২০২২ এশিয়া কাপে বুধবার পাকিস্তান বনাম আফগানিস্তানের মধ্যে টানটান উত্তেজনার লড়াই চলেছে। তবে শেষ ওভারের থ্রিলারে ম্যাচ বের করে নিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের তরুণ পেসার নাসিম শাহ শেষ ওভারের প্রথম ২ বলে পরপর ২টি ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে এক উইকেটে জয় এনে দেন। সেই সঙ্গে পাক ব্রিগেড পৌঁছে যায় ফাইনালে। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান।
এই ম্যাচটির প্রতি মুহূর্তে উত্তেজনায় ভরা ছিল। শেষ পর্যন্ত কোন টিম জিতবে, কোন দল জিতবে বলা মুশকিল ছিল। মাত্র ১৩০ রানের লক্ষ্য থাকলেও, পাকিস্তানের লড়াই কঠিন করে তোলে আফগানিস্তান বোলাররা। আফগানিস্তার হারের পর অধিনায়ক মহম্মদ নবি স্বীকার করেছেন যে, শেষ মুহূর্তে তাঁর দল স্নায়ু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।
ম্যাচের পর নবি বলেন, ‘ছেলেরা বোলিং এবং ফিল্ডিং খুব ভালো করেছে। কিন্তু আবারও আমরা ভালো ভাবে শেষ করতে পারিনি এবং আমাদের স্নায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। আমরা কোনও পর্যায়ে খেলা ছাড়িনি। ছেলেরা প্রতিটা বলে লড়াই করেছে। তার পর ব্যাট এবং বল সব লড়াই শেষ হয়ে গেল। আমরা ভেবেছিলাম, বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো তাড়া করতে পেরেছি। আমরা জানতাম, এখানে ১৩০ রান তাড়া করা কঠিন হবে, তাই আমরা ডট বল করেছি। আমরা সহজে সিঙ্গেল দিইনি। শেষ দুই বলে স্লো বাউন্সার বা ইয়র্কার করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু ও (ফারুকি) ওর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। শেষ ম্যাচটাও একই শক্তি নিয়ে খেলার চেষ্টা করব। আমাদের সমর্থনের জন্য ভক্তদের ধন্যবাদ।’
আরও পড়ুন: লড়াই করেও হার, মানতে পারছেন না, মাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন আফগানরা
বুধবারের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টসে জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল পাকিস্তান। পাক বোলারদের দাপটে মাত্র ১২৯ রানেই শেষ হয়ে যায় আফগানদের ইনিংস।
নির্দিষ্টি ২০ ওভারে আফগানিস্তান ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২৯ রান করতে পারে। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ রান ইব্রাহিম জাদরানের। তিনি ৩৭ বলে ৩৫ রান করেন। ওপেন করতে নেমে ১৭ বলে ২১ করেছেন হাজরাতুল্লাহ জাজাই। এর বাইরে কেউ ২০ রানের গণ্ডি টপকাতে পারেননি। ১১ বলে ১৭ করেছেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। ১৯ বলে ১৫ করেছেন করিম জানাত। রশিদ খান ১৫ বলে ১৮ করে অপরাজিত ছিলেন।
এ দিকে পাকিস্তানের নাসিম শাহের ১ উইকেট ছাড়াও ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মহম্মদ হাসনাইন, মহম্মদ নওয়াজ এবং শাদাব খান। একমাত্র হরিশ রউফ ২ উইকেট তুলে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মিয়াঁদাদের সেই বিখ্যাত ছক্কার কথা মনে পড়ছে- নাসিমকে নিয়ে ঘোরে বাবর
রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানও যে সহজে ম্যাচ জিতেছে, এমনটা নয়। শুরু থেকেই আফগান বোলারদের পাল্টা দাপটে পাক ব্যাটিং অর্ডারও কেঁপে ওঠে। দলের ১ রানের মাথায় বাবর আজম গোল্ডেন ডাক করে সাজঘরে ফেরেন। ফজলহক ফারুকির বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। বাকি ব্যাটারদের অবস্থাও তথৈবচ। ৪৫ রানের মধ্যেই পাকিস্তানের ৩ উইকেট পড়ে যায়। তার পরেও অবশ্য উইকেট পড়ার রেশ থামেনি পাক ব্রিগেডের। তারা পরপর উইকেট হারাতে থাকে। ১৮.৫ ওভারে ১১৮ রানে পাকিস্তানের ৯ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে ম্যাচের রং বদলে দেন তরুণ নাসিম শাহ।
১৯তম ওভারের প্রথম ২ বলে ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন নাসিম শাহ। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন শাদাব খান। ২৬ বলে ৩৬ করেন তিনি। ৩৩ বলে ৩০ করেন ইফতিকার আহমেদ। এ ছাড়া ২৬ বলে ২০ করেছেন মহম্মদ রিজওয়ান।৮ বলে ১৬ করেছেন আসিফ আলি। শেষে ৪ বলে ১৪ রান করে বাজিমাত করেন নাসিম শাহ।
আফগানিস্তানের ফারুকি এবং ফরেদ আহমদ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। রশিদ খান ২টি উইকেট নিয়েছেন। তবু শেষরক্ষা করতে পারল না আফগানরা। ৪ বলে বাকি থাকতে ১ উইকেটে জিতে ফাইনালে পৌঁছে গেল পাকিস্তান। ছিটকে গেল আফগানিস্তান এবং ভারত। ফাইনালে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। পরের ২টি সুপার ফোরের ম্যাচ অর্থাৎ ভারত-আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান নেহাৎই নিয়মরক্ষার হয়ে গেল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।