আপনার পেট্রোল বা CNAG গাড়ির বয়স কি ১৫ বছরেরও বেশি? সেক্ষেত্রে নয়া স্ক্র্যাপিং নীতি থেকে অব্যাহতি পাবেন। চাইলে এই গাড়ি 'স্মৃতিবিজরিত' হিসাবে রাখতে পারেন। তবে এর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। হলফনামার পাশাপাশি কিছু আইনি প্রক্রিয়াও রয়েছে। অর্থাত্, কেউ চাইলে তাঁর পুরনো ক্লাসিক গাড়ি বা মোটরসাইকেল স্ক্র্যাপ না-ও করতে পারেন।
দক্ষিণ দিল্লির সাকেতের অতিরিক্ত দায়রা জজ বৃন্দা কুমারী এক মামলার রায়ে এই আদেশ দেন। ১৫ পুরনো একটি মোটরসাইকেল নিয়ে এই মামলা করা হয়েছিল। মামলাকারীর বাড়িতে থাকা, ১৫ বছরের পুরনো মোটরসাইকেল বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। এরপরেই আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালত তার নিষ্পত্তি করে বলে, যদি কেউ তাঁর পুরনো গাড়িকে স্মৃতি বা হেরিটেজ হিসেবে রাখতে চান, তাহলে তিনি তা কিছু নির্ধারিত নিয়ম মেনে করতে পারেন। তবে তাঁকে আইনের সমস্ত শর্ত পূরণ করতে হবে। দিতে হবে হলফনামা। এর ভিত্তিতে মামলাকারীকে তাঁর মোটরসাইকেল ফেরত নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। তবে মোটরসাইকেলটি তিনি রাস্তায় চালালে বা বাইরে পার্কিং প্লেসে মিললে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ১৭৭ ধারায়(মিথ্যা হলফনামা) মামলা করতে পারবেন। তাতে ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
এর আগে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১৭ ডিসেম্বর ২০২১-এ জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (এনজিটি) নির্দেশিকা অনুসারে, মোটরসাইকেলটি স্ক্র্যাপ করে প্রাপ্ত টাকা প্রদানের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু গাড়ির মালিক তাতে রাজি হননি। তাঁর কাছে মোটরসাইকেলটির গুরুত্ব টাকার মূল্যের উর্ধ্বে। তিনি সেটি ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন।
দিল্লি পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানালেন, দিল্লিতে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার ভিনটেজ গাড়ি রয়েছে। তবে সেগুলি রাখার জন্য কোনও নিয়ম বা আইন তৈরি করা হয়নি। এমন ঐতিহ্যবাহী গাড়ি তো আর রাস্তায় ফেলে দেওয়া যায় না! তবে উত্তরাধিকার সূত্রে যাঁরা এই গাড়ির মালিক, তাঁরা বিশেষ অনুষ্ঠানে, সরকারি আধিকারিকের অনুমতি নিয়ে গাড়ি বের করেন। বিভিন্ন প্রদর্শনীতেও অংশ নেন। তবে এগুলি ছাড়া রাস্তায় সাধারণ গাড়ির মতো চালানো নিষেধ।
শুধু চার চাকাই নয়। পুরনো আমলের রয়্যাল এনফিল্ড, রাজদূত, ইয়েজদি, আর এক্স হান্ড্রেড, ভেসপার মতো টু-হুইলারের একটি আলাদা ফ্যানবেস রয়েছে। অনেকে এগুলি কিনে রিস্টোর বা কাস্টমাইজ করে অতীতকে শ্রদ্ধা জানাতে চান। তবে সেই সংক্রান্ত কোনও বিশেষ নিয়মই নেই এ দেশে। ফলে রিস্টোর করার পর রাস্তায় বের করা যাবে না, এই ভয়ে এই গাড়ি কেউ কেনেন না। এদিকে চালানো যাবে না বলে, এই মোটরসাইকেল লোহার দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেকে।
তবে ওয়াকিবহাল সূত্রে খবর, এ বিষয়ে আলোচনা করছেন সরকারি আধিকারিকরা। কেন্দ্র সরকারি স্তরেও বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।