আইসিসি-র বর্ষসেরা টেস্ট দলে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার আধিপত্য। ভারত থেকে মাত্র একজন ক্রিকেটারই সুযোগ পেয়েছেন। শিবরাত্রির সলতের মতো জ্বলছেন পন্ত। পাকিস্তান থেকে রয়েছেন একমাত্র বাবর আজম। এই দলের অধিনায়ক করা হয়েছে বেন স্টোকসকে।
দেখে নিন ১১ জন প্লেয়ারের তালিকা:
১. উসমান খোয়াজা– অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট একাদশে উসমান খোয়াজার প্রত্যাবর্তন দুরন্ত হয়েছে। তিনি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন। প্রথমটিতে ১৩৭ এবং দ্বিতীয়টিতে অপরাজিত ১০১। অস্ট্রেলিয়া কেবলমাত্র সিডনিতে চতুর্থ অ্যাশেজ টেস্ট ড্র করেছিল। কিন্তু খোয়াজার রানের পরিসংখ্যা তাঁকে ২০২২ সালে সেরাদের মধ্যে জায়গা করে দিয়েছে।
বাঁ-হাতি তারকা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মোট ৪৯৬ রান করেছিলেন। ২০২২ সালে তিনি আরও তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। ৬৭.৫০ গড়ে মোট ১০৮০ রান করে বছর শেষ করেন খোয়াজা।
২. ক্রেগ ব্রেথওয়েট– ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন। পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল।
ব্রেথওয়েট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই টেস্টের প্রতিটিতে একটি করে হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৬০ রান করেন। জুনে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেন। দুই টেস্টের প্রথম ইনিংসে তারকা ব্যাটার ৯৪ এবং ৫১ রান করেছিলেন এবং তার পরে নভেম্বরে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ১৭৪ রান করেন। এ ছাড়াও রয়েছে একটি ১১০ রানের ইনিংস। গোটা বছরে ১৪টি ইনিংসে ৬২.৪৫ গড়ে মোট 687 রান করেছেন।
আরও পড়ুন: আমার কোনও ধারণা নেই- হার্দিকের আশায় কার্যত জল ঢেলে দিলেন রাহুল দ্রাবিড়
৩. মার্নাস ল্যাবুসেন– অস্ট্রেলিয়া
অজি তারকা দুরন্ত ছন্দে ছিলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৯০ রান করেছিলেন। যা সেই সিরিজে তাঁর সর্বোচ্চ স্কোর। এবং তিনি জুলাইয়ে গালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০৪ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাত্র চারটি ইনিংসে অসাধারণ ৫০২ রান করেন। সারা বছরে তাঁর মোট সংগ্রহ ৯৫৭ রান। গড় ৫৬.২৯।
৪. বাবর আজম– পাকিস্তান
পাকিস্তানের টেস্ট অধিনায়ক ২০২২-এ ব্যাট হাতে ধারাবাহিক ভাবে সাফল্য পেয়েছেন। এই ক্যালেন্ডার বছরে চারটি সেঞ্চুরি এবং সাতটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর। ন'টি ম্যাচে তিনি ৬৯.৯৪ গড়ে ১১৮৪ রান করেছেন বাবর। যে চারটি দেশের বিরুদ্ধে তিনি টেস্ট খেলেছেন, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছেন।
৫. জনি বেয়ারস্টো– ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টো তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা বছর উপভোগ করেছেন। এমন কী পা ভাঙ্গার কারণে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে পারেননি। তবে তিনি সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি দিয়ে বছর শুরু করেছিলেন এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত ১৪০ রান করেছিলেন।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংস থেকে শুরু করে এজবাস্টনে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত বেয়ারস্টোর সংগ্রহ যথাক্রমে ১৩৬, ১৬২, অপরাজিত ৭১, ১০৬ এবং অপরাজিত ১১৪।
আরও পড়ুন: কোহলির T20 ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন মাঝপথে থামিয়ে অবাক করা জবাব দ্রাবিড়ের- ভিডিয়ো
৬. বেন স্টোকস– ইংল্যান্ড
২০২২ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছেন বেন স্টোকসও। শুধু প্লেয়ার হিসেবেই নন, স্টোকসের অধিনায়কত্ব ইংল্যান্ডকে বদলে দিয়েছে। ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ন'টি ম্যাচ জিতেছে ব্রিটিশরা।
ব্যাট এবং বল দু'টোতেই সাবলীল স্টোকস। স্টোকস সারা বছর ছয় নম্বরে ব্যাট করে ৩৬.২৫ গড়ে দুটি সেঞ্চুরি সহ ৮৭০ রান করেছেন। এবং মোট ২৬টি উইকেট নিয়েছেন।দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ে তার বোলিং বিশেষ ভাবে নজর কেড়েছিল। তিনি মাত্র ১৫.৭০ গড়ে ১০ উইকেট নিয়েছেন।
৭. ঋষভ পন্ত– ভারত
ভারতের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ব্যাট হাতে একটি চমকপ্রদ বছর উপভোগ করেছেন। ১২ ইনিংসে ৬১.৮১ গড়ে এবং ৯০.৯০ স্ট্রাইক রেটে ৬৮০ রান করেছেন। দু'টি সেঞ্চুরি এবং চারটি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর। টেস্টেও তিনি ছিলেন বিধ্বংসী মেজাজে। ২০২২ সালে টেস্টে মোট ২১টি ছক্কা মেরেছেন পন্ত। এবং কিপার হিসেবে ছ'টি স্টাম্পিং করার পাশাপাশি ২৩টি ক্যাচ নিয়েছিলেন।
৮. প্যাট কামিন্স– অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক তাঁর দলকে ২০২২ সালের শেষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষে নিয়ে যান। কামিন্সের নেতৃত্বে সারা বছর জুড়েই অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিল অজিদের। পাশাপাশি ২০২২ সালে ১০টি ম্যাচে কামিন্স মাত্র ২১.৮৩ গড়ে ৩৬টি উইকেট নিয়েছেন।
৯. কাগিসো রাবাডা– দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার আক্রমণভাগের নেতা বল হাতে একটি উত্তেজনাপূর্ণ বছর উপভোগ করেছেন। রাবাডা ২০২২ জুড়ে ন'টি ম্যাচে ৪৭টি উইকেট নিয়েছিলেন, মাত্র ২২.২৫ গড়ে।
১০. নাথান লিয়ন– অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার ফ্রন্ট-লাইন স্পিনার ২০২২ সালে ছিলেন দুরন্ত ছন্দে। সারা বছরে তিনি ৫০০ ওভারের বেশি বোলিং করেছেন। লিয়ন মোট ১১টি টেস্টে ২০.০৬ গড়ে ৪৭টি উইকেট নিয়েছেন। তিনি হোম এবং অ্যাওয়ে-দুই ক্ষেত্রেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন।
১১. জেমস অ্যান্ডারসন– ইংল্যান্ড
বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ সুইং বোলার বিশ্বমানের পারফরম্যান্স করে চলেছেন। ২০২২ সালে অ্যান্ডারসনের ৪০ হয়ে গিয়েছে। তবু এখনও বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে কার্যকর বোলারদের একজন। তিনি সারা বছরে ৯টি টেস্টে মাত্র ১৯.৮ গড়ে এবং ২.৪২ ইকোনমিতে ৩৬টি উইকেট নিয়েছেন।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।