একদিনের ক্রিকেট তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন ওয়াসিম আক্রম। পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়কের দাবি, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি খেলা হোক। টি-টোয়েন্টি খেলে প্রচুর টাকাও আসে। সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেট চালিয়ে হোক। কারণ সেখানেই খেলোয়াড় তৈরি হয়।
দ্য টেলিগ্রাফের ভনি অ্যান্ড টাফার্স ক্রিকেট ক্লাব পডকাস্টে বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার বলেন, ‘ধারাভাষ্যকার হিসেবেও মনে হয় যে একদিনের ক্রিকেট জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিশেষত টি-টোয়েন্টি (যুগ শুরুর পর সেটা মনে হয়)। খেলোয়াড় হিসেবে (কীরকম মনে হয়), সেটা আমি অনুধাবন করতে পারি। ৫০ ওভার, ৫০ ওভার, তারপর ম্যাচের আগে (এই থাকে), ম্যাচের পরে (ওই থাকে), মধ্যাহ্নভোজের খেলা থাকে।’
আক্রম নিজে ৩৫৬ টি একদিনের ম্যাচে খেলেছিলেন। মুথাইয়া মুরলীধরনের পর একদিনের ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রাহক। তবে পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকার বক্তব্য, ‘টি-টোয়েন্টি বেশ সোজা। চার ঘণ্টায় খেলা শেষ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে লিগ (হচ্ছে)। তাতে প্রচুর টাকা আছে। আমার মনে হয়, এটা আধুনিক ক্রিকেটের অংশ হয়ে গিয়েছে। টি-টোয়েন্টি বা (পড়ুন এবং) টেস্টই হল (ভবিষ্যৎ)। একদিনেরক্রিকেট ক্রমশ শেষ হয়ে যাচ্ছে।’
কেন একদিনের ক্রিকেটের প্রতি ক্রমশ আকর্ষণ কমে যাচ্ছে, সেই ব্যাখ্যাও দেন আক্রম। তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়দের পক্ষে একদিনের ক্রিকেট বেশ ক্লান্তিকর। টি-টোয়েন্টি শুরু হওযার পর একদিনের ক্রিকেট মনে হয় অনন্তকাল ধরে চলেই যাচ্ছে। তাই খেলোয়াড়রা এখন বেশি সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে মনোনিবেশ করছে। সেইসঙ্গে অবশ্যই দীর্ঘতম ফর্ম্যাট আছে (টেস্ট ক্রিকেট)।’
সেই পরিস্থিতিতে একদিনের ক্রিকেট পুরোপুরি তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে আক্রম বলেছেন, ‘ওরা শুধু খেলার জন্য খেলছে। প্রথম ১০ ওভারের পর ব্যাপারটা দাঁড়ায় যে বলপিছু একরান নাও, একটা বাউন্ডারি বের করে নাও, চারজন ফিল্ডার (৩০ গজের বৃত্তের ভিতরে) আছে এবং ৪০ ওভারে ২০০ থেকে ২২০ রানে পৌঁছে যাবে। তারপর শেষ ১০ ওভারে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে হবে। আরও ১০০ রান তোলা হবে।’
সম্প্রতি একদিনের ক্রিকেট থেকে বেন স্টোকসের অবসর ঘোষণার পরই ঠাসা সূচি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একাংশের দাবি, যাঁরা তিন ফর্ম্যাটেই খেলেন, তাঁদের দম ফেলার ফুসরতও নেই। একটার পর একটা সিরিজ বা টুর্নামেন্ট হয়ে যাচ্ছে। স্টোকসের পাশে দাঁড়িয়েছেন আক্রমও। তিনি বলেন, 'ও একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত দুঃখজনক। তবে ওর সঙ্গে একমত আমি।'
আরও পড়ুন: 'সৎ' থাকতেই অবসরে স্টোকস, অতিরিক্ত ক্রিকেট নিয়ে আইসিসিকে একহাত হুসেনের
একদিনের ক্রিকেট তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেও খেলোয়াড়দের চরিত্র গঠনের জন্য পাঁচদিনের টেস্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন আক্রম। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে একটা লড়াইয়ের মধ্যে আরও একটা লড়াই থাকে। আমি সবসময় টেস্ট ক্রিকেটে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছি। একদিনের ম্যাচ মজাদার ছিল। কিন্তু টেস্টেই খেলোয়াড় হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া যায়, যেখানে এখনও বিশ্বের সেরা একাদশ বেছে নেওয়া হয়। হ্যাঁ, টাকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, আমি জানি সেটা কোথা থেকে (কোন ফর্ম্যাট) থেকে আসছে। কিন্তু খেলার সর্বকালের অন্যতম সেরার স্বীকৃতি কোথা থেকে পাওয়া যায়, সেটাও বুঝতে হবে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।