বাংলা নিউজ > টেকটক > নিজে ইন্টারনেট সিস্টেম বানিয়েছিলেন, সরকারের থেকে ২১ কোটি পেলেন ব্যক্তি!

নিজে ইন্টারনেট সিস্টেম বানিয়েছিলেন, সরকারের থেকে ২১ কোটি পেলেন ব্যক্তি!

  প্রতীকী ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস  (HT_PRINT)

নিজেরই নেটওয়ার্ক বানিলে ফেলেছিলেন জ্যারেড মাউচ। মিশিগানের একটি গ্রামীণ এলাকায় থাকতেন। আর আজ তিনিই তাঁর নিজস্ব ইন্টারনেট সংযোগ সংস্থার মালিক। ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সরকারের থেকে ২১ কোটি টাকার সহায়তা পেয়েছেন।

প্রথমে সংযোগ নিতে খরচ। তারপর মাসে মাসে ইন্টারনেটের পেছনে এক গাদা বিল। টাকা গচ্চা। এদিকে নেটের গতিও ভাল না। আর সেই কারণে, নিজেরই নেটওয়ার্ক বানিলে ফেলেছিলেন জ্যারেড মাউচ। মিশিগানের একটি গ্রামীণ এলাকায় থাকতেন। আর আজ তিনিই তাঁর নিজস্ব ইন্টারনেট সংযোগ সংস্থার মালিক। ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সরকারের থেকে ২১ কোটি টাকার সহায়তা পেয়েছেন।

২০০২ সাল। পেশায় সিনিয়র নেটওয়ার্ক আর্কিটেক্ট মিশিগানের একটি গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি কেনেন। এমনিতে সবই ভাল, কিন্তু নেটের সংযোগ নিয়ে সমস্যা। আর সেটা নিজেই সমাধান করে ফেলেন জ্যারেড। নিজস্ব ফাইবার ইন্টারনেট পরিষেবা তৈরি করে ফেলেন। তারপর সেটাই ব্যবহার করতে শুরু করে দেন।

আজ থেকে ২০ বছর আগে ১.৫ এমবিপিএস মানেই বিশাল ইন্টারনেট স্পিড। T1 এর লাইন। মাউচ ভেবেছিলেন ব্রডব্যান্ড প্রযুক্তির চাহিদা বাড়ছে। পরে নিশ্চই ভাল ফাইবারের নেট এসে যাবে তাঁর এলাকায়। কিন্তু বছরের পর বছর পার হলেও তা হয়নি।

কিন্তু জ্যারেড আরও গতি চাইছিলেন। এরপর তিনি কমকাস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। সেই সংস্থা জানিয়ে দেয়, তারের নেটওয়ার্ক সংযোগ করতে প্রায় ৫০ হাজার ডলার খরচ হবে।

জ্যারেড জানান, বছর পাঁচেক আগে AT&T র লাইন নেন। সেটার গতি মাত্র ১.৫Mbps ছিল। ২০০২ সালে তা পর্যাপ্ত ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে নয়। এদিকে AT&T সময়ের সঙ্গে বহু DSL সংযোগ বন্ধ করে দিচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় সংযোগের উন্নতিও করছে না। এমন পরিস্থিতিতে জ্যারেড জানান, তিনি প্রায় ১,৪৫,০০০ মার্কিন ডলার (১ কোটি টাকারও বেশি) খরচ করেছেন। যার মধ্যে ৯৫,০০০ ডলার (প্রায় ৭৫ লাখ টাকা) ঠিকাদারকে দেন। তারা বেশিরভাগ ফাইবার কন্ডুইট স্থাপন করে। গ্যাস, জলের পাইপ এবং অন্যান্য সমস্যা এড়াতে, ফাইবার তারগুলি সাধারণত মাটির নিচে ছয় ফুট নিচ দিয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কুড়ি ফুট পর্যন্ত নিচ দিয়ে সেগুলি নিয়ে যাওয়া হয়।

চার বছর আগে জ্যারেড নিজের ব্যবসা ফাঁদতে শুরু করেন। নিকটবর্তী কিছু এলাকাতেও সেই সময়ে পর্যাপ্ত, ভাল ইন্টারনেট পরিষেবা ছিল না। জ্যারেড সেই বাজারেই প্রবেশ করেন। বর্তমানে সেখানে তাঁর কোম্পানিরই ফাইবার টু দ্য হোম ব্রডব্যান্ড সংযোগ রয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ফাইবার স্থাপন করেছেন তিনি।

জানুয়ারির শুরুতেই তিনি মোট ৩০টি বাড়িতে তারের সংযোগ পৌঁছে দেন।

জ্যারেড জানান, এই কাজে ৬০,০০০ ডলার (প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা) খরচ হতে পারে বলে অনুমান করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ খরচ দাঁড়ায় তার দ্বিগুণেরও বেশি। তাতেই নতুন বুদ্ধি করেন তিনি। গ্রাহকদের থেকেই যদি ধার নিই? ভাবেন জ্যারেড। আর যেমন ভাবা তেমন কাজ। গ্রাহকদের কাছে গিয়েই অগ্রিম পেমেন্টের অফার দেন। একবার বড় অঙ্ক দিলেই টানা কয়েক বছর বিনামূল্যে বা সস্তায় ইন্টারনেটের অফার দেন তিনি।

কোনও কোনও গ্রাহক জ্যারেডের পাশে দাঁড়ান। তাঁরা খরচে সাহায্য করার জন্য অগ্রিম ৫,০০০ ডলার করে (প্রায় ৩.৯ লক্ষ টাক) দেন।

জ্যারেড জানিয়েছেন, আপাতত তাঁর বিনিয়োগের সমস্ত টাকা তুলতে ৪২ মাস মতো সময় লাগবে। তার পর থেকেই মুনাফা শুরু হবে।

জ্যারেডের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সরকারি তহবিল থেকে ২.৬ মিলিয়ন (প্রায় ২১ কোটি টাকা) ডলারের সহায়তা পেয়েছেন। বর্তমানে সেই টাকা খরচ করে আরও গ্রাম, প্রত্যন্ত এলাকায় ফাইবার সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন জ্যারেড।

তাঁর ইন্টারনেট প্ল্যানে প্রতি মাসে ৫৫ ডলারের(৪,৩৭২ টাকা) বিনিময়ে আনলিমিটেড ডেটা সহ ১০০Mbps গতি মেলে। ৭৯ ডলারের(৬,২৮০ টাকা) প্ল্যানে সীমাহীন ডেটা সহ ১Gbps স্পিড মিলবে। স্ট্যান্ডার্ড ইনস্টলেশন খরচ ১৯৯ ডলার।

ভাবছেন এত বেশি খরচ? আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারনেট সংযোগে এমনই খরচ। অন্যদিকে ভারত হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সস্তায় ইন্টারনেট প্রদানকারী দেশগুলির মধ্যে একটি। স্বাভাবিকভাবেই এমন দাম কল্পনাও করতে পারবেন না ভারতীয়রা।

বন্ধ করুন