'ভালো সময়ে সবাইকে পেয়েছি, খারাপ সময়ে একা ঝুলনদি পাশে ছিল', কেন অঝোরে কাঁদছিলেন, জানালেন হরমনপ্রীত

লর্ডসে ঝুলন গোস্বামীর বিদায়ী ম্যাচ ঘিরে আবেগের বিস্ফোরণ ঘটে ভারতীয় শিবিরে। সিনিয়র ক্রিকেটারকে জাতীয় দল থেকে বিদায় জানাতে গিয়ে কোনও ক্যাপ্টেনকে এভাবে কখনও কাঁদতে দেখা গিয়েছে কিনা, মনে করা মুশকিল।

ঝুলনের শেষ ম্য়াচে হরমনপ্রীতের চোখে জল। ছবি- বিসিসিআই।

শুক্রবার রজার ফেডেরার পেশাদার টেনিস থেকে বিদায় নেওয়ার সময় অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় রাফায়েল নাদালকে। শনিবার ঠিক তেমনই ছবি দেখা গেল লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। যদিও এবার পেশাদার জগতের প্রতিপক্ষের জন্য নয়, বরং ঝুলন গোস্বামীর শেষ ম্যাচে চোখ ভিজল দীর্ঘদিনের সতীর্থ হরমনপ্রীত কউরের।

হরমনপ্রীত যখন প্রথমবার ভারতের জার্সি গায়ে তোলেন, তখন জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন ঝুলন গোস্বামী। কাকতলীয় বিষয় হল, ঝুলন যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন, তখন ভারতের ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত।

লর্ডসে ঝুলনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে টিম হাডলে হরমনপ্রীত আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। ঝুলনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে দেখা যায় তাঁকে। ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে হরমনপ্রীতরা গোস্বামীর বিদায় বেলা স্মরণীয় করে রাখেন।

ম্যাচের শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হরমনপ্রীত জানান, ঝুলন জাতীয় দল ছেড়ে যাওয়ায় কেন তিনি এতটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। ভারতের ক্যাপ্টেন স্পষ্ট জানান যে, ঝুলনের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। কারণ, কঠিন সময়ে একমাত্র ঝুলনই তাঁর পাশে থেকেছেন বরাবর।

হরমনপ্রীত বলেন, ‘ভালো সময়ে আমি সকলকে পাশে পেয়েছি। তবে খারাপ সময়ে একমাত্র ঝুলন দি আমার পাশে ছিল। যখনই কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছি, আমাকে সাহস জুগিয়েছে এবং সঠিক পরামর্শ দিয়েছে। সেকারণেই বোধহয় আবেগটা একটু বেশি ছিল।’

হরমনপ্রীত আরও বলেন, ‘আমি ওকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি জানি যে, ও সবসময় আমাদের সঙ্গে থাকবে, একটা ফোনের দূরত্বে। কঠিন সময়ে আমি সর্বদা ওর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং পাশে পেয়েছি।’

উল্লেখ্য, লর্ডসে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ওয়ান ডে ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান ঝুলন গোস্বামী। দাঁড়ি টানেন দু'দশকের দীর্ঘ আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে। লর্ডসের শেষ ম্য়াচে ঝুলন ১০ ওভার বল করে ৩০ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট দখল করেন। কেরিয়ারের শেষ ওভারে তিনি কোনও রান খরচ না করে একটি উইকেট তুলে নেন।

ঝুলন গোস্বামী তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে ভারতের হয়ে মোট ২৮৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। সংগ্রহ করেন ৩৫৫টি উইকেট। মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঝুলনের থেকে বেশি উইকেট নেই আর কোনও বোলারের।