চাপ দিয়ে চুক্তিপত্রে সই করানো যাবেনা। জানিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতি। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা জানিয়েছিলেন মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছেন লাল হলুদে সাবেকি কর্তারা। তারা যে কোন প্রকারে শ্রী সিমেন্ট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে মানাতে চাইছেন। কিন্তু এরপরেই খবর আসে বিশেষ কর্মসমিতির বৈঠকে বসছেন লাল হলুদ কর্তারা। সূত্রের খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যদি কোনও ভাবে চাপ দিয়ে যদি চুক্তিপত্রে সই করানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে কর্মসমিতির সকল সদস্য একসঙ্গে পদত্যাগ করবেন।
এদিকে শ্রী সিমেন্ট কতৃপক্ষও নিজেদের পথ বেছে নিয়েছেন। এবার তাঁরা সমস্ত লড়াইয়ের শেষ দেখতে চান। তাঁরা আর কোনও অর্থ ক্লাবের জন্য খরচ করতে চাইছেন না। তাদের দাবী আগে চুক্তিপত্রে সই হবে তারপর বাকি কথা। এদিকে চুক্তিপত্রের বেশকিছু বিষয় নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে ক্লাব কর্তাদের। তাঁরা সেই বিষয়ে পরিস্কার না হয়ে পরবর্তি পদক্ষেপ নিতে চাননা। কে ঠিক কে ভুল এর মাঝেই টার্মশিটের কাগজ সোশ্যাল মাধ্যমে প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে।
টার্মশিটে শ্রী সিমেন্টের পক্ষ থেকে সাতটা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। ১) সব ধরণের খেলা এবং তার প্রমোশনের ক্ষেত্রে ক্লাব ও শ্রী সিমেন্টের ‘যুগ্মভাবে’ কাজ করবে। ২) ইস্টবেঙ্গল ব্র্যান্ডকে ব্যবহার করার পূর্ণ চুক্তি থাকবে। লোগো, নাম, রং থেকে শুরু করে ক্লাবের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল মানে ওয়েবসাইট, টুইটার, ফেসবুক ব্যবহারের পূর্ণ অধিকার থাকবে ইনভেস্টরের। ৩) ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের যাবতীয় সম্পত্তি, সত্ত্বাধিকার, স্টেডিয়াম, অফিস, ক্লাব তাঁবু, অ্যাকাডেমির আবাসন, চুক্তির পর থেকে নতুন কোম্পানির আওতায় আসবে। ৪) ফুটবল টিম সহ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের যাবতীয় পুরনো বকেয়া মেটানোর দায় শুধু ক্লাবেরই। এর সঙ্গে শ্রী সিমেন্ট বা নতুন কোম্পানি জড়িত থাকবে না। ৫) চুক্তির মধ্যে থাকাকালীন ইস্টবেঙ্গল ক্লাব যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে শ্রী সিমেন্টের। প্রয়োজন পড়লে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের যে কোনও সম্পত্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বোর্ডের অনুমতি নিতে হতে পারে। ৬) চুক্তিবদ্ধ থাকাকালীন ফুটবল সংক্রান্ত বা অন্যান্য কোনও বিষয়ে কাউকে কোনও সত্ত্বাধিকার দেওয়ার আগে বোর্ডের অনুমতি নিতে হবে। ৭) শ্রী সিমেন্ট যে কোনও পরিস্থিতিতে চুক্তি বাতিল করতে পারে। তার জন্য ৯০ দিনের নোটিশ দেবে তারা।
কোনও মতেই এই চুক্তি পত্র সই করতে চাইছেননা ক্লাবের কর্তারা। মঙ্গলবার এই বিষয় নিয়ে ক্লাব তাঁবুতে বিশেষ কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়। যেখানে চুক্তিপত্রে সই-এর বিষয়টি তুলে ধরা হয়। ক্লাবের কর্মসিমিতির সকল সদস্য জানিয়েছেন কেউ যদি চাপ দিয়ে এই চুক্তিপত্রে সই করতে বলে তাহলে কর্মসমিতির সকল সদস্য একসঙ্গে পদত্যাগ করবে। এই নিয়ে সহমত জানিয়েছেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ মজুমদার। ক্লাবের সভাপতি প্রণব দাশগুপ্ত জানিয়েছেন তিনি এখনই কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
ক্লাবও পাল্টা কয়েকটা বিষয়ে নিয়ে শ্রী সিমেন্টের সামনে তাদের আপত্তি তুলে ধরেছে। ১) চুক্তিতে স্পষ্ট ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ও শ্রী সিমেন্ট যৌথভাবে খেলাধুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবে না, যৌথ উদ্যোগের কথা বলা হলেও আসলে দুটো পার্টি এক হয়ে কাজ করার কথা ভাবছে। এই ‘যৌথ উদ্যোগ’কে যেন পুরোপুরি মর্যাদা দেওয়া হয়। ২) ক্লাবের যাবতীয় সম্পত্তি, শুধুমাত্র ইস্টবেঙ্গল ক্লাবেরই। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ক্লাব তাঁবু, ক্লাবের স্পোর্টিং রাইটস চুক্তির আওতায় আসবে। কিন্তু আশ্চর্যের হল, ‘কনভেন্স’ বা হস্তান্তর শব্দটা ব্যবহার করা হয়নি টার্মশিটে। এটা ছাড়া কোনও ভাবেই চুক্তিতে সই করা সম্ভব নয় ক্লাবের পক্ষে। ৩) ২০ শতাংশ শেয়ারের কমে কোনও ভাবেই ক্লাব রাজি নয়। ৪) ক্লাব তাঁবু ও অন্যান্য পরিকাঠামো ব্যবহারের অধিকার সব সময় থাকবে ক্লাবের। ক্লাব তাঁবু বা অন্যান্য পরিকাঠামো ব্যবহারের জন্য ক্লাবের কোনও অনুমতির দরকার নেই। খেলা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও ক্লাবের আরও অনেক ভূমিকা রয়েছে। সেগুলো যথাযথ পালনের জন্য এই অধিকার সব সময় থাকবে ক্লাবের।
চুক্তি নিয়ে টালবাহানা আর মানতে চাইছে না শ্রী সিমেন্ট। কর্ণধার হরিমোহন বাঙুর স্পষ্ট বলেছেন, ‘এমন চলতে থাকলে ইস্টবেঙ্গলে আর থাকব না আমরা।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।