সরকারিভাবে কোনও কারণ না দেখিয়েই ঋদ্ধিমান সাহাকে টেস্ট দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে 'হুমকি' দেওয়ার অভিযোগ তুললেন ঋদ্ধি। সেই সাংবাদিকের নাম অবশ্য প্রকাশ করেননি ভারতীয় তারকা।
শনিবার রাতের দিকে টুইটারে একটি হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট পোস্ট করেছেন ঋদ্ধি। সঙ্গে লিখেছেন, 'ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি আমার যাবতীয় অবদানের পর তথাকথিত শ্রদ্ধেয় সাংবাদিকের থেকে এরকম বিষয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই পর্যায় নেমে গিয়েছে সাংবাদিকতা।'
কী আছে সেই স্ক্রিনশটে?
রাত ১০ টা ১৮ মিনিটে পাঠানো হোয়্যাটসঅ্যাপ মেসেজে ঋদ্ধিকে ওই ব্যক্তি বলেছেন, 'আমার সঙ্গে একটা ইন্টারভিউ কর। (তোমার জন্য) ভালো হবে।' এক মিনিট পরেই আরও একটি মেসেজ এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, 'ওরা (বোর্ড) একজন উইকেটকিপার বেছে নিয়েছে, যে সেরা উইকেটকিপার। তুমি ১১ জন সাংবাদিককে বেছে নেওয়ার চেষ্টা করছ, যাঁরা আমার কাছে সেরা নয়। এমন কাউকে বেছে নাও, যে তোমায় সবথেকে বেশি সাহায্য করতে পারবে।'
তবে সেখানেই শেষ হয়নি ‘হুমকি'। রাত ১০ টা ৪৩ মিনিটের একটি মেসেজে বলা হয়েছে, 'তুমি ফোন করলে না। আমি কখনও তোমার ইন্টারভিউ নেব না। আমি একেবারে সহজে অপমান মেনে নিই না এবং এটা আমি মনে রাখব। এটা তোমার করা উচিত হয়নি।' তারইমধ্যে ঋদ্ধির পোস্ট করা স্ক্রিনশটে সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে হোয়্যাটসঅ্যাপ কলের বিষয়টি ধরা পড়েছে। যা মিসড কল হয়ে গিয়েছিল।
সেই ‘হুমকির’ স্ক্রিনশট পোস্ট করলেও কোনও সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেননি ঋদ্ধি। যিনি বরাবর অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের বলে পরিচিত। ময়দানের পুরনো লোকজনও সহজে মনে করতে পারেন না, কবে তাঁরা ঋদ্ধিকে রাগতে দেখেছেন। সেই পরিস্থিতিতে ঋদ্ধিকে ‘হুমকি’ দেওয়ায় নেটিজেনরা ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। তাঁরা অবিলম্বে ওই সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করার আর্জি জানিয়েছেন। যদিও এখনও কারও নাম প্রকাশ করেননি ঋদ্ধি। যাঁরা ঋদ্ধিকে চেনেন, তাঁদের মতে, ঋদ্ধি সেই কাজটা করবেন না।
এমনিতে শনিবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের যে দল ঘোষণা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, তা থেকে ঋদ্ধিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে বাদ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কোনও ম্যাচে সুযোগ পাননি। তার আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে লড়াকু অর্ধশতরান করেছিলেন। যেখানে অধিকাংশ ব্যাটাররা ব্যর্থ হয়েছিলেন, সেখানে চোট নিয়েও রান করেছিলেন ঋদ্ধি। যদিও ঋদ্ধিকে বাদ দেওয়া নিয়ে একই যুক্তি খাড়া করেছেন জাতীয় নির্বাচক কমিটির প্রধান। ঋদ্ধির পরিবর্তে ভারতীয় দলে দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন কেএস ভরত।
৩৭ বছরের ঋদ্ধিকে বয়সের কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি জাতীয় নির্বাচক কমিটির প্রধান চেতন শর্মা। তিনি জানান, বয়স তো একটা বিষয়। একটা সময় পরে তরুণদের সুযোগ দিতে হয়। কিন্তু কারও জন্য ভারতীয় দলের দরজা বন্ধ করা হয়নি।
তাহলে কোন ভিত্তিতে ঋদ্ধিকে বাদ দেওয়া হয়েছে? তা নিয়ে নির্বাচক কমিটির প্রধান বলেন, 'কোনও ভিত্তিতে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটা তো আমি আপনাদের বলতে পারব না। সেটা আলোচনা করেছে নির্বাচক কমিটি। আমি শুধু এটা বলতে পারি যে ওই চারজনকে শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য বিবেচনা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচক কমিটি। আমরা তাদের অনুরোধ করেছি। আমি সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। ওদের রঞ্জি ট্রফিতে খেলার অনুরোধ জানিয়েছি। সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরাও দেখতে চাই যে এতদিন ম্যাচ না খেলার পর খেলোয়াড়রা কতটা ছন্দে আছে। রঞ্জি ট্রফি তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উঠে আসার ক্ষেত্রে একটা মই।'
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।