Chinese Loan App Scam: মোবাইল অ্যাপে এক নিমেষেই পাবেন ঋণ। এমনই লোভ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকার প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল এক চক্র। অবশেষে তাদের শ্রীঘরে ঠাঁই হল। সৌজন্যে চণ্ডীগড় পুলিশের সাইবার সেল। এক চিনা নাগরিক ও তার ২০ জন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ভুয়ো অ্যাপের মাধ্যমে, অভিযুক্তরা ফোন ব্যবহারকারীর গ্যালারির অ্যাক্সেস পেয়ে যেত। এরপর ব্যবহারকারীর ছবি ফটোশপ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা চাওয়া হত। এভাবে ব্ল্যাকমেল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারকরা।
পুলিশ, জানিয়েছে, নাটের গুরু ৩৪ বছরের চিনা নাগরিক ওয়ান চেঙ্গুয়া। প্রায় ৬০ জন 'চামচা'দের নিয়ে বিশাল প্রতারণা চক্র ফেঁদেছিলেন এই ব্যক্তি। আরও পড়ুন: Google-এ ভুলেও এই ৮ জিনিস সার্চ করবেন না, হতে পারে জেলও
চেঙ্গুয়া দ্বাদশ পাশ। ২০১৯ সালে ওয়ার্ক ভিসায় ভারতে এসেছিলেন। তার মেয়াদ ২০২০ সালেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন থেকে তিনি অবৈধভাবেই ভারতে বাস করছেন। রবিবার নয়ডার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আপাতত জেরার জন্য তাঁকে ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে গত ১০ দিন ধরে দিল্লি, রাজস্থান, বিহার, ঝাড়খন্ড এবং উত্তরপ্রদেশে অভিযান চালিয়ে মোট ২০ জন গ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের কাছ থেকে ১৭.৩১ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ৯টি ল্যাপটপ, ৪১টি মোবাইল ফোন, একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং ওয়ান চেঙ্গুয়ার মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সাইবার সেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই আপাত তাত্ক্ষণিক ঋণ অ্যাপগুলি চিনে তৈরি করা হয়েছে। চিনা সার্ভারে চলে। আরও পড়ুন: অচেনা নম্বর থেকে নগ্ন মহিলার ভিডিয়ো কল এসেছে? অনলাইন প্রতারণা থেকে বাঁচবেন কীভাবে?
ফটোশপ করা নগ্ন ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেল
চন্ডীগড়ের সেক্টর ২১-এর বাসিন্দা অরবিন্দ কুমার। তিনিও এই প্রতারকদের ফাঁদে পড়েন। পুলিশি অভিযোগে তিনি জানান, একদিন তাঁর কাছে একটি এসএমএস আসে। তাতে বলা হয়, একটি অ্যাপ নামালেই সেটা দিয়ে ঋণ নেওয়া যাবে। তিনি লিঙ্কটিতে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে, Hugo Loan অ্যাপ ইনস্টল হয়ে যায়। এরপর অ্যাপে তাঁকে ৩,৫০০ টাকা ঋণ অফার করা হয়। কিন্তু তিনি সেটা অ্যাকসেপ্ট না করে অ্যাপটিই আনইনস্টল করে দেন।
এরপরেই হঠাত্ তাঁর ফটোশপ করা নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি ফোন আসতে শুরু করে। লজ্জায়, ভয়ে তিনি কিছু টাকা দিয়েও দেন। তারপরেও, কল আসা বন্ধ হয়নি। শেষ পর্যন্ত মরিয়া হয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।
একই অভিজ্ঞতা বিনীত কুমার নামে অপর এক অভিযোগকারীর। তিনি পুলিশকে বলেন, ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতেই AA নামের একটি লোন অ্যাপ ইনস্টল হয়ে যায়। সেখান থেকে ২,৭০০ টাকা ঋণ নেন। এর জন্য পরে তাঁকে UPI মারফত মোটা টাকা সুদসহ ৫,০০০ টাকা শোধ করতে হয়।
এই পর্যন্ত তা-ও ঠিক ছিল। কিন্তু এরপরেই ঋণখেলাপির অভিযোগ করে ফোন আসতে থাকে। তিনি তা অস্বীকার করতেই, অশালীন মেসেজ এবং তাঁর ফটোশপ করা নগ্ন ছবি পাঠাতে শুরু করে প্রতারকরা। সেই ছবি ও মিথ্যা রটনা তাঁর কনট্যাক্ট লিস্টে থাকা সকলের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। আরও পড়ুন: মেসেজ পেয়েই তড়িঘড়ি লিঙ্কে ক্লিক করেন? মুহূর্তের মধ্যে সব টাকা উধাও হতে পারে
তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জুলুম করে টাকা আদায়, প্রতারণা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের পৃথক মামলা নথিভুক্ত করে এই চক্রের উচ্ছেদ করতে অভিযান শুরু করে।