মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নেটফ্লিক্সের ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করতেন মাইকেল লিন নামের এক ব্যক্তি। টাকার অঙ্কটা সত্যিই অভাবনী। তবে নেহাত্ই বিরক্তি ও একঘেয়েমি থেকে এমন চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন মাইকেল।
মাইকেল লিন আমাজনের চাকরি ছেড়ে ২০১৭ সালে নেটফ্লিক্সে একজন সিনিয়র সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দেন। 'সেই সময়ে, আমি ভেবেছিলাম আমি বাকি জীবনটা নেটফ্লিক্সেই কাজ করব,' লিঙ্কডইনে লিখেছেন তিনি।
'আমি বছরে সাড়ে ৪ লক্ষ ডলার (প্রায় ৩.৫ কোটি টাকা) উপার্জন করতাম। প্রতিদিন অফিসে বিনামূল্যে খাবার পেতাম। সেই সঙ্গে যখন ইচ্ছা, যত খুশি ছুটি,' বলেন তিনি।
স্বাভাবিকভাবেই, ২০২১ সালের মে মাসে লিন যখন পদত্যাগ করেন, সবাই চমকে উঠেছিলেন।
লিন বলেন, 'আমার বাবা-মাই সবার প্রথমে আপত্তি করেছিলেন। ওঁরা বলেছিল, আমি এই চাকরি ছাড়ার ফলে তাঁদের দেশ ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে আমাকে বড় করার কঠোর পরিশ্রমটাই ব্যর্থ হয়ে গিয়েছে।'
'অন্যদিকে আমার এক পরামর্শদাতাও এই নিয়ে আপত্তি করেন। তিনি বলেছিলেন যে, অন্য চাকরি জোগাড় না করেই আমার এই চাকরিটা ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। কারণ সেক্ষেত্রে পরবর্তী চাকরিতে আমি আরও বেশি বেতন পাওয়ার সুযোগ মিস করব,' লিখেছেন তিনি।
কেন ছেড়েছিলেন এমন স্বপ্নের চাকরি?
লিন বলেন, 'Netflix-এ কাজ করা হল এমবিএ প্রোগ্রামে কেস স্টাডির পড়াশোনা করার মতোই। অনেক কিছু শিখেছি।'
কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই নেটফ্লিক্সের ঝাঁ-চকচকে ভাবটা কমে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে কোভিড আসার পর, অফিস যাওয়া, সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা, সুযোগ-সুবিধা - প্রায় সবকিছুই বন্ধ হয়ে যায়। পড়ে থাকে শুধুই কাজ আর কাজ।
লিন জানান, ইঞ্জিনিয়ারের কাজ থেকে ধীরে ধীরে প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের দিকে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২ বছর ধরে চেষ্টা করেও সেটা পাননি।
ফলে এই একই পদে আটকে থাকতে আর তাঁর ভালো লাগছিল না। এর প্রভাবে তাঁর কাজও খারাপ হচ্ছিল। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে ২০২১-এর এপ্রিলে তাঁকে সংস্থার উপরওয়ালারা হুঁশিয়ারি দেন। এর ২ সপ্তাহের মধ্যেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি।
লিন জানিয়েছেন, আপাতত স্বাধীন ব্যবসা শুরু করেছেন তিনি। আর এখন তিনি অনেক খুশি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক বেশি মানুষের সঙ্গে রোজ দেখা-সাক্ষাত্ হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি মনের দিক থেকেও অনেক বেশি শান্তিতে আছেন, জানিয়েছেন লিন।