অন্যরা শ্যুটিংয়ের জন্য একেবারে সব স্পেশালাইজড গিয়ার পরে আছেন। কিন্তু তাঁদের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা তুরস্কের ৫১ বছরের শ্যুটার ইউসুফ ডিকেচ সেইসব কিছু পরে নেই। চোখে স্রেফ চশমা পরে পিস্তল তাক করে অলিম্পিক্সে রুপো জিতে চলে গিয়েছেন তুরস্কের শ্যুটার। আর সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ইউসুফের ‘সোয়্যাগ’ দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছেন নেটিজেনরা। ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য মিম। কেউ-কেউ তো বলতে শুরু করেছেন যে অলিম্পিক্সে ‘হিটম্যান’ পাঠিয়েছে তুরস্ক। বাস্তবে অবশ্য ‘হিটম্যান’-র বেশি কিছু ছিলেন তিনি। মিলিটারিতে ছিলেন। তাই তাঁর এরকম ‘সোয়্যাগ’ দেখে অবাক হননি নেটিজেনদের অপর অংশ।
অলিম্পিক্সে রুপো জয় ইউসুফের
২০০৮ সাল থেকে অলিম্পিক্সে নামছেন ইউসুফ। ২০২৪ সালে প্রথমবার অলিম্পিক্সে পদক জিতলেন। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের মিক্সড টিম ইভেন্টে রুপো জেতেন তুরস্কের শ্যুটার। যে ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতেন ভারতের মনু ভাকের এবং সরবজ্যোৎ সিং।
আর সেই ইভেন্টের পরে ইউসুফের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যে ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন নেটিজেনরা। এক নেটিজেন বলেন, 'কোনও স্পেশালাইজড লেন্স, আই কভার বা ইয়ার প্রোটেকশন ছাড়াই ৫১ বছরের এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে দিয়েছে তুরস্ক। উনি রুপো পেয়ে গেলেন।' মজা করে অপর এক নেটিজেন আবার বলেন, ‘আমি একবার দেখেই একজন প্রশিক্ষিত ঘাতককে চিনতে পারি।’
একইসুরে এক নেটিজন বলেন, ‘অবিশ্বাস্য সোয়্যাগ। কোনও স্পেশালাইজড লেন্স, ইয়ার প্রোটেকশন ছাড়াই অলিম্পিক্সে এসেছেন তুরস্কের ৫১ বছরের ইউসুফ ডিকেচ। পকেটে হাত দিয়ে দুটি চোখ খুলে রেখে শ্যুটিং করছেন। আর খেলার ছলে রুপো জিতে চলে গেলেন।’ এক নেটিজেন বলেন, 'তুরস্ক স্রেফ এমন একজনকে পাঠিয়েছে, যাঁকে দেখে মনে হচ্ছে যে মজার ছলে সবে হাতে পিস্তল তুলে নিয়ে অলিম্পিক্সে রুপো জিতলেন।'
একজন বলেন, ‘পুরো সিনেমা থেকে তুলে আনা হয়েছে।’ অপর একজন বলেন, 'দেখে মনে হচ্ছে যে উনি পার্কে হাঁটছিলেন। আর তারপর অলিম্পিক্সে নামার সিদ্ধান্ত নেন।' একজন আবার বলেন, 'আমার মনে হয়, উনি ইচ্ছাকৃতভাবেই সোনা জেতেননি। কারণ সেটা খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে যেত।' এক নেটিজেন বলেন, ‘একটা শেষ কাজ করার জন্য আপনাকে অবসর ভেঙে আসতে হবে। কাকে (মারতে হবে)? কে নয়, বরং কোথায়। অলিম্পিক্সে, ফ্রান্সে। আপনি সবসময় আমাদের সেরা শ্যুটার ছিলেন।’
অনেকেই অবাক নন
এক নেটিজেন বলেন, 'তুরস্কের শ্যুটারের ছবি নিয়ে সকলে মজা করছেন। কিন্তু আমি এখানে ইউসুফ ডিকেচকে নিয়ে কোনও উলটো-পালটা কথা বলব না। উনি আর্মির অবসরপ্রাপ্ত সদস্য। পাঁচবারের অলিম্পিয়ান। একাধিক বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন এবং ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে একাধিক রেকর্ড গড়েছেন। এক দশকের বেশি সময় ধরে উনি বিশ্বের সেরাদের মধ্যে আছেন। উনি সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন।'
অনেকের বক্তব্য, ইউসুফের আচরণে যে এরকম ‘সোয়্যাগ’ ফুটে উঠেছে, সেটার কারণ একটাই - তিনি মিলিটারিতে ছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, তুরস্কের জেন্ডারমেরির নন-কমিশনড অফসার ছিলেন। যা সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে একটি মিলিটারি ফোর্স। আর সেই মিলিটারি সার্ভিসের কারণের শ্যুটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন ইউসুফ। অলিম্পিক্সের সাইটে যে পরিচয় দেওয়া হয়েছে, তাতে ইউসুফ জানিয়েছেন যে তুরস্কের জেন্ডারমেরিতে কাজ শুরু করার পর থেকেই স্পোর্টস হিসেবে শ্যুটিং শুরু করেন।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।