ফাইনাল হলেই যেন চলতি মরশুমে জ্বলে উঠছেন সরফরাজ খান। শনিবার হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে সরফরাজের অপরাজিত ৩৬ রানের সৌজন্যে প্রথমবার সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি জিতল মুম্বই। সেইসঙ্গে ৩৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার।
প্রবল চাপের মধ্যে সরফরাজ জেতালেও শনিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে সৈয়দ মুস্তাকের প্রথম ভাগটা শাসন করেন অজিঙ্কা রাহানেরা। ফাইনালে দ্বিতীয় ওভারেই হিমাচলকে ধাক্কা দেন মোহিত আওয়াস্তি। তারপর হিমাচলের চাপ আরও বাড়িয়ে দেন তনুশ কোটিয়ান। অষ্টম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নেন মুম্বইয়ের স্পিনার। একটা সময় ৯.৪ ওভারে হিমাচলের স্কোর দাঁড়ায় ছয় উইকেটে ৫৮ রান।
সেই ধাক্কা থেকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ঋষি ধাওয়ানদের হিমাচল। তবে কিছুটা লড়াই করেন একান্ত সেন এবং আকাশ বশিস্ত। দু'জনের জুটিতে ৪৬ বলে ৬০ রান ওঠে। ২৯ বলে ৩৭ রান করেন একান্ত। বশিস্ত ২২ বলে ২৫ রান করেন। শেষের দিকে মায়াঙ্ক ডাগরের ১২ বলে ২১ রানের সৌজন্যে নির্ধারিত ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪৩ রান তোলে হিমাচল। চার ওভারে ২১ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন মোহিত। ১৫ রানে তিনটি উইকেট পান তনুশ। আমন খান এবং শিবম দুবে একটি করে উইকেট নেন।
ফাইনালের প্রথম ভাগে মুম্বই দাপট দেখালেও ব্যাট করতে নেমে ধাক্কা যায় রাহানেরা। দ্বিতীয় ওভারেই মুম্বইয়ের বিধ্বংসী ওপেনার পৃথ্বী শ'কে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠিয়ে দেন হিমাচলের অধিনায়ক ঋষি। ফাইনালে আট বলে ১১ রান করেন পৃথ্বী। যিনি সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশ সফরের জন্য ভারতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ার পর ইঙ্গিতবাহী পোস্ট করেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে ব্যাটে রান নেই। সেমিফাইনালে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ব্যর্থ হন ফাইনালেও।
পৃথ্বী দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ার ইডেনের ২২ গজে বেশিক্ষণ কাটাননি মুম্বইয়ের অধিনায়ক রাহানে। পাঁচ বলে এক রান করে ড্রেসিংরুমের দিকে পাড়ি দেন তিনি। সেই ধাক্কা সামলে মুম্বইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন যশস্বী জয়সওয়াল এবং শ্রেয়স। তৃতীয় উইকেটে দু'জনের জুটিতে ৩৪ বলে ৪১ রান ওঠে। তবে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি হিমাচল। বরং মুম্বই যখন ১০০ রানের দোরগোড়ায় ছিল, তখন মুম্বইকে জোরদার ধাক্কা দেন বৈভব অরোরা।
আরও পড়ুন: KKR আমি ছাড়িনি, বরং ওরা আমাকে ধরে রাখেনি- ইডেনে বসেই ক্ষোভ উগড়ালেন শুভমন
তারপরই ধস নামে মুম্বইয়ের ইনিংসে। তিন উইকেটে ৯৬ রান থেকে মুম্বইয়ের স্কোর দাঁড়ায় সাত উইকেটে ১১৯ রান। বিশেষত ১৭ তম ঋষির চালে ধুঁকতে থাকে মুম্বই। শেষের জন্য বৈভবকে ধরে না রেখে ওই ওভারেই পেসারকে আক্রমণে আনেন হিমাচলের অধিনায়ক। শিবম দুবে এবং আমন খানকে আউট করে অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা রাখেন বৈভব। পরের ওভারেই আউট হয়ে শামস মুলানি।
সেই পরিস্থিতিতে প্রবল চাপে পড়ে যায় মুম্বই। শেষ দু'ওভারে ২৩ রান বাকি ছিল। হাতে ছিল তিন উইকেট। কিন্তু ১৯ তম ওভারে ম্যাচটা হাতছাড়া করে আসেন কেডি সিং। সেই ওভারেই খেলা শেষ করে দেন সরফরাজ। দুটি চার এবং ছক্কা হাঁকান। শেষ ওভারে বাকি কাজটা করেন দেন তনুশ। ছক্কা মেরে মুম্বইকে জেতান। পাঁচ বলে নয় রানে অপরাজিত থাকেন। ৩১ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন সরফরাজ। যিনি রঞ্জি ট্রফি এবং ইরানি ট্রফির ফাইনালে শতরান করেছিলেন।