শুভব্রত মুখার্জি: এতদিন ক্রিকেট বিশ্ব সাক্ষী থেকেছে তার বল হাতে বিপক্ষকে ধরাশায়ীর করার। দীর্ঘদিন পরে এবার ব্যাট হাতে ২২ গজে যেন ঝড় তুললেন উইন্ডিজ অলরাউন্ডার সুনীল নারিন। আর সেই ঝড়ে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। উল্লেখ্য চলতি আসরের শুরু থেকেই নানা বিতর্কে জর্জরিত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সেই ফ্রাঞ্চাইজি দল যে এমন আবহে দাঁড়িয়ে প্লে অফে যেতে পারে সেটাই অনেকের কাছে ছিল বিস্ময়কর। তবে প্লে অফে পৌঁছলেও ফাইনালে যাওয়া হল না তাদের। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারেই তাদের বিপিএল অভিযান শেষ হল। ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
আজ অর্থাৎ মিরপুর শের-এ-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি সাক্ষী থাকল সুনীল নারিনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের। ঘটনাচক্রে নারিনের এই অর্ধশতরানের ইনিংস বিপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম। এই ইনিংসে ভর করেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স জিতল ৭ উইকেটের ব্যবধানে। হাতে ৪৩ বল হাতে রেখছ এক অনায়াস জয় পেল তারা! ফলে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশালের।
এদিন বল হাতে মইন আলী, শাহিদুলরা চট্টগ্রামকে চেপে ধরেন প্রথম থেকেই। দ্রুততম অর্ধশতরান করেন ম্যাচসেরা সুনীল নারিন। রান তাড়ায় নেমে শরিফুল ইসলামের প্রথম বলেই 'গোল্ডেন ডাক' করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন লিটন দাস। অপর ওপেনার সুনীল নারিন এরপর ব্যাট হাতে তার ধ্বংসাত্মক রূপ ধারণ করেন। মাত্র ১৩ বলে ক্যারিয়ারের ১০ম ফিফটি সম্পন্ন করেন এই ক্যারিবীয়। যা বিপিএলের ইতিহাসের দ্রুততম অর্ধশতরান। বিপিএলে দ্রুততম অর্ধশতরানের আগের রেকর্ডটি ছিল আহমেদ শেহজাদের। প্রথম বিপিএলের সেমিফাইনালে বরিশাল বার্নাসের হয়ে রাজশাহীর বিপক্ষে মাত্র ১৬ বলে পঞ্চাশ তুলে নিয়েছিলেন পাকিস্তানি ব্যাটার। আন্তর্জাতিক টি-২০ তে দ্রুততম পঞ্চাশের মালিক যুবরাজ সিং (১২ বলে)।
মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বলে যখন আউট হলেন নারিন তার আগে ১৬ বলে ৫টি চার এবং ৬ টি ছক্কায় সাজিয়েছেন তার ৫৭ রানের ইনিংসকে। ইমরুল ২৪ বলে ২২ রান করেন। চারে নেমে ফাফ ডুপ্লেসি এবং পরবর্তীতে মইন আলির জুটি ম্যাচ জয় সম্পন্ন করেন তাদের ২৭ বলে ৫৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটির মধ্যে দিয়ে। ফলে ৭ উইকেট এবং ৪৩ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ডু প্লেসি ২৩ বলে ৩০ এবং আলি ১৩ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন।
মিরপুরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৮ রানে অল-আউট হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। উইল জ্যাকস এবং জাকির হোসেন তাদের হয়ে শুরুটা ভাল করেন। শাহিদুলের বলে উইল জ্যাকস সংগ্রহ ৯ বলে ১৬ রান করে আউট হন। এরপরে হঠাৎ করেই ধস নামে চট্টগ্রামের ইনিংসে। ১২ রানের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ৪ ব্যাটার। চ্যাডউইক ওয়ালটন (২), জাকির হোসেন (২০), শামীম হোসেনকে (০) হারিয়ে চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারের পরপর দুই বলে শেষ দুই ব্যাটারকে ফেরান আলি।
৪৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দলকে খাদের কিনারা থেকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা শুরু করেন অধিনায়ক আফিফ হোসেন ও মেহেদি মিরাজ। ১০ বলে ১০ রান করে আফিফ হোসেন আউট হন। ৫০ রানে পড়ে যায় ৫ উইকেট। এই সময়তে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন আকবর আলী এবং মিরাজ। ৪০ বলে ৬১ রানের চমৎকার এই জুটি গড়েন দু'জনে। আবু হায়দারের বলে আকবরের ২০ বলে ৩৩ করে আউট হন। বেনি হাওয়েল রান-আউট হয়ে যান ৩ রানে। ৩৮ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় চট্টগ্রামের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন মিরাজ। পরবর্তীতে ১৪৮ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন মইন আলি এবং শাহিদুল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।