বহুযুগ আগের কথা। হয় তো মঙ্গলেও একসময় নদী, হ্রদ এবং অন্যান্য বিভিন্ন জলাশয় ছিল। এমনই মত গবেষকেদের এক বড় অংশের। কিন্তু সেই জলের অস্তিত্ব প্রমাণ করার বিষয়টা বেশ কঠিন। তবে গত এক দশকে সংগৃহীত এই বিষয়ক তথ্যকে একত্রিত করেছেন গবেষকরা। আর তার মাধ্যমে প্রাচীন জলের চিহ্নগুলির একটি মানচিত্র তৈরি করেছেন। তাতে উঠে এসেছে অত্যাশ্চর্য তথ্য। দেখা যাচ্ছে, কোনও এক সময়ে মঙ্গল গ্রহ সত্যিই জলে আচ্ছাদিত ছিল।
মঙ্গল নিয়ে বরাবরই গবেষকদের আকর্ষণ। একসময়ে এখানে প্রচুর পরিমাণে জল ছিল বলে মনে করা হয়। এই গ্রহের ইতিহাসও দীর্ঘকাল ধরে বিজ্ঞানীদের আগ্রহের বিষয়। আগামিদিনে মঙ্গলে গিয়ে কলোনি গড়ার পরিকল্পনাও করছে স্পেসএক্স-এর মতো সংস্থা।
কোনও কোনও গবেষণায় এমনও দাবি করা হয়েছে যে, মঙ্গলের পৃষ্ঠের নিচে জল লুকিয়ে আছে। তবে মঙ্গলের কোনও উপাদানই সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা কঠিন। তার কারণ, মঙ্গল গ্রহ থেকে নমুনা ফিরে পাওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন।
তবে, NASA এবং ESA কিউরিওসিটি রোভার থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে পার্সিভিয়ারেন্সের মাধ্যমে চলছে গবেষণা। এর থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষকরা একটা বিষয়ে নিশ্চিত। মঙ্গলে একসময়ে যথেষ্ট পরিমাণে জল ছিল। যে যে স্থান থেকে এই ইঙ্গিত মিলছে, সেগুলি একত্রিত করে একটি মানচিত্রও বানিয়ে ফেলেছেন গবেষকরা।
চিহ্নগুলি মূলত জলীয় খনিজের অবস্থান। সেটা কী? আসলে জলের সংস্পর্শে এলে কিছু খনিজের সামান্য পরিবর্তন হয়। আর জল ছাড়া যেটা হওয়া অসম্ভব। ফলে সেই ধরণের কোনও খনিজের খোঁজ মিললেই প্রমাণ মেলে যে, সেই স্থানেও এক সময়ে জল ছিল।
মঙ্গলে জলের মানচিত্রের বিশদ বিবরণ দিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ESA।
কিছু বিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের এ বিষয়ে আরও তলিয়ে ভাবা প্রয়োজন। আসলে মঙ্গল গ্রহেও তো একসময় পৃথিবীর মতোই বায়ুমণ্ডল ছিল। আর সেখানে যদি জলও থেকে থাকে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। এক সময়ে যে এটা প্রাণের স্পন্দনের জন্য আদর্শ জায়গা ছিল, তা ভাবা যেতেই পারে।