বাংলা নিউজ > টেকটক > শুধু বীজ উৎপাদনের সময়েই আগাছানাশক স্প্রে করা যাবে! GM সরিষা নিয়ে জানাল কেন্দ্র

শুধু বীজ উৎপাদনের সময়েই আগাছানাশক স্প্রে করা যাবে! GM সরিষা নিয়ে জানাল কেন্দ্র

ফাইল ছবি: রয়টার্স (Reuters)

DMH-এর মূল বৈশিষ্ট্য হল, এটি হার্বিসাইড বা আগাছা প্রতিরোধক একটি জিন বহন করে। অর্থাত্ আগাছানাশক স্প্রে করলে এই বিশেষ সর্ষের বীজ নষ্ট হবে না। বাকি অন্যান্য বীজ/চারা নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে বীজ উত্পাদকদের কাজ সহজ হবে।

শুধুমাত্র বীজ উৎপাদন পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকবে হার্বিসাইড গ্লুফোসিনেট অ্যামোনিয়াম। তারপর আর তার ব্যবহার হবে না। জেনেটিক্যালি মডিফাইড সরিষা DMH 11 নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই জানাল কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক(MoEFCC)। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় পরিবেশ মন্ত্রক জানায়, বাণিজ্যিক চাষের সময়ে আগাছানাশকের ব্যবহার করা হবে না।

DMH-11 কী?

DMH-এর সম্পূর্ণ অর্থ হল, 'ধারা মাস্টার্ড হাইব্রিড'। এটি একটি জিনগতভাবে রূপান্তরিত শস্য। জিএম তুলার পর থেকেই এই নিয়ে এটিই দ্বিতীয় এমন জেনেটিকভাবে বিবর্তিত শস্য হতে চলেছে, যার বীজ উৎপাদন ও পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরের পরিবেশে যোগ করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: NTPC Nuclear Energy: কয়লা হবে অতীত, পারমাণবিক বিদ্যুতই ঘরে পৌঁছে দেবে NTPC

  • DMH-এর মূল বৈশিষ্ট্য হল, এটি হার্বিসাইড বা আগাছা প্রতিরোধক একটি জিন বহন করে। অর্থাত্ আগাছানাশক স্প্রে করলে এই বিশেষ সর্ষের বীজ নষ্ট হবে না। বাকি অন্যান্য বীজ/চারা নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে বীজ উত্পাদকদের কাজ সহজ হবে।
  • দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনেটিক ম্যানিপুলেশন অফ ক্রপ প্ল্যান্টস (CGMCP)-এর বিজ্ঞানীরা এটি তৈরি করেছেন।
  • Bacillus amyloliquefaciens নামক মাটিতে থাকা এক ব্যাকটেরিয়াম থেকে বিচ্ছিন্ন দু'টি এলিয়েন জিন রয়েছে এই হাইব্রিডে।
  • সমালোচকদের বক্তব্য, এই বিবর্তিত আগাছানাশক রোধী সর্ষের চারা ছড়িয়ে পড়লে পরিবেশের ক্ষতি হবে। এর পাশাপাশি এগুলি থেকে কৃষকরা নিজেরা নতুন চারা বানাতে পারবেন না। তাই সরকার বা কোনও সংস্থার উপর তাঁদের নির্ভরশীল হতে হবে।

বিহারের সাংসদ অনিল প্রসাদ হেগড়ে রাজ্যসভায় তিনটি প্রশ্ন করেছিলেন-

১. জিন জেনেটিকালি পরিবর্তিত সরিষা গাছের থেকে হওয়া হাইব্রিড চারাতেও কি আগাছানাশক সহনশীলতা থাকবে?

২. এই ধরনের আগাছানাশক সহনশীল জেনেটিকালি পরিবর্তিত শস্য যথেষ্ট নিরাপদ কিনা তার পরীক্ষা করতে ভারত কী করছে?

৩. যদি সেই পরীক্ষা করা না হয়ে থাকে, তার কারণ কী?

MoEFCC-র প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে তার উত্তরে জানান, বীজ উত্পাদক সংস্থাই শুধুমাত্র এর থেকে লাভবান হবে। চারা তৈরির প্রক্রিয়াতে আগাছানাশক ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু তারপর যখন কৃষক ক্ষেতে চাষ করবেন, তখন আর আগাছানাশক ব্যবহার করা হবে না।

'সরিষার হাইব্রিড DMH-11-এ থাকা বার জিনটি ফসফিনোথ্রিসিন এন-এসিটাইল ট্রান্সফারেজ এনজাইমকে এনকোড করে। এটি গ্লুফোসিনেট অ্যামোনিয়াম হার্বিসাইডকে প্রতিরোধ করে। ফলে জেনেটিকালি মডিফাইড (GM) হাইব্রিড সরিষা DMH11-কে হারবিসাইড টলারেন্ট (HT) হিসাবে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বরং হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের জন্য এই প্রযুক্তি,' জানান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।

'জিএম সরিষা হাইব্রিড বীজের এই বৈশিষ্ট্যের কারণে হাইব্রিড বীজের শুদ্ধতা বজায় রাখা সহজ হবে। হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের সময়ে অপ্রয়োজনীয়, ভিন্নজাতের বীজ নষ্ট করে ফেলা যাবে। এর ফলে বীজ উৎপাদনকারী সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের বীজ উৎপাদন সহজ হবে। তবে কৃষকরা যখন চাষ করবেন, তখন আর এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়,' জানালেন অশ্বিনী কুমার চৌবে।

সেন্ট্রাল ইনসেক্টিসাইড বোর্ড এবং রেজিস্ট্রেশন কমিটির (CIB&RC) অনুমোদন পাওয়ার পরেই হার্বিসাইড ব্যবহার করা হবে। ট্রান্সজেনিক সরিষা হাইব্রিড DMH-11-এর পরিবেশগত নিরাপত্তা সমীক্ষাও করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আরও পড়ুন: ChatGPT: অঙ্ক কষা থেকে কবিতা লেখা, সব করে দিচ্ছে AI! চাকরি গেল বলে?

DMH-11 অত্যন্ত উচ্চ ফলনশীল জাতের সর্ষে। এটি ভারতকে তেল উৎপাদনে আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। বর্তমানে, ভারত বিশ্বের অন্যতম বড় ভোজ্য তেল আমদানিকারক। দেশের ভোজ্য তেলের অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৫০%-এরও বেশি আমদানি করতে হয়।

বন্ধ করুন