বিশেষ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে (আইএসএস) আটমাসের জন্য আটকে থাকতে হচ্ছে নাসা-র মহাকাশ বিজ্ঞানী সুনীতা উইলিয়ামসকে। আর এই সময়টাকেই অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আএসএস-এ থাকাকালীন যুগান্তকারী বিভিন্ন গবেষণা করছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নভশ্চর।
পৃথিবী থেকে নিয়ে আসা লেটুস পাতার চাষ মহাকাশের এই মাইক্রোগ্র্যাভিটি-তে করা সম্ভব কিনা, সেটাই খতিয়ে দেখছেন সুনীতা।
তার এই গবেষণার অন্যতম লক্ষ্য হল, কীভাবে জলের পরিমাণের তারতম্য অনুসারে লেটুসের উৎপাদন ও বৃদ্ধি প্রাভাবিত হয়, তা পর্যবেক্ষণ করা এবং তা থেকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত উপনীত হওয়া।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সুনীতার এই গবেষণা সফল হলে, তা ভাবী পৃথিবীর কাছে কোনও আশীর্বাদের থেকে কম কিছু হবে না। কারণ, এই গবেষণালব্ধ জ্ঞানের সাহায্যে ভবিষ্যতে মহাকাশযান বা মহাকাশ কেন্দ্রে বসেই এই ধরনের খাবার ফলাতে পারবেন মহাকাশচারীরা।
ফলে তাঁদের আবার খাবার সরবরাহ নিয়ে পৃথিবীর উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না। একইসঙ্গে, পৃথিবীর মাটিতে যে চাষাবাদ করা হয়, তাও আরও উন্নত করা সম্ভব হবে।
নাসা-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতের জন্য 'অ্য়াডভান্সড প্ল্যান্ট হ্যাবিট্যাট অপারেশন'-এ মনোনিবেশ করেছেন সুনীতা উইলিয়ামস।
প্ল্যান্ট হ্যাবিট্যাট-০৭ -এ ওই লেটুসগুলি বসানোর আগে সুনীতা তাঁর বর্তমান পরিবেশ থেকেই জলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এবং সেই নমুনার সাহায্যেই লেটুসগুলির জলের প্রয়োজন পূরণ করা হচ্ছে।
আর্দ্রতার তারতম্যের জেরে কীভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও পুষ্টিগুণ প্রাভাবিত হয়, তা এই গবেষণার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যাতে এই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে পৃথিবীর পাশাপাশি মহাকাশেও আরও উন্নতভাবে খাদ্যপণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়।
প্রসঙ্গত, নাসা বহু আগে থেকেই মহাকাশে চাষাবাদ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে এসেছে। সুনীতার গবেষণা তাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশে লেটুস চাষ করা ছাড়াও তাঁর সহযোগী মহাকাশচারীকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে সাহায্য করছেন সুনীতা। এটা তাঁর রোজের কাজ। যার মধ্যে আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানের সাহায্যে সহকর্মী তথা সহযাত্রীর রক্তনালীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাও রয়েছে।
তাঁরা খতিয়ে দেখছেন, দীর্ঘদিন যদি কোনও নভশ্চর মহাকাশের থাকেন বা থাকতে বাধ্য হন, তাহলে সেই ঘটনা তাঁর শরীরে কী কী প্রভাব ফেলতে পারে।