পৃথিবীর পাশাপাশি চাঁদও প্রভাবিত হয়েছে করোনার সময়। করোনায় পৃথিবীতে লকডাউনের কারণে অস্বাভাবিকভাবে কমে গিয়েছিল চাঁদের তাপমাত্রা। বড় দাবি করে বসেছেন গবেষকরা। ভারতের গবেষকরা দেখেছেন যে করোনা মহামারী চলাকালীন, অর্থাৎ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে মে মাসে চন্দ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রায় একটি অস্বাভাবিক হ্রাস লক্ষ্য করা গিয়েছে।
করোনার বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য জারি করা লকডাউনের কারণে, পৃথিবী থেকে নির্গত বিকিরণের পরিমাণও হ্রাস পেয়েছিল। এর কারণেই চাঁদের তাপমাত্রাও হ্রাস পায়। এই সময় চাঁদে, রাতের তাপমাত্রায় প্রায় ৮-১০ কেলভিনের কমে যেতে দেখা গিয়েছে। নাসা-এর (Lunar Reconnaissance Orbiter) লুনার রিকনাইস্যান্স অরবিটার থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে এমনটাই জানতে পেরেছেন গবেষকরা।
আরও পড়ুন: (Saturn-like Earth Ring: আগে শনির মতো দেখতে ছিল পৃথিবী! বলয় নিয়ে ঘুরপাক খেয়েছে সূর্যের চারপাশে?)
রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক নোটিস: লেটার্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। আহমেদাবাদের ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষক কে. দুর্গা প্রসাদ এবং জি. এম্বিলি গবেষণায় বলেছেন, চাঁদ সম্ভাব্যভাবে পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তন অধ্যয়নের একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করতে পারে।
গ্রীন হাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা কমেছে
করোনা মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে ২০২০ সালে প্রায় বিশ্বজুড়ে লকডাউন জারি করা হয়েছিল। লকডাউনটি শিল্প দূষণ, পরিবহন এবং জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোর মতো কৃত্রিম এবং ক্ষতিকর ক্রিয়াকলাপেও বাধা দিয়েছিল। গবেষকরা বলেছেন, এই সময়ে মানুষের এই ধরনের কার্যক্রমে কমে যাওয়ায় উপকার হয়েছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা হ্রাস করেছে।
আরও পড়ুন: (Demat Account Fraud Case: জাল ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলে ২.৭৫ কোটি টাকা লুট, বিপাকে জেরোধা)
আসলে, পৃথিবীর বিকিরণের একটি অংশ রাতে চাঁদে পৌঁছে, চাঁদের পৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে বলে মনে করা হয়। লকডাউনের প্রভাব খতিয়ে দেখার জন্য, ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি (পিআরএল) থেকে কে. দুর্গা প্রসাদ এবং জি. অ্যাম্বিলি ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চাঁদের কাছাকাছি ছয়টি স্থানে রাতের তাপমাত্রা অধ্যয়ন করেছেন। ওশেনাস প্রোসেলারাম, মেরে সেরেনিটাটিস, মেরে ইমব্রিয়াম, মেরে ট্রানকুইলিটাটিস, এবং মেরে ট্রানকুইলিটাটিসে এই গবেষণা করা হয়েছে। তা দেখেই গবেষকদের দাবি, ২০২০ সালের এপ্রিল ও মে মাসের দিকে, বিশ্বব্যাপী লকডাউনের সময় সমস্ত স্থানেই সর্বাধিক তাপমাত্রার হ্রাস লক্ষ্য করা গিয়েছে।পিআরএল ডিরেক্টর অনিল ভরদ্বাজ জানিয়েছেন যে এই গবেষণাটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বেশ অনন্য।