ভারত গত কয়েক বছর ধরেই একটি অত্যন্ত সফল টেস্ট দল। বিদেশ সফরে গিয়েও তারা টেস্টে সাফল্য পেয়েছে এবং ঘরের মাঠেও আধিপত্য বিস্তার করেছে। তবে পরপর দু'টি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বিরাট কোহলিদের ফাইনালে হার এখনও হজম করতে পারছেন না ভারতীয় ক্রিকেট ভক্ত থেকে বিশেষজ্ঞ কেউই।
যদিও পরপর দু'টি ফাইনালে পৌঁছানোর জন্য ভারতের মান এবং ধারাবাহিকতা লক্ষণীয়। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় জিতলেও, সেই সাফল্য তারা ধরে রাখতে পারেনি। যা নিয়ে সবচেয়ে বড় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ভারতকে। আইসিসি নকআউটে বারবার ব্যর্থতাও বিরক্তির কারণ হয়ে উঠছে। বড় মঞ্চে আরও ভাল পারফরম্যান্স করার জন্য দলের সদস্যদের আরও বেশি দায়বদ্ধত হতে বলা হয়েছে।
ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাসকর সম্প্রতি দলের অধিনায়ক এবং কোচদের দায়বদ্ধতা নিয়ে সরব হয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়ে গাভাসকর দাবি করেছেন, আধুনিক ভারতীয় অধিনায়করা যে নিরাপত্তা উপভোগ করেন, সেই কারণে তাঁদের কোনও দায়বদ্ধতা থাকে না। কারণ তাঁদের ব্যর্থতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন করা হয় না।
গাভাসকর বলছেন, ‘আপনি জিতুন বা হারুন না কেন, অধিনায়ক জানেন যে, তিনি নিজের জায়গায় ঠিক থাকবেন। এটি সাম্প্রতিক ঘটনা নয়, মনে রাখবেন। এটি ২০১১ সাল থেকে হয়ে আসছে। এমন ফলাফলও রয়েছে, যেখানে আমরা পরপর দুই সিরিজে ০-৪, ০-৪-এ হেরেছি। কিন্তু অধিনায়ক পাল্টানো হয়নি।’
এই মন্তব্যটি সম্ভবত মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঠুকে করা হয়েছে। ২০১১-১২ মরশুমে ধোনির নেতৃত্বে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় বিপর্যয় হয়েছিল ভারতের। যদিও ধোনি সেই বছরের শুরুতেই ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। সেই সময়ে বিশ্বের এক নম্বরে থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় টেস্ট দল একেবারে ল্যাজেগোবরে হয়েছিল। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া উভয়েই ভারতকে ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল।
আরও পড়ুন: ঠিক হয়ে গিয়েছে 2023 Asia Cup-এর সূচি, ঘোষণা করা হবে এই সপ্তাহেই
২০১৪ সাল পর্যন্ত ধোনি লাল-বল দলের নেতা হিসেবে ছিলেন। তার পর বিরাট কোহলি সেই বছরই অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। কোহলির অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়ায় দু'টি সিরিজ জয় এবং ইংল্যান্ডে সাফল্যের পাশাপাশি ঘরের মাঠে প্রায় দাগহীন রেকর্ড জয় লাভ করে ভারত।২০২১-২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজের পর কোহলি টেস্ট দলের নেতৃত্ব ছাড়লে, রোহিত শর্মা তাঁর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হবেন।
রোহিত তত্ত্বাবধানে ভারত আরও একটি ডব্লিউটিসি ফাইনালে পৌঁছায়। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খারাপ পারফরম্যান্স করে হেরে যায়। তার পরে রোহিতের কৌশল এবং নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর পাশাপাশি ভারতের সব-ফর্ম্যাটের জন্য একজন অধিনায়ক থাকার নীতি নিয়েও প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। বেশির ভাগ দেশই এখন প্লেয়ারদের চাপ কমাতে এবং ফর্ম্যাটের উদ্দেশ্য অনুসারে, আলাদা আলাদা অধিনায়ক মনোনীত করে থাকে।
রোহিত আপাতত অধিনায়ক থাকছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজে নতুন চেহারার ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং ডোমিনিকাতে প্রথম টেস্টে তিনি সেঞ্চুরি করেছেন। এই বছর আবার সাদা বলের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট- এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপ রয়েছে। রোহিতের প্রথম বড় বিদেশি অ্যাসাইনমেন্ট হবে এই বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। দেখার, সেই সফরে রোহিতের দল কী করে? দক্ষিণ আফ্রিকা সফর কিন্তু রোহিতের জন্য অ্যাসিড টেস্ট হতে চলেছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।