ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের সাফল্যের পেছনে ছিল তাঁরই হাত। তাই মহাকাশবিজ্ঞানী উদুপী রামাচন্দ্র রাও-র ৮৯তম জন্মবার্ষিকীতে, তাঁকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা Google-এর।
চার বছর আগে, ২০১৭ সালে জীবনাবসান হয় উদুপী রামাচন্দ্র রাও-র। কিন্তু তাঁর কীর্তি চিরকাল অমর হয়ে থাকবে ভারতীয় মহাকাশবিজ্ঞানের ইতিহাসে।
আজকের দিনেই ১৯৩২ সালে কর্ণাটকের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম তাঁর। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পেশাগত যাত্রা শুরু করেন কসমিক রে ফিজিসিস্ট হিসাবে। সেখানে তাঁর শিক্ষক ছিলেন ডঃ বিক্রম সারাভাই, ভারতের স্পেস প্রোগ্রামের এক অন্যতম পথিকৃত।
ডক্টরেট-এর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। সেখানে নাসার পাইয়োনিয়ার ও এক্সপ্লোরার কৃত্রিম উপগ্রহের উপর কাজ করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লোভনীয় বেতন ছেড়ে ১৯৬৬ সালে দেশে ফিরে আসেন রামাচন্দ্র। ভারতেই শুরু করেন মহাকাশ বিজ্ঞানের গবেষণা। কাজ শুরু করেন ফিজিকাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির হাই-এনার্জি অ্যাস্ট্রনমি প্রোগ্রাম-এর উপর।
দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ প্রকল্পের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালে ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ আর্যভট্ট প্রেরণে মূল কান্ডারি ছিলেন রামাচন্দ্রই। এরপর তিনি ইসরোর চেয়ারম্যান থাকাকালীন আরও প্রায় ২০টি কৃত্রিম উপগ্রহ সফলভাবে মহাকাশে প্রেরিত হয়।
রামাচন্দ্রর এই প্রচেষ্টায় বদলে যায় ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থার চিত্র। দেশজুড়ে সংযুক্ত হয় শহর ও গ্রামগুলি। উন্নত হয় টেলিভিশন। আবহাওয়ার পূর্বাভাসও সেই প্রথম মিলতে শুরু করে।
এখন যে পিএসএলভি (Polar Satellite Launch Vehicle) রকেটের কথা খুব শোনা যায়, তাঁর পেছনেও কৃতিত্ব তাঁরই। এখনও পর্যন্ত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহাকাশে ২৫০-রও বেশি কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরিত হয়েছে। এই পিএসএলভি দিয়েই ২০১৩ সালে মঙ্গলযানের উত্ক্ষেপণ করা হয়।
মহাকাশবিজ্ঞান ও কৃত্রিম উপগ্রহের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান বিশ্ব মঞ্চে প্রথম সারিতে আনার পেছনে তাঁর গুরুত্ব অসীম। তাঁর এই অবদানের কথা মনে করে তাঁকে 'স্যাটেলাইট ম্যন অফ ইন্ডিয়া' বলা হয়।