হোয়াটসঅ্যাপের মতো মেসেজিং প্ল্যাটফর্মেও বাড়ছে নানান প্রকারের স্ক্যাম। এই নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসেছে ইলেকট্রনিক্স ও আইটি মন্ত্রক (মেইটিওয়াই)। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ট্রাই)-এর অনুরোধের পরে, মন্ত্রক হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটাকে এই নিয়ে তদ্বির করেছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। সরকার যে মার্ক জুকারবার্গের সংস্থার সঙ্গে আলোচনায় রত, তা জানিয়েছে মেইটিওয়াই সেক্রেটারি এস কৃষ্ণান। সমস্যা হল স্ক্যামাররা ব্যবহারকারীদের শোষণের জন্য ক্রমাগত নতুন উপায় সন্ধান করছে ও ব্যবহার করছে। তাই চ্যালেঞ্জটা খুবই কঠিন।
ইকোনমিক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কৃষ্ণান জোর দিয়ে বলেন, সরকার হোয়াটসঅ্যাপ সহ যাবতীয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে। তিনি ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার এবং সন্দেহজনক কনটেন্ট রিপোর্ট করার আহ্বান জানান। কৃষ্ণানের মতে, ব্যবহারকারীরা সরাসরি অ্যাপের মাধ্যমে বা প্ল্যাটফর্মের বাইরে কোনও অভিযোগ আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। যদি সমাধানসূত্র না বেরোয় তবে আইটি বিধি অনুসারে সমস্যাগুলি আপিল কমিটিতে বাড়ানো যেতে পারে।
আরও কড়া পদক্ষেপের ডাক ট্রাই
ট্রাই-এর চেয়ারম্যান অনিল কুমার লাহোটি নিশ্চিত করেছেন যে এমইআইটিওয়াই ইতিমধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপ কলগুলি খতিয়ে দেখছে, ট্রাই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। টেলিকম নিয়ন্ত্রকের উদ্বেগ হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল এবং টেলিগ্রামের মতো ওভার-দ্য-টপ (ওটিটি) অ্যাপগুলির ক্রমবর্ধমান অপব্যবহার থেকে হচ্ছে, যা বর্তমানে ট্রাই এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগের (ডিওটি) সরাসরি আওতার বাইরে পড়ে।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণের সাথে চ্যালেঞ্জগুলি
হোয়াটসঅ্যাপ সরকারের অনুরোধ অনুসারে নম্বর ব্লক করা সহ কিছু সদর্থক পদক্ষেপ করেছে। সিগন্যাল এবং টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলি মূলত এখনও অনিয়ন্ত্রিত রয়েছে। এই তদারকির অভাব স্ক্যাম প্রতিরোধ করা কঠিন, বিশেষত হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপ যা কোটি কোটি মানুষ ব্যবহার করেন। টেলিকম অপারেটর এয়ারটেল, রিলায়েন্স জিও এবং ভোডাফোন-আইডিয়া ওটিটি প্ল্যাটফর্মে স্প্যাম এবং ফিশিং নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছে। সরকারের নজরদারি এড়াতে জালিয়াতির সুবিধার্থে আন্তর্জাতিক নম্বরগুলি এখন ব্যবহার করছে স্ক্যামাররা।
জানা যাচ্ছে জালিয়াতরা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রতারণা করার বিভিন্ন উপায় খুঁজে পেয়েছে, যার মধ্যে ভুক্তভোগীদের তাদের স্ক্রিন ভাগ করতে বা ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) এর মতো সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ করতে রাজি করানো ইত্যাদি রয়েছে। ডিজিটাল ভারত যাতে স্ক্যাম ভারত না হয়ে যায়, এখন সেটাই সবচেয়ে বেশি মাথা ব্যথা সরকারের।