স্মার্টফোন পুরনো হয়েছে। সারানো বা ব্যাটারি বদলের কোনও উপায় নেই। আর তার মানেই এবার ফোন 'ফেলে' দিতে হবে। নতুন ফোন কেনার সময় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর ফলে পরিবেশের কী বিপুল পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে, তা সত্যিই অকল্পনীয়।
বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১৬ বিলিয়ন মোবাইল ফোন রয়েছে। আর তার মধ্যে ৫ বিলিয়নেরও বেশি ফোন ২০২২ সালেই স্রেফ ফেলে দেওয়া হবে, বা ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ঠিক কতগুলো ফোন ফেলে দেওয়া হচ্ছে, তা কল্পনা করতে সমস্যা হচ্ছে? ধরুন এই সমস্ত ফোন একে অপরের উপরে সমতলভাবে রাখা হল। সেক্ষেত্রে সব ফোন মিলিয়ে ৫০ হাজার কিলোমিটার লম্বা হয়ে যাবে। যা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের চেয়েও একশো গুণ বেশি। WEEE গবেষণা কনসোর্টিয়ামেই এমন ব্যাখা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফোন তৈরির ক্ষেত্রে সোনা, তামা, রূপো, প্যালাডিয়াম এবং অন্যান্য নানা পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান থাকে। তা সত্ত্বেও, সেগুলি নতুন করে কাজে লাগানোর সেরকম পরিকাঠামোই নেই বিশ্বজুড়ে। এই অবাঞ্ছিত ডিভাইসগুলির ভবিষ্যত বলতে কিছুই নেই। এগুলি স্রেফ মজুদ, ফেলে দেওয়া বা পুড়িয়ে ফেলা হবে। এর স্বাস্থ্যগত বা পরিবেশগত প্রভাব সহজেই অনুমেয়।
WEEE ফোরামের ডিরেক্টর প্যাসকেল লেরয় বলেন, 'আমরা যদি ফোনের মধ্যে থাকা বিরল এই উপাদানগুলি পুনর্ব্যবহার না করি, তাহলে আমাদের সেই চিন বা কঙ্গোর মতো দেশে খনন কাজ বাড়াতে হবে।'
২০২২ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬টি ইউরোপীয় দেশে করা সমীক্ষা অনুযায়ী এই পাঁচ বিলিয়ন ফোনের বেশিরভাগই 'হোর্ড' করা হবে। হোর্ড করা বলতে?
সহজ ভাষায়, এই ফোন লোকের বাড়িতে, ড্রয়ারে, আলমারিতেই এই পুরনো ফোনগুলি পড়ে থাকে। এই ফোনগুলি এক্সচেঞ্জ বা রিসাইকেল করা হবে, এমন কিছুই করা হয় না। ফলে সোনা, তামা, রূপো, প্যালাডিয়ামের মতো এই ধাতুগুলির রিসাইকেলিং প্রক্রিয়ার কোনও উপায় নেই।