর্ত আসা উচিত, তখন একটা কথাই মাথায় আসে, রোহিত শর্মার বলা ‘গার্ডেন মে ঘুমনেওয়ালা’-র মতো অবস্থা লক্ষ্যর। ম্যাচ দেখলেই বোঝা গিয়েছে, লক্ষ্য মনঃসংযোগ হারিয়েছিল। যেভাবে ও চারদিকে তাকাচ্ছিল, জল খাচ্ছিল, সেটা থেকেই বোঝা গিয়েছে। আমি ভুলও হতে পারি। কিন্তু ওর মুখচোখে কোনও অনুভূতিই ছিল না। যার অর্থ ওর মন লক্ষ্য থেকে সরে গিয়েছিল। কোচেরা তো আর মনঃসংযোগ শেখাবেন না। সেটা নিজের ভিতরেই তৈরি করতে হয়।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।