জেলবন্দি থেকেও বিজেপিকে দুরমুশ করে জয় ছিনিয়ে নিলেন সিএএ বিরোধী আন্দোলনের নেতা অখিল গগৈ। অসমের শিবসাগর আসন থেকে জয়ী হলেন রাইজোর দলের সভাপতি অখিল। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ করায়, গ্রেফতার হন তিনি। তারপর থেকেই জেলবন্দি হয়ে রয়েছেন এই নেতা। বছর ৪৫—এর অখিল এখন ভরতি রয়েছেন গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে শিবসাগর আসনে তিনি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী সুরভী রাজকোনও্যারিকে ৯,০৬৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
গত বছরের অক্টোবরে রাইজোর দল গঠন করা হয়। দলের সভাপতি হিসাবে গগৈর নাম মনোনীত হয়। অখিল গগৈ হাসপাতাল থেকেই তাঁর প্রার্থী পদের মনোনয়ন পত্র জমা দেন। জেলবন্দি হওয়ার কারণে প্রচারও করতে পারেননি তিনি। এই নির্বাচনে, রাইজোর দল জোট বেঁধেছিল অসম জাটিয়া পরিষদ ছাড়াও নতুন একটি দলের সঙ্গে।
গগৈয়ের জয় নিয়ে ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক কৌস্তব ডেকা বলেন, ‘এটি একটি বিরল দৃষ্টান্তের মধ্যে অন্যতম। কারণ, এখানে শুধুমাত্র প্রার্থীর ব্যক্তিত্বই তাঁর জয় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে।
অসমের পাহাড়ি অঞ্চলে বিজেপির শক্তিশালী ঘাঁটি থাকা সত্ত্বেও জয় পেতে সফল হয়েছেন গগৈ। এটা খুবই আবেগ ঘন প্রচার ছিল। প্রচারের জন্য প্রচুর প্রচেষ্টা-উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
গগৈয়ের জনপ্রিয়তার জন্য কেন্দ্রের বাইরের একাধিক মানুষ শিবসাগরে এসে তাঁর জন্য প্রচার করেছেন। তাঁর এই জয় নিশ্চিত করতে রাইজোর দলের কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হয়েছে।’
সিএএ নিয়ে প্রতিবাদের জন্য প্রকাশ্যে চলে আসেন অখিল। পরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ডিব্রুগড় জেলার ছাবুয়া পুলিশের কাছে আইপিসির একাধিক ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এখনও এই মামলার শুনানি চলছে। এরপর গগৈয়ের মামলাটি এনআইএ—র হাতে চলে যায়।গতবছরের জুনে চার্জশিট তৈরি হয়। যেখানে অভিযোগ করা হয় যে, সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন গগৈ। যা পরে হিংসাত্মক ঘটনায় পরিণত হয়। এমনকী, পুলিশ কর্মীদের ওপর হামলা করা হয় বলে অভিযোগ।
চার্জশিট অনুয়ায়ী, দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে বিঘ্নিত করতে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে নিশানা করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। গতমাসে গৌহাটি হাইকোর্ট এনআইএ আদালতে গগৈয়ের জামিন মঞ্জুর করার আগে আদেশ বহাল রেখেছিল। কিন্তু এনআইএ তাঁর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করায়, তিনি এখনও পর্যন্ত জামিন পাননি। এখন তিনি এনআইএ’র হেফাজতে রয়েছেন।