বাংলা নিউজ > টেকটক > WhatsApp-এ ‘বিদ্যুতের বিলের’ মেসেজ, শিক্ষিকাকে ৯৫ হাজার টাকার প্রতারণা

WhatsApp-এ ‘বিদ্যুতের বিলের’ মেসেজ, শিক্ষিকাকে ৯৫ হাজার টাকার প্রতারণা

প্রতীকী ছবি: টুইটার (Twitter)

প্রতারক শিক্ষিকাকে মোবাইলে 'Any Desk' নামের রিমোট অ্যাকসেসের অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে। এরপর তাঁকে দশ টাকা পেমেন্ট করতে বলা হয়। সেই মতো ওই শিক্ষিকা তাঁর মোবাইল থেকে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে দশ টাকা পেমেন্ট করেন। এদিকে সেই সময়েই এনিডেস্ক-এর মাধ্যমে কার্ডের তথ্যাদি জেনে যায় প্রতারক।

বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। দ্রুত বিল না মেটালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে। এই মর্মেই মেসেজ এসেছিল। আর তার আড়ালেই লুকিয়ে ছিল প্রতারণার ফাঁদ। প্রায় ১ লক্ষ টাকা খোয়ালেন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার শিক্ষিকা।

নবনীতা সরকার নামের ওই শিক্ষিকার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে। তবে চাকরির সুবাদে তিনি মুর্শিদাবাদে থাকেন। সুতির সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। ফরাক্কা ব্যারেজের প্রজেক্ট আবাসনে থাকেন।

ফরাক্কা থানায় লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ এসেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, বিদ্যুতের বিলে সমস্যার কারণে তাঁর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মেসেজটি নাকি বিদ্যুত্ সরবরাহকারীরই পাঠানো। সেই নম্বরেই পরের দিন সকালে ফোন করেন ওই শিক্ষিকা। আরও পড়ুন:  মেসেজ পেয়েই তড়িঘড়ি লিঙ্কে ক্লিক করেন? মুহূর্তের মধ্যে সব টাকা উধাও হতে পারে

শিক্ষিকার অভিযোগ, এরপর প্রতারক তাঁকে মোবাইলে 'এনি ডেস্ক' নামের রিমোট অ্যাকসেসের অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে। সঙ্গে সঙ্গে সেই অ্যাপ ডাউনলোডও করেন তিনি। এরপর তাঁকে দশ টাকা পেমেন্ট করতে বলা হয়। সেই মতো ওই শিক্ষিকা তাঁর মোবাইল থেকে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে দশ টাকা পেমেন্ট করেন। এদিকে সেই সময়েই এনিডেস্ক-এর মাধ্যমে কার্ডের তথ্যাদি জেনে যায় প্রতারক। ওটিপি পেতেও সমস্যা হয়নি। রিমোট অ্যাকসেসের মাধ্যমে এরপর শিক্ষিকার অ্যাকাউন্ট থেকে তিন ধাপে মোট ৯৫,৫১০ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। যতক্ষণে নবনীতা বিষয়টি বুঝতে পারেন, ততক্ষণে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষাধিক টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে।

এরপরেই তিনি তাঁর ফোন অফ করে দেন। এরপর অবশ্য অ্যাকাউন্ট থেকে আর কোনওরকম ট্রানজেকশন করতে পারেনি প্রতারক।

সোমবার বিকেলে তিনি ফরাক্কা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রতারিত শিক্ষিকার আর্জি, এই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে যারা জড়িত তারা যেন ধরা পড়ে। এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে সচেতন করারও দাবি করেন তিনি।

সরকারি ব্যাঙ্ক, বিদ্যুত্ দফতর, পুলিশ, সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থায় প্রতিনিয়তই এই বিষয়ে নানা সচেতনতার প্রচার করা হয়। তা সত্ত্বেও ক্রমেই এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে। সাধারণ মানুষের প্রযুক্তির বিষয়ে অজ্ঞতার সুযোগে কোটি কোটি টাকার আর্থিক নয়ছয় করছে বেশ কিছু প্রতারণা চক্র। আরও পড়ুন: Harmful Apps: অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকলে এই ৫টি অ্যাপ থেকে সাবধান! হারাবেন সর্বস্ব

কী করবেন না

  • কোনও অচেনা, সন্দেহজনক লিঙ্কে কখনই টাচ করবেন না।
  • কোনও লিঙ্ক পাঠিয়ে সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে বললে করবেন না।
  • ব্যাঙ্ক, কোনও সংস্থা, বিদ্যুত্ সরবরাহকারী, ই-কমার্সের সাইটের মতো দেখতে মনে হলেও সেটা কোনও ভুয়ো লিঙ্ক হতে পারে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
  • ব্যাঙ্ক, কোনও সংস্থা, বিদ্যুত্ সরবরাহকারী, ই-কমার্স সংস্থা কখনই ফোনে এত কথা বলবে না। আপনাকে সরাসরি আসতে বলা হবে।

কেন্দ্রীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা CERT-In-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলাদের টার্গেট করা হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ/ টেলিগ্রাম/ ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পরিচিতদের সঙ্গে লিঙ্কগুলিও ভাগ করতে বলা হচ্ছে। আর তারপরেই বিভিন্ন উপায়ে তাঁদের প্রতারণার জালে ফেলা হচ্ছে। 

বন্ধ করুন