সম্প্রতি চাঁদে গর্তের মতো বেশ কিছু বিশেষ ছায়াময় স্থান খুঁজে পেয়েছে নাসার Lunar Reconnaissance Orbiter (LRO)। আর তার ফলেই আগামিদিনে চাঁদের নিরীক্ষণে বড়সড় সুবিধা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
চাঁদের এই গহ্বরগুলির তাপমাত্রা প্রায় সারাক্ষণই ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকে। ফলে চাঁদে গবেষণার জন্য তাপমাত্রার দিক থেকে বেশ স্থিতিশীল স্থান হতে পারে এগুলি। এমনিতে দিনের বেলায় চন্দ্রপৃষ্ঠ ১২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াল পর্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে যায়। এদিকে রাতে সেটা -১৭৩ ডিগ্রি পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।
নাসা বর্তমানে এই অজানা স্থানগুলির বিষয়ে আরও জানার চেষ্টা করছে।
২০০৯ সালেই চাঁদে প্রথম এই জাতীয় গর্ত আবিষ্কৃত হয়েছিল। তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা এই স্থানগুলি কীভাবে গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যায়, তাই নিয়ে আলোচনা করছেন। চাঁদের এই গর্তগুলিতে ক্ষতিকারক সৌর বিকিরণ, মহাজাগতিক রশ্মি এবং মাইক্রোমেটিওরাইট থেকেও সুরক্ষা মিলতে পারে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহবিজ্ঞানের ডক্টরাল পড়ুয়া টাইলার হরভাথের মতে, ২০০টিরও বেশি এমন গর্তের মধ্যে প্রায় ১৬টি ধসে পড়া লাভা টিউব বলে মনে করা হচ্ছে।
মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেল্টে নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের এলআরও প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট নোয়া পেট্রো বলেন, চাঁদের গর্তগুলি চন্দ্রপৃষ্ঠের অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয়। তিনি আরও বলেন যে, এই গর্তগুলি একটি স্থিতিশীল তাপমাত্রার পরিবেশ তৈরি করে। ফলে আগামিদিনে এটি গবেষণার নতুন পথ খুলতে সাহায্য করবে।
এই ডেটা ডিভাইনার নামের বিশেষ থার্মাল ক্যামেরার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে।
গবেষকরা চাঁদের শিলার তাপীয় বৈশিষ্ট্য খুঁজে বের করার জন্য কম্পিউটার মডেলিং বিশ্লেষণ পদ্ধতির ব্যবহার করেন।
টাইলার হরভাথের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, এই গর্তের মধ্যে স্থায়ীভাবে ছায়াযুক্ত অঞ্চলে তাপমাত্রা দিনের বেলায় সামান্য ওঠানামা করে। তবে গড়ে প্রায় ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশেই থাকে।
ছায়ার কারণে এই তাপমাত্রা স্থির থাকে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অঞ্চলে দিনের বেলায় কম তাপ গৃহিত হয়। অন্যদিকে রাতে তাপের বিকিরণের পরিমাণও কম থাকে। সেই কারণে সামগ্রিকভাবে এখানে তাপমাত্রা বেশ স্থিতিশীল থাকে।