কুঁড়েঘরের অন্ধকার থেকে আলোর পথযাত্রী হওয়াটা সহজ ছিল না। প্রতি মুহূর্তের সংঘর্ষটা বেশ কঠিনই ছিল। কিন্তু সেই কুঁড়েঘরে থেকেই টোকিও অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যভেদ করেছেন প্রবীণ যাদব। মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার দিনমজুরের ছেলের অলিম্পিক্সের ছাড়পত্র অর্জনের গল্পটা অনেকটাই রূপকথার মতোই। আর তীরন্দাজ প্রবীণের এই লড়াইয়ে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। রবিবার ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানে প্রবীণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, ‘মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার প্রবীণ যাদব অসাধারণ তীরন্দাজ। ওঁর বাবা-মা দিনমজুরের কাজ করেন। যাদব প্রথমবার অলিম্পিক্সে অংশ গ্রহণ করতে চলেছেন।’
প্রবীণের বাবা রমেশ যাদব এবং মা সঙ্গীতা যাদব পেশায় দিনমজুর। ভাঙাচোরা ছোট্ট কুঁড়েঘরে থেকেই অলিম্পিক্সের স্বপ্নে শান দিয়েছেন ২৪ বছরের প্রবীণ। এ বার তাঁর সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এখন পদক জয়ের অপেক্ষা।
শুরুটা অবশ্য অ্যাথলেটিক্সের হাত ধরেই করেছিলেন প্রবীণ। এমন কী আট বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় দৌড়ে অংশ নিতেন। খেলাধূলার প্রতি তাঁর এই আগ্রহ দেখে পাশে দাঁড়ান সারাডের জেলা পরিষদ বিদ্যালয়ের ক্রীড়াশিক্ষক বিকাশ ভুজবল। তাঁর উৎসাহেই প্রথম দিকে বছর চারেক বিভিন্ন জেলা প্রতিযোগিতায় দৌড় এবং লং জাম্পে অংশ নিতে শুরু করেন প্রবীণ। নিজের খরচে প্রবীণকে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে পাঠাতেন বিকাশ ভুজবল। এমন কী কখনও কখনও নিজেই বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যেতেন প্রবীণকে। প্রয়োজনে নিজের বাড়িতেও রাখতেন।
সেই সময়ে কিন্তু প্রবীণের তীরন্দাজি নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না। তবে ১২ বছর বয়সে যখন তিনি আহমেদনগর জেলার প্রভরানগরের ক্রীড়া প্রবোধিনীতে সুযোগ পান, তখন প্রবীণ তিরন্দাজিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এবং সেখান থেকেই তাঁর নতুন পথচলা শুরু হয়। ২০০৯ থেকেই লক্ষ্যভেদের নেশায় মত্ত হয়ে উঠেছিলেন প্রবীণ। সেই সময় থেকে নতুন লড়াই শুরু হয়েছিল। এ বার যদি অলিম্পিক্সে পদক পান, তা হলে বোধহয় তাঁর এই লড়াই পূর্ণতা পাবে।