মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানিকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন জেনসেন হুয়াং, এনভিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স-এর অনুযায়ী জেনসেনের মোট সম্পদ ৭১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এইমুহূর্তে ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক তিনি। বিলিয়নেয়ার্স তালিকায় ১২ নম্বরে এসেছে জেনসেনের নাম। ১১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হাতে মুকেশ আম্বানি রয়েছেন ১৩ নম্বরে। ১০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমেত ১৪ নম্বরে রয়েছেন গৌতম আদানি। এনভিডিয়ার প্রাচুর্যকে নাকি এখন গুগল এবং মাইক্রোসফ্টের মতো কোম্পানিগুলিও ভয় পাচ্ছে। গোল্ডম্যান স্যাক্স কোম্পানিটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টকও বলেছে।
এনভিডিয়া কী করে
এনভিডিয়ার প্রধান কাজ হল উচ্চ মানের ভিডিও এডিটিং, উচ্চ রেজোলিউশন গেমিং, কম্পিউটারে আর্কিটেকচারাল ডিজাইনিং, টেসলার তৈরি অটো ড্রাইভ গাড়ি, ফিল্মে ব্যবহৃত ভিএফএক্স এবং গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ের এর জন্য চিপ তৈরি করা। এই ধরনের কাজে যেহেতু ভারী ভারী গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়, তাই কম্পিউটারে শুধুমাত্র সিপিইউ অর্থাৎ সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট- এর জন্য কাজ করতে পারে না। এর জন্য কম্পিউটারে একটি চিপ থাকা প্রয়োজন, যা গ্রাফিক্স লোড নিতে পারে। আর এনভিডিয়াই গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট তৈরির কাজ করে। ডেটা সেন্টার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সফ্টওয়্যার ইকোসিস্টেম তৈরিতেও এনভিডিয়াই সাহায্য করে। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে, কম্পিউটারে যে কোনও জটিল কাজ, এনভিডিয়ার চিপ ছাড়া আজকাল প্রায় অসম্ভব।
আরও পড়ুন: (X Ban: সমাজে 'নোংরামি' ছড়াচ্ছে মাস্কের ‘এক্স’, অভিযোগে ব্যান করতে পারে এই দেশ)
এনভিডিয়া এআই চিপ বাজারের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে
অ্যাপল থেকে মাইক্রোসফ্ট এবং গুগল থেকে মেটা, সবাই এআই নিয়ে কথা বলছে। বিশ্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গুরুত্ব বুঝতে পারছে এবং কোনও সংস্থাই এই দৌড়ে পিছিয়ে থাকতে চায় না। এআই ডেভেলপ করার জন্য প্রচুর ডেটার প্রয়োজন হয় এবং সেই ডেটা সংরক্ষণের জন্য ডেটা সেন্টারের প্রয়োজন। আর যেহেতু এনভিডিয়া এআই ডেভেলপমেন্টের জন্য ব্যবহৃত চিপস এবং ডেটা সেন্টার উভয়ই তৈরি করে, তাই সবাই আজকাল এনভিডিয়ার নামই জপছে। এই কারণেই এখন এনভিডিয়া এআই চিপ বাজারের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
এনভিডিয়ার প্রতিযোগিতা কম
বর্তমানে, সারা বিশ্বে মাত্র ৪৮টি কোম্পানি রয়েছে যার মূল্য ১ ট্রিলিয়নের বেশি। এর মধ্যে ৭টি আমেরিকার কোম্পানি এবং একটি সৌদি আরবের কোম্পানি। এই সাতটি কোম্পানির মধ্যে এনভিডিয়াও এখন একটি নাম। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও জেনসেন হুয়াং ২০০৬ সালে নিজেই এই কাজ শুরু করেছিলেন। বিশ্ব যদিও এআই এর শক্তি বুঝতে পেরেছিল ২০১৬ সালে। এখন কম্পিউটার একজন ব্যক্তি বা কোম্পানির উৎপাদনশীলতা বাড়ায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এই সক্ষমতাকে বহুগুণ বেশি উন্নত করে তুলেছে। তাই এআই এর চাহিদা যত বদ্রুত বাড়বে, এনভিডিয়া তত বেশি অর্ডার পাবে। এই সুযোগে কোম্পানিটিও দাম বাড়িয়েছে তার পণ্যের। যার দরুণ, এই সময়ে কোম্পানির লাভের পরিমাণ অনেক বেশি এবং কোনও প্রতিযোগিতাও নেই। তাই এখন সর্বজনগ্রাহ্য হয়ে উঠেছে এনভিডিয়া।
এনভিডিয়াতে জেনসেন হুয়াং এর অংশীদারিত্ব কতটা
জেনসেন হুয়াং এনভিডিয়াতে ৩ শতাংশ শেয়ারের মালিক। ২০২৪ সালের শুরুতে, ফোর্বসের অনুমান অনুসারে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু তারপর থেকে, কোম্পানির মার্কেট ক্যাপ ১৭৭ শতাংশ বেড়ে ৩.৩৩ ট্রিলিয়ন ডলার হয়েছে। কোম্পানিটি গত মাসে একটি সিকিউরিটিজ ফাইলিংয়ে বলেছিল যে টেক বস মার্চ ২০২৫ এর মধ্যে কোম্পানির ৬০০,০০০ শেয়ার বিক্রি করবে।
২০১৯ সাল থেকে জেনসেন হুয়াং-এর মোট সম্পদের পরিমাণ কত বেড়েছে
২০১৯ সালে, জেনসেন হুয়াং ফোর্বস অনুসারে বিশ্বের ৫৪৬তম ধনী ব্যক্তি ছিলেন। ৫ বছরে, তাঁর মোট সম্পদ ১১৪ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। গত বছর তিনি ২১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মালিক ছিলেন যা তাঁকে বিশ্বের ৭৬ তম ধনী ব্যক্তি হিসাবে স্থান এনে দিয়েছে। আর এখন তিনি বিশ্বের ১১ নম্বর ধনী হয়ে উঠেছেন।