ক্যানসারে স্বামী প্রয়াত হয়েছে। তার পর একটি ছেলেকে সাপের কামড়ে হারানোর পর তাঁকে ডাইনি বলা হতো। তার পর মেয়ে অর্চনাকে ভুল পথে পাঠানোর জন্য আত্মীয়রা সাবিত্রী দেবীকে দোষারোপ করেছিলেন। নানা ভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল সাবিত্রী দেবীকে। কিন্তু রবিবারের পর থেকে সাবিত্রী দেবীর জীবনের ছবিটাই যেন একেবারে বদলে গিয়েছে।
রবিবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ফাইনালে সাবিত্রীর মেয়ে অর্চনা ইংল্যান্ডের ইনিংসের শুরুতেই গ্রেস স্ক্রাইভেনস এবং নিয়াম হল্যান্ডের উইকেট নিয়ে শুরুতে ইংল্যান্ডের কোমর ভেঙে দেন। যা ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আরও পড়ুন: আমার দোষ ছিল, বল কোথায় যাচ্ছে, দেখিনি- সুন্দরের রানআউট নিয়ে ভুল স্বীকার সূর্যের
সাবিত্রী যখন তাঁর ক্রিকেট-পাগল মেয়েকে কস্তুরবা গান্ধী আবাসিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন। যে স্কুলটি উত্তরপ্রদেশের উন্নাও, রাতাই পুরওয়া থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে গঞ্জ মোরাদাবাদের একটি মেয়েদের বোর্ডিং স্কুল ছিল। সেই সময়ে রটেছিল যে, অর্চনাকে কিছু সন্দেহজনক ডিলারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে সাবিত্রী দেবী।
সাবিত্রী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ফোনে বলেন, ‘আমি আমার মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছি, আমি ওকে ভুল পথে নিয়ে গিয়েছি, লোকেরা আমাকে মুখের উপর এই কথাগুলি বলত।’ আর মেয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভালো খেলার পর, পুরো পরিস্থিতি এখন বদলে গিয়েছে। এখন সাবিত্রীর বাড়ি যাঁরা কটু কথা বলতেন, সেই সব লোকেদের দ্বারাই পূর্ণ। তিনি বলেছেন, ‘এখন আমার বাড়ি অতিথিদের দ্বারা পরিপূর্ণ এবং আমার কাছে তাদের বসানোর জায়গাটুকুও নেই। প্রতিবেশীরা, যারা কখনও আমার বাড়ির এক গ্লাস জল পান করেনি, তারা এখন আমাকে সাহায্য করছে।’
আরও পড়ুন: প্রোটিয়ারা কি সরাসরি ODI WC-এ যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে? অঙ্কের হিসেব কি বলছে?
অর্চনার বাবা শিবরাম ২০০৮ সালে ক্যান্সারের কারণে মারা যান। সেই চিকিৎসা করাতে সাবিত্রীর অনেক ঋণ হয়ে যায়। এবং তিনটি ছোট বাচ্চা চিস তাঁর। ২০১৭ সালে তাঁর ছোট ছেলে বুধিমান সিং সাপের কামড়ে মারা যায়। তখন প্রতিবেশী এবং আত্মীয়স্বজনরাও তাকে রেহাই দেননি। বরং তাঁকে দোষারোপ করেছে। ডাইনি বলেছে।
অর্চনার বড় ভাই রোহিত কুমার বলেন, ‘ওরা আমার মাকে ডাকত ডাইনি বলে। ওরা বলত, প্রথমে নিজের স্বামীকে মেরেছে। তার পর ছেলেকে। যদি কেউ ওকে রাস্তায় দেখে, তবে ওরা ওদের পথ পরিবর্তন করে ফেলত। আমাদের বাড়িকে ডাইনির বাড়ি বলা হত।’ তবে মেয়ে অর্চনার সাফল্যেই বদলে গিয়েচে পুরো ছবিটাই। মায়ের মাথা থেকে ডাইনি অপবাদ ঘোচাতে পেরেছেন তাঁর ক্রিকেটার মেয়ে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।