রোম্যান্সের ফাঁদে পড়লেই গায়েব হয়ে যাচ্ছে টাকা। প্রতারণা করার নতুন উপায় নিয়ে হাজির প্রতারকরা। তাঁরা এখন নিরীহ মানুষকে ফাঁদে ফেলছেন। সম্প্রতি, এমনই একটি কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে এক মহিলার সঙ্গে অদ্ভুতভাবে প্রতারণা করা হয়েছে। এক মহিলা পুরুষ সেজে ভিকটিমের পকেট কেটে ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন, সবই উন্নত প্রযুক্তির এআইয়ের খেল।
কীভাবে এই কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে বসেছেন মহিলা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি পুরুষ ভয়েস ব্যবহার করে, নিজের প্রতিবেশীর থেকে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা প্রতারণা করার জন্য পুলিশ একজন ৩৭ বছর বয়সী মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম রশ্মি কর। অভিযুক্ত নভি মুম্বইয়ের একটি কল সেন্টারে কাজ করেন। ওই মহিলা একটি কল সেন্টারে কাজ করতেন। স্বামীর সঙ্গে হাত মিলিয়েই নাকি এই প্রতারণা চালিয়েছেন মহিলাটি, যিনি এখন পলাতক রয়েছেন। অভিযুক্ত মহিলা স্বীকার করে নিয়েছেন যে অ্যাপ-জেনারেটেড মেক-আপ ভয়েস ব্যবহার করে এই পুরো কেলেঙ্কারি চালানো হয়েছে। তিনি আরও প্রকাশ করেছেন যে তিনি একটি ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন।
ভুক্তভোগী পুলিশকে বলেছেন যে যখনই তিনি মেহরাকে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার জন্য রাজি করার চেষ্টা করতেন, তিনি কথা ঘোরাতেন। এরপর বিষয়টি ধীরে ধীরে সন্দেহজনক হয়ে উঠছিল তাঁর কাছে। জানা গিয়েছে, অভিমন্যু মেহরা নাম নিয়ে ওই মহিলা যোগাযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগীর সঙ্গে। একটি রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁদের মধ্যে। কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলার থেকে হাতিয়েছিলেন ৬.৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু কখনও দেখা হয়নি তাঁদের। ভুক্তভোগীর মন রাখার জন্য নাকি রশ্মি, তাঁকে একটি কম্বলও উপহার দিয়ে বলেছিলেন, কম্বলটি গায়ে দিলে, তিনি কাছের বোধ করবেন। এইভাবে দিনের পর দিন চলতে চলতে সন্দেহ বাড়ছিল ভুক্তভোগী মহিলার। তারপরেই তিনি পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
এআই ভয়েস স্ক্যাম কী
এআই ভয়েস স্ক্যামগুলি, এআই ব্যবহার করে মানুষের মতো ভয়েস নকল করার কাজ করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, স্ক্যামাররা পরিবারের সদস্য, বন্ধু বা পরিচিতের অডিয়ো ব্যবহার করেন। বাস্তবে এটি এআই দ্বারা তৈরি এমনই একটি ভয়েস পণ্য, যাতে জনসংখ্যার বড় অংশ প্রতারিতও হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: (Sunita Williams: পৃথিবীতে ফেরা হচ্ছে না সুনীতার, আটকে রয়েছেন মহাকাশেই! কী বলছে NASA)
প্রতারণার ফাঁদ এড়াতে এই টিপস অনুসরণ করুন
ইন্টারনেটে প্রতারিত হওয়ার জন্য একটি ছোট ভুলই যথেষ্ট। একটি ছোট ভুল করলেই, ব্যবহারকারীরা প্রতারিত হতে পারেন। তাই ফোন করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
- কলার যাচাইকরণ: বেশিরভাগ স্ক্যামার জাল নাম ব্যবহার করে, কিন্তু এআই স্ক্যাম কলগুলির মাধ্যমে বোকা বানানো সহজ হয়ে যায়। প্রায়ই আপনার কাছের কারও কণ্ঠে ডাক আসে ফোনের বিপরীত মানুষটির থেকে। অতএব, ফোন করা ব্যক্তিটি আসল কিনা তা চেক করে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- ব্যক্তিগত তথ্য: যদি কেউ কলে ব্যক্তিগত তথ্যের জন্য জিজ্ঞাসা করেন এবং কিছু প্রলোভন দেন, তবে এটি একটি কেলেঙ্কারীর লক্ষণ হতে পারে। অতএব, ভুল করেও আপনার ইমেল, যোগাযোগ নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ শেয়ার করবেন না।
- রিপোর্ট করুন এবং ব্লক করুন: যদি একটি সন্দেহজনক নম্বর থেকে একটি কল পেয়ে থাকেন এবং কিছু অদ্ভুত বলে মনে হয়, তবে অবিলম্বে এটি ব্লক করা উচিত।