টি-২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বোধহয় সংক্ষিপ্ত ফর্ম্যাটের হ্যাংওভার এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কেননা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শুরুতেই যেরকম ব্য়াটিং তাণ্ডব চালালেন দুই ব্রিটিশ ওপেনার, তাতে টেস্ট না টি-২০, কোন ফর্ম্যাটে খেলা হচ্ছে সেটা বুঝে ওঠাই ছিল মুশকিল।
পিচের সম্ভাব্য গতিবিধি আঁচ করতে অসুবিধা হয়নি ইংল্যান্ড দলনায়ক বেন স্টোকসের। তিনি টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং নিতে দু'বার ভাবেননি। ক্যাপ্টেনের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণিত করতে যে এভাবে উঠেপড়ে লাগবেন জ্যাক ক্রাউলি ও বেন ডাকেট, তা আগে থেকে অনুমান করা সম্ভব ছিল না।
টেস্টের প্রথম দিনে পাকিস্তানের শক্তিশালী পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে সতর্ক হয়ে ব্যাট করার বদলে একেবারে প্রথম ওভার থেকে তাণ্ডবলীলা শুরু করেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার। তাঁরা প্রথম ঘণ্টায় খুচরো রান নিয়ে প্রান্ত বদল করার কথাও ভাবেননি। বদলে চার ও দুই রানেই ডিল করার পথে হাঁটেন।
প্রথম ওভারের ৬টি বল খেলে ১৪ রান সংগ্রহ করেন ক্রাউলি। দ্বিতীয় ওভারের ৬টি বল খেলে ৬ রান সংগ্রহ করেন ডাকেট। তৃতীয় ওভারের ৬টি বল খেলেন ক্রাউলি এবং ২ রান জোড়েন নিজের ও দলের খাতায়। চতুর্থ ওভারের ৬টি বলের মোকাবিলা করেন ডাকেট। এভাবে টানা ৭ ওভার দুই ব্যাটসম্যান প্রান্ত বদল করেননি। তাঁরা হয় চার মারেন, না হয় ২ রান নেন। শেষমেশ ৭.৩ ওভারে ম্যাচে প্রথমবার সিঙ্গল নেন ডাকেট।
মাত্র ১৩.৪ ওভারে দলগত ১০০ রানের গণ্ডি টপকে যায় ইংল্যান্ড, যা কোনও টেস্ট ম্যাচের একেবারে শুরুতে দ্রুততম ১০০ রানের দলগত রেকর্ড। অর্থাৎ, ম্যাচের প্রথম ঘণ্টাতেই টেস্টের ইতিহাসে একটি সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে বসে ইংল্যান্ড।
তারা দ্বিতীয় ঘণ্টায় আরও একটি রেকর্ড গড়ে। লাঞ্চের আগে ইংল্যান্ড ২৭ ওভার ব্যাট করে কোনও উইকেট না হারিয়ে ১৭৪ রান সংগ্রহ করে। যতদিন টেস্ট ক্রিকেটে পরিসংখ্যানের হিসাব-নিকাশ রাখা হচ্ছে, ততদিনে কোনও ম্যাচের প্রথম সেশনে এত রান ওঠেনি কখনও। অর্থাৎ, কোনও টেস্টে ম্যাচের প্রথম সেশনে জুটিতে সব থেকে বেশি রান করার রেকর্ডও গড়ে ফেলেন দুই ব্রিটিশ ওপেনার।
জ্যাক ক্রাউলি শেষমেশ ২১টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১১১ বলে ১২২ রান করে আউট হন। বেন ডাকেট ১৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১১০ বলে ১০৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন।