কাশফুল ভরা মাঠের মধ্যে গিয়ে ধোঁয়া ছড়িয়ে ছুটে যাচ্ছে রেলগাড়ি। এই দৃশ্য নয়নাভিরাম হতেই পারে। কিন্তু এই ধোঁয়া যে প্রকৃতির জন্য মোটেও ভাল নয়, তা বলাই বাহুল্য। আর সেই কারণেই ক্রমেই ১০০% ট্রেনই বিদ্যুতের মাধ্যমে চালানোর দিকে এগোচ্ছে ভারতীয় রেল। ইতিমধ্যেই সেই লক্ষ্য প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে তারা। মঙ্গলবার এক টুইটে এমনটাই জানাল রেল মন্ত্রক। তাতে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৩,৩৭৫ কিলোমিটার রুটের বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। তার আগের অর্থবর্ষের তুলনায় যা প্রায় ৩৮% বেশি।
রেলের আধিকারিকরা বলছেন, একবার ১০০% বিদ্যুতায়ন করে ফেলতে পারলে, ভারতীয় রেল বিশ্বের কাছে একটি নজির স্থাপন করবে। দেশের কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের লড়াইকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। আরও পড়ুন: WhatsApp-র মাধ্যমে ট্রেনে অর্ডার করা যাবে খাবার! কীভাবে করতে হবে? জানাল রেল
২০২৩-২৪-এর বাজেটেও 'সবুজ বৃদ্ধি' বা 'গ্রিন গ্রোথ'-এর উল্লেখ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই পরিবেশবান্ধব প্রচেষ্টার একটি বড় অংশ হল রেলের বিদ্যুতায়ন। সব ক্ষেত্রেই ক্রমেই জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে ভারত। আর এই প্রচেষ্টায় রেলকে বাদ দিলে একেবারেই চলবে না। এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে, বিশ্বের বৃহত্তম 'গ্রিন রেলওয়ে'র শিরোপাও পাবে ভারতীয় রেল।
কিন্তু বিদ্যুত্ তো সেই কয়লা, ডিজেল থেকেই উত্পাদিত হচ্ছে?
এক্ষেত্রে সমালোচকদের অনেকেই বলছেন যে, বিদ্যুতে ট্রেন বা গাড়ি চালিয়ে লাভ কী। সেটি তো সেই তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রে কয়লা, ডিজেল থেকেই উত্পন্ন হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতেও কিছু পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
১. সময়ের সঙ্গে তাপবিদ্যুতের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র। বিপুল পরিমাণে সৌরবিদ্যুত, জলবিদ্যুত্, পারমাণবিক বিদ্যুত্ উত্পাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে।
২. সেই সময়ে গিয়ে নতুন করে বিদ্যুতায়ন করতে গেলে সেটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।
৩. তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রে কয়লা বা ডিজেল থেকে শক্তি উত্পাদনের প্রক্রিয়া ট্রেন ইঞ্জিনের তুলনায় অনেক বেশি 'এফিসিয়েন্ট'।
রেলের কাছে জমির অভাব নেই। সেই জমিকে যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে সেখানে প্রচুর পরিমাণে সৌর প্যানেল বসানো যেতে পারে।
ফলে ভবিষ্যতে রেল ১০০% বিদ্যুতচালিত হলে, তখন ডিজেল লোকোমোটিভ ট্রেনগুলি কাজ করা বন্ধ করে দেবে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন দূষণ কমানো যাবে, অন্যদিকে আমদানিকৃত জ্বালানির উপর ভারতের নির্ভরশীলতাও কমবে। এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে জ্বালানি-দক্ষ এবং পরিবেশ-বান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে। তাছাড়া দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতেও এটি সহায়তা করবে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup