১৮.৫ ওভারে ১১৮ রানের মাথায় তখন পাকিস্তানের ৯ উইকেট পড়ে গিয়েছে। আফগানিস্তান সমর্থকদের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস। আর একটি উইকেট ফেললেই এশিয়া কাপে ফাইনালে ওঠার আশা বেঁচে থাকবে। সেখান থেকে ম্যাচের রং বদলে দেন তরুণ নাসিম শাহ। শেষ ওভারে বল করতে আসেন ফজলহক ফারুকি। যিনি এর আগের ৩ ওভারে বিধ্বংসী বল করে গুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন। কিন্তু সব হিসেবে, ম্যাচের পুরো রং বদলে দিলেন পাকিস্তানের তরুণ নাসিম শাহ।
শেষ ওভারের প্রথম ২ বলেই ফারুকিকে পরপর দু'টি ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচ জিতিয়ে দেন নাসিম। সেই সঙ্গে ফাইনালে উঠে যায় পাকিস্তান। আর টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় ভারত এবং পাকিস্তান।
শেষ ওভারে বাবর আজমদের দরকার ছিল ১১ রান। উইকেটে স্বীকৃত কোনও ব্যাটার ছিল না। নয় উইকেট হারিয়ে চাপে পাক ব্রিগেড। সেই সময়ে নাসিম শাহের লড়াকু মানসিকতার সঙ্গেই বোধহয় এঁটে উঠতে পারলেন না ফারুকি।
আরও পড়ুন: পরপর ২টি ছয় মেরে জেতালেন নাসিম, ফাইনালে পাকিস্তান, আশা শেষ ভারতের
ইনিংসের শেয ওভারের প্রথম বলই সোজা উইকেটের উপর দিয়ে ওভার বাউন্ডারি। পাকিস্তান যেন অক্সিজেন পেল। দ্বিতীয় বল উড়ে গেল গ্যালারিতে। ম্যাচে জিতিয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়লেন নাসিম। ব্যাট ফেলে আনন্দে দৌড়তে থাকেন। কী করবেন তাল পাচ্ছিলেন না তরুণ পেসার। যিনি এ দিন অলরাউন্ডারের ভূমিকাই পালন করলেন। পাকিস্তানকে ফাইনালে তুলে মাঠের মধ্যে আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন নাসিম শাহ। তখন পাক ড্রেসিংরুমে যেন ফিরে এসেছিল শারজায় শেষ বলে জাভেদ মিয়াঁদাদের বিখ্যাত ছক্কার আমেজ।
ম্যাচের শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাবর আজম বলেন, ‘সাজঘরে খুব চাপের মধ্যে ছিলাম। ভাল জুটি তৈরি করতে পারিনি আমরা। শেষ কয়েকটা ম্যাচেও এই সমস্যা হয়েছে। কিন্তু নাসিম যে ভাবে ম্যাচ শেষ করল, এক কথায় দুর্দান্ত। ওর ছয় দেখে শারজায় জাভেদ মিয়াঁদাদের সেই বিখ্যাত ছক্কার কথা মনে পড়ছে।’ এই কথা শুনে সঞ্চালকের ভূমিকায় থাকা রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘সেদিন আমিও ছিলাম, মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!’
আরও পড়ুন: দশে ব্যাট করতে নেমে ২টি ছয় মেরে ম্যাচ জিতিয়ে T20-তে ইতিহাস নাসিমের
প্রসঙ্গত ১৯৮৬ সালের ১৮ এপ্রিল শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেল-এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। একে ফাইনাল তাও আবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা ছিল চরমে। প্রথমে ব্যাট করে ভারত ২৪৫ রান করেছিল। রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের ইনিংসে ধস নামে। তবে একা কুম্ভ হয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে জয়ের জন্য চার রান প্রয়োজন ছিল। চেতন শর্মার শেষ বলে লম্বা ছয় হাঁকান মিয়াঁদাদ। ১ উইকেটে এশিয়া কাপ জেতে পাকিস্তান।
সে বার মিয়াঁদাদের ছয়ের হাত ধরে ফাইনালে ভারতকে হারিয়েছিল পাকিস্তান। আর বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) নাসিমের ছক্কা ভারতকে এশিয়া কাপের ফাইনালে আগেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।