ম্যাচের আর দুই বল বাকি। বোলার মোহিত শর্মার সঙ্গে কথা বলে বাউন্ডারিতে গিয়ে দাঁড়ালেন গুজরাট টাইটান্স অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া। মুখে তখন হাসি। ম্যাচ জেতা নিয়ে তিনি তখন কার্যত 'নিশ্চিন্ত'। শেষ ওভারে মোহিত প্রথম চারটি বল যেভাবে করেছিলেন, তাতে নিশ্চিন্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। না শিবম দুবে, না রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটে সেভাবে বল লাগছিল। তবে শেষ দুই বলে গুজরাটের কাছ তেকে খেলা ছিনিয়ে নিলেন জাদেজা। আবারও বুঝিয়ে দিলেন, কেন সিএসকে-র হয়ে ধোনির থেকেও বেশি বেতন পান তিনি।
গতকাল জয়সূচক বাউন্ডারিটি মেরেই সোজা দৌড় লাগান জাদেজা। আগত দর্শকদের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন তিনি। গুজরাট হারলেও এক গুজরাটির জয় হয়েছে। উল্লেখ্য, এবছর বারংবার সিএসকে সমর্থকদের 'বিদ্রুপের' শিকার হতে হয়েছে জাদেজাকে। তিনি মাঠে নামলেই তাঁর আউটের প্রার্থনা করতে শুরু করতেন দর্শকরা। কারণ তিনি আউট হলেই ধোনি নামবেন মাঠে। এদিকে ধোনির সঙ্গে জাদেজা ক্রিজে থাকলে তাঁকে সিঙ্গল নিতে বলে মাঠ জুড়ে উঠত রব। এই বিষয়গুলি যে জাদেজার হজম হয়নি, তা স্পষ্ট। আইপিএল মরশুম চলাকালীন তাই একাধিকবার রহস্যজনক সব পোস্ট করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। জল্পনা তৈরি হয়, ধোনির সঙ্গে কি 'আবার' ঝামেলা শুরু হল জাদেজার? গতবছরের অধিনায়কত্ব পর্বের পর অনেকেই মনে করেছিলেন, এবছর হয়ত হলুদ জার্সিতে নাও খেলতে পারেন জাদেজা। তবে তিনি থেকে গিয়েছেন চেন্নাই দলে। শুধু থেকেছেনই নয়, জিতিয়েছেন।
গতকাল ১৫তম ওভারের চতুর্থ বলের পর, অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন, আর বুঝি ধোনির পঞ্চম আইপিএল জয় হল না। তবে ওভারের পঞ্চম বলে মোহিতের বল লং অনের মাথার ওপর দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠান জাদেজা। তখন সিএসকে সমর্থকদের মনে নতুন করে আশা জেগেছে। এরপর শেষে মোহিতের পায়ে করা বলকে ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি পাঠিয়েই দৌড় শুরু করেন জাদেজা। যে সিএসকে সমর্থকদের 'বিদ্রুপ' সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে, তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়ে যেন দিলেন 'যোগ্য জবাব'। এমনকী খেলা শেষে 'ক্যাপ্টেন কুল' ধোনি কোলে তুলে নেন জাদেজাকে। কোথায় ঝামেলা, কোথায় তিক্ততা? মাত্র দু'বলে জাদেজা বুঝিয়ে দিলেন, বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম নক্ষত্র এখন তিনি।