শুভব্রত মুখার্জি: ভারতীয় সিনিয়র দলের সাম্প্রতিক অতীতে অন্যতম সফলতম কোচের নাম স্টিফেন কনস্টানটাইন। ভারতীয় ফুটবলের জুনিয়র লেভেল থেকে সিনিয়র লেভেল, স্থানীয় ফুটবলের পরিকাঠামো, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সবটাই নিজের হাতের তালুর মতো চেনেন প্রাক্তন ব্রিটিশ কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন। বলা ভাল তার আমলেই সাম্প্রতিক অতীতে ভারত ফিফা রাঙ্কিংয়ে ক্রমতালিকায় প্রথম ১০০ তে প্রবেশ করেছিল। স্টিফেনের আমলেই ফুটবলার হিসেবে বিকশিত হয়েছেন সুনীল ছেত্রী। বাইচুং ভুটিয়া পরবর্তী অধ্যায়ে হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় ফুটবলের 'ব্লু আইড বয়'। নিজের প্রাক্তন ছাত্র সুনীল সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কার্যত বিস্ফোরক দাবি করে বসেছেন স্টিফেন। তার মতে ২০১৯ সালের এএফসি এশিয়ান কাপের পরেই অবসর নিয়ে নেওয়া উচিত ছিল সুনীলের।
সম্প্রতি নিউজ ৯'কে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সেখানেই সুনীল ছেত্রীর প্রসঙ্গ ওঠাতে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন স্টিফেন কনস্টানটাইন। উল্লেখ্য ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দুটি ভাগে কাজ করেছেন তিনি। ২০০২-০৫ এবং ২০১৫-১৯ তিনি জাতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ৩৭ বছর বয়সেও সুনীল ভারতের সেরা গোল 'গেটার'। তার ক্যারিয়ারও প্রায় শেষের পথে। তাহলে কি এই ঘটনায় সমস্যায় পড়তে পারে ভারতীয় ফুটবল দল?
প্রশ্নের জবাবে বেশ কৌশল করে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন স্টিফেন কনস্টানটাইন। তিনি বলেন 'এটা সুনীলের সিদ্ধান্ত সুনীল কখন খেলাটা চালিয়ে যাবে আর কখন থামাবে। তবে আমি মনে করি ২০১৯ সালে এশিয়ান কাপের পরেই ওর থেমে যাওয়া উচিত ছিল। তুমি যখন খেলাটার শীর্ষে রয়েছ তখন তোমার অবসর নেওয়া উচিত। তাতে করে লোকে তোমার অবদানকে আরও বেশি করে মনে রাখে। ৩৭ বছর বয়সের একজন ফুটবলার ২৭ বছর বয়সের একজন ফুটবলারের খুব কম সময়েই সমান হতে পারে। এটা নিয়ে সে (সুনীল) এবং তার ক্লাব (বেঙ্গালুরু ঊফসি) সিদ্ধান্ত নেবে।'
তিনি আরও যোগ করে বলেন 'প্রতিটা ক্লাব সাধারণভাবে দুজন বিদেশিকে ফরোয়ার্ড হিসেবে নিয়ে আসে। এটা সমস্যার। আমি এর বিরুদ্ধে বহুবার বলেছি। এটা ভারতীয় জাতীয় দলকে প্রভাবিত করে। আমরা বিকল্প বার করারও চেষ্টা করেছি। জেজে (লালপেখলুয়া) খুব ভাল ছিল। ফারুখ (চৌধুরী) যদি ধারাবাহিখভাবে খেলতে পারে তবে স্ট্রাইকার হিসেবে ওর উন্নতি হবে। মনবীরকেও দেখুন যখন ওকে আমরা তুলেছি তখন পঞ্জাবের কোন প্রথম সারির ক্লাবের হয়েও খেলত না। আমাদের স্ট্রাইকার রয়েছে। তবে তাদেরকে আমরা তৈরি করি না। এই ঘটনা আমাদেরকে কোচের শিক্ষাতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ২০২২ সালে দাড়িয়ে একজন ১৬-১৮ বছর বয়সি ভারতীয় আর ১৬-১৮ বছর বয়সি ইংল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলছর খেলোয়াড়দের মধ্যে পার্থক্য থাকার কথা নয়। ভারতীয় ফুটবলারদের ফাউন্ডেশনটাই যদি ঠিক না হয় তবে সমস্যা রয়েছে।'